ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে শতকোটি টাকার জমি উদ্ধারের পর প্রকৌশলী বদলি লক্ষ্মীপুরে বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা এক জালে মিলল ৫৫০০ পিস ইলিশ, ১৭ লাখে বিক্রি ছোট ভাইকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন মির্জা কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ফেনীতে কিশোর গ্যাং পিএনএফের প্রধানসহ গ্রেফতার ৫ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সৌদি পৌঁছেছেন ১৭ হাজার ১৪১ হজযাত্রী সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক আজ বিশ্ব মা দিবস জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল
  • সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

কালবৈশাখীর তাণ্ডবের পর ফেনীতে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৪  

সোমবার (৬ মে) দুপুর বেলায় ফেনীতে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর ঝড়ে ফসলি জমি, গাছগাছালি, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাসহ ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে, শুধু কৃষি, গাছগাছালি ও বাড়িঘরের যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আড়াই কোটির কাছাকাছি পৌঁছেছে। এর বাইরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও টাকার অঙ্কে তার পরিধি জানাতে পারেনি কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার (৮ মে) রাত পর্যন্ত জেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ লাইন এখনও সচল হয়নি। এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙে পড়া গ্রামীণ সড়ক। 

FB_IMG_1715090049564

 

জানা যায়, সোমবার দুপুরের পর কালবৈশাখীর সময় থেকে জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ না পাওয়ায় শহরের বাসাবাড়িতে গৃহস্থালীর কাজ থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই ব্যাপক বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকায় বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কের সমস্যা, মোটরে পানি তুলতে না পারায় পানি সঙ্কটে ধোয়া ও শৌচকার্যে নানা সমস্যা, মোবাইল ফোনে চার্জ করতে না পারা, বৈদ্যুতিক ফ্রিজে রাখা খাদ্য সামগ্রী নস্ট হয়ে যাওয়াসহ নানা বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।

ফেনী শহরের রামপুরের বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় পানি তুলতে না পারায় গৃহস্থালীর কাজে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, ওয়াশরুমে ব্যবহারের জন্যও পানির ব্যবস্থা ছিল না। চার্জার লাইন ফ্যানও চলছে না। মোবাইলে চার্জ নেই। জীবনটা যেন বিষিয়ে উঠেছে।

feni

জেলা প্রশাসন জানায়, সোমবার আনুমানিক ১টার দিকে ফেনী জেলার ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড়  বয়ে যায়। এরপর ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছয়টি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় তথ্য সংগ্রহে কাজ করে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, জেলায় প্রায় ১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৪ লাখ টাকা। অন্তত দেড় হাজার হেক্টর জমি এবং ২৫ কিলোমিটার রাস্তার গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এছাড়াও জেলায় ৫৫৭টি ঘরবাড়ি কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এছাড়াও সড়ক ও বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ সচেতন থাকায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

 

FB_IMG_1715090054369

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ জানায়, কালবৈশাখী ঝড়ে ফেনীতে সর্বাধিক ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়েছে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিশেষ করে গ্রামীণ রাস্তার পাশে গাছ উপড়ে বৈদ্যুতিক খাম্বার উপর পড়েছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ থেকে দেওয়া তথ্য মতে, জেলাজুড়ে পল্লী বিদ্যুতের ১১৭ খুঁটি ভেঙে পড়েছে। ৮৩৯টি স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। ৯৭৬টি স্থানে তারের উপর গাছ পড়েছে। ১৯০টি ইনসুলেটর, ৭৬টি ক্রস আর্ম,  ৩৩ টি কাট আউট ভেঙে গেছে। এছাড়াও কালবৈশাখী ঝড়ে ৫৮টি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গেছে। ৫০৯টি মিটার ভেঙে গেছে।

feni

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের পর ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৪ লাখ গ্রাহকের মাঝে অন্তত ২ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। এখনও জেলার অনেক স্থানে রাস্তার উপর গাছ পড়ে আছে। এসব গাছ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের উপর থাকায় সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না। ঠিক কখন জেলার সকল গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করা যাবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি।

Feni-2

ফেনীস্থ পিডিপির নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ। তিনি মোবাইলফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে ফেনীতে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ২৫টি খুটি ভেঙে যায়। অন্তত ৩০ কিলোমিটার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ হয় ৪টি বিতরণ ট্রান্সপরমার। এসব মেরামত করে জেলার জেলায় ৮৬ হাজার গ্রাহকের মাঝে ৮১ হাজার গ্রাহকের সংযোগ চালু করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত মহিপালের হাফেজ উকিল সড়ক, মধুপুর স্কুল সড়ক ও লালপোল কাঁচা বাজার এলাকা ছাড়া সব স্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্বাভাবিক করা গেছে। আগামীকাল (আজ বুধবার) দুপুরের মধ্যেই আশা করি শতভাগ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে। পিডিবির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্তরিকভাবেই কাজ করেছে।