ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে শতকোটি টাকার জমি উদ্ধারের পর প্রকৌশলী বদলি লক্ষ্মীপুরে বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা এক জালে মিলল ৫৫০০ পিস ইলিশ, ১৭ লাখে বিক্রি ছোট ভাইকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন মির্জা কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ফেনীতে কিশোর গ্যাং পিএনএফের প্রধানসহ গ্রেফতার ৫ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সৌদি পৌঁছেছেন ১৭ হাজার ১৪১ হজযাত্রী সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক আজ বিশ্ব মা দিবস জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল
  • সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

করোনা কবলিত মানুষকে স্বস্তি দিবে আসন্ন বাজেট

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৭ মে ২০২০  

করোনা ভাইরাসের আঘাতে কাবু জনসাধারণকে স্বস্তি দিতে আগামী অর্থবছরের জন্য কর ছাড়ের বিশাল বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। বাজেটের আকার ১০ থেকে ১২ শতাংশ বাড়বে, তবে নাগরিকদের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপিয়ে না দেয়ার কৌশল গ্রহণ করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার অনুদান ও তাদের ঋণ সহযোগিতা থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার অর্থ পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। বছর শেষে বিদেশী সহায়তা কয়েকগুণ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বাজেটে ব্যবসাবান্ধব কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে। জুন মাস পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে অপারগ হলেও কোন ব্যবসায়ীকে ঋণখেলাপী ঘোষণা করা হবে না। বরং প্রণোদনার আওতায় নতুন ঋণ দিয়ে শিল্পকারখানা সচল রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কমানো হবে কর্পোরেট কর। সব ধরনের পণ্য উৎপাদন ও আমদানিতে ভ্যাট কমানোর পদক্ষেপ থাকবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এই ছাড় দেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লক্ষ  ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪২ হাজার কোটি টাকা বেশি।

আগামী ১১ জুন বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মহান জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন। করোনার ছুটিতেও অর্থ মন্ত্রণালয় চালু রেখে বাজেট প্রণয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। এবারের বাজেটের বিশেষ দিক হচ্ছে-সকল মানুষের মতামত গ্রহণ করে একটি সময়োপযোগী অংশগ্রহণমূলক বাজেট জাতিকে উপহার দেয়া। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যেখানে আগামী বাজেট নিয়ে সর্বসাধারণ তাদের নিজস্ব মতামত তুলে ধরতে পারছেন। এছাড়া সর্বক্ষেত্রে কর ছাড় দিয়ে একটি স্বস্তিদায়ক বাজেট তৈরি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা সঙ্কট উত্তরণ ও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে খাতভিত্তিক প্রণোদনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরী করোনা থেকে মানুষের জীবন বাঁচানো। প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধপত্র সরবরাহ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং করোনা সঙ্কট উত্তরণে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সর্বোচ্চ জোর দেয়া হবে বাজেটে। খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি খাতে ভর্তুকি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ ও বাজেট বরাদ্দ দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় এরই মধ্যে সরকারী ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি ও মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবসায়-বান্ধব কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন জুন মাস পর্যন্ত কোন গ্রাহক যদি কিস্তি পরিশোধে অপারগও হন, তারপরও তাকে ঋণখেলাপী না করার ঘোষণা দিয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসের জন্য সব ধরনের ঋণের সুদ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এনজিওগুলোর গ্রাহকদের ক্ষেত্রেও জুন পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে অপারগ হলে ঋণখেলাপী করা হবে না। এছাড়া রফতানি আয় আদায়ের সময়সীমা ২ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা হয়েছে। একইভাবে আমদানি ব্যয় মেটানোর সময়সীমা ৪ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা হয়েছে। মোবাইলে ব্যাংকিংয়ে আর্থিক লেনদেনের সীমা বাড়ানো হয়েছে। রফতানিমুখী শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং কুটিরশিল্পবিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিল্পকারখানা সচল রাখতে প্রণোদনার আওতায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা পাবেন ভারি ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তারা।

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লক্ষ কোটি টাকার বরাদ্দ ॥ চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৪ হাজার কোটি টাকা। তবে করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় নতুন বাজেটে অন্তত ২৬ হাজার কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দিয়ে ১ লক্ষ  কোটি টাকা করার দেয়ার চিন্তা ভাবনা করছে সরকার। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় করা হবে ১ লক্ষ  কোটি টাকা। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ পরিমাণ অর্থ সামাজিক সুরক্ষায় খরচ করে বাংলাদেশ। তবে সামাজিক সুরক্ষার জন্য গরিব মানুষের পেছনে যতটা খরচ হয়, এর চার গুণ বেশি খরচ হয় ধনীদের পেছনে। এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৫ সালে বাংলাদেশের চেয়ে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৩৬৪ গুণ বেশি অর্থ খরচ করেছে জাপান। বাংলাদেশের মাত্র ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ সামাজিক সুরক্ষার কোন না কোন সুবিধা পান।

বাংলাদেশে গরিবদের চেয়ে ধনীরাই সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা বেশি পান। তাদের পেছনে বেশি খরচ হয়। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম বলেন, অসমতা ও দারিদ্র্য দূর করতে সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়াতেই হবে। এ খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে হবে। এখনও জিডিপির ২ শতাংশের কম বরাদ্দ দেয়া হয়। এটি অন্তত ৩-৪ শতাংশে উন্নীত করা উচিত। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অনুযায়ী দারিদ্র্য নির্মূল করতে হলে এসব গরিব মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা জোরদারে নজর দিতেই হবে।

জানা গেছে, দেশে এখন ৭৪ লক্ষ  লোক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর সুবিধা পান। এই কর্মসূচীর আওতায় সরকার বিধবা ভাতা, দরিদ্র নারীদের মাতৃত্বকালীন ভাতা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা ভাতা ইত্যাদি দিয়ে থাকে। এছাড়া টেস্ট রিলিফ, ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিডি), কাজের বিনিময়ে টাকাসহ (কাবিটা) বিভিন্ন কর্মসূচী ও আছে। তবে বাংলাদেশের সব নাগরিক পায়, এমন কোন সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচী নেই।

বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন কর্মসূচীতে প্রতিবছর খরচ বাড়ালেও তা পর্যাপ্ত নয়। গত ১০ বছরে সামাজিক সুরক্ষায় সরকার খরচ বাড়িয়েছে প্রায় তিন গুণ। প্রতিবছরই সুবিধাভোগীর সংখ্যা ও ভাতা বাড়ানো হয়েছে। গত অর্থবছরে ১৬ ধরনের কর্মসূচীতে ২৭ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া আছে। ১০ বছর আগে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা জিডিপির ২.৫৮ শতাংশ।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী জিডিপির অনুপাতে সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। যেমন সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় চলতি অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ জিডিপির ২.৩ শতাংশে উন্নীত করার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তবে এবার বরাদ্দ আরও বাড়বে। গরিব ও স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা দিতে ১ কোটি পরিবারকে ১০ টাকায় চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে খাদ্য সঙ্কট দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দাতা সংস্থার বাজেট সহায়তা ॥ গত কয়েক বছর ধরে নিজস্ব অর্থায়নে বাজেট প্রণয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হলেও এবার দাতা সংস্থার কাছে বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা চেয়েছে সরকার। রাজস্ব আদায় বাড়াতে গেলে নাগরিকদের ওপর করের বোঝা চেপে বসবে যা করোনা পরিস্থতির মধ্যে মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। এ কারণে এবার কর ছাড়ের বাজেট দেয়া হবে। তবে বাজেটের আকার বেড়ে যাওয়ায় আয় বাড়াতে হবে সরকারকে। ইতোমধ্যে উন্নয়ন সহযোগী দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী ও বিনিয়োগ ব্যাংকের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৩২০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। সরকার আশা করছে, এই পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেলে আগামী অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়ন করতে বেশ সুবিধা হবে। কারণ করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আয় কম হতে পারে। বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে চলতি ও আগামী অর্থবছরের বাজেটে বাড়তি আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে এআইআইবির (চীনভিত্তিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ব্যাংক) কাছে বাজেট সহায়তা খাতে চলতি অর্থবছরে আরও ৫০ কোটি ডলার এবং আগামী দুই অর্থবছরে ৫০ কোটি ডলার ও করোনা মোকাবেলায় ১০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির কাছে চাওয়া হয়েছে ১০০ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৭০ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংকের কাছে চলমান সহায়তার বাইরে ৫০ কোটি ডলার এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইএসডিবি) কাছে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ১৫ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ইতোমধ্যে দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহায়তা কামনা করেছে। চলতি অর্থবছরে করোনায় স্বাস্থ্যজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাংক ১০ কোটি ডলার, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বাজেট সহায়তাসহ অন্যান্য খাতে ৬০ কোটি ২৩ লক্ষ  ডলার এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ৪৫ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট ক্রেডিটের আওতায় বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রাপ্য ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ২৫ কোটি ডলার দ্রুত ছাড়ের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব ও উত্তরণের পরিকল্পনা শীর্ষক একটি ধারণাপত্র তৈরি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি হবে। সে হিসাবে অর্থবছর শেষে বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে ১ লক্ষ  ৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে ধারণাপত্রে অবশ্য ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশ রাখা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রাক-বাজেট আলোচনা না হওয়ায় আগামী বাজেটের জন্য দেশের সরকারী-বেসরকারী সব গবেষণা সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, চিন্তাবিদ, সাবেক অর্থসচিব এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা শিক্ষকদের কাছ থেকে লিখিত পরামর্শ চেয়েছে অর্থ বিভাগ। এ বিষয়ে অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার সম্প্রতি ৫০ জনের কাছে একটি অভিন্ন চিঠি পাঠান। ওই চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য পরিষেবাসহ শিল্প উৎপাদন, রফতানি বাণিজ্য, সেবা খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ, কর্মসংস্থান ইত্যাদির ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে করোনাভাইরাস। শুধু সরবরাহ নয়, ভোগ ও বিনিয়োগ চাহিদাও কমতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে যে বিশ্বমন্দা শুরু হয়েছে। করোনার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝুঁকি মোকাবেলায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশল নির্ধারণ করে আগামী ৫ মে’র মধ্যে তাদের মতামত অর্থ বিভাগে পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে। এ মতামত আগামী বাজেট প্রণয়নে ভূমিকা রাখবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এ প্রসঙ্গে বলেন, করোনাকে মাথায় রেখে আগামী বাজেটটি করা উচিত। মানুষের জীবন, জীবিকা ও পুনর্বাসনকে কেন্দ্র করেই এবারের বাজেট করা উচিত হবে। এদিকে আগমাী বাজেট প্রণয়ন করতে গিয়ে অর্থ বিভাগের বড় চিন্তা রাজস্ব সংগ্রহ নিয়ে। চলতি অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এনবিআর-বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লক্ষ  ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ অনুমান করছে, জুন শেষে সরকার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব কম পাবে। এদিকে রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় বাড়বে বাজেট ঘাটতিও। আগামী বাজেটেও এডিপির আকার ধরা হচ্ছে ২ লক্ষ  ১৩ হাজার কোটি টাকার মতো। চলতি অর্থবছরের এডিপির তুলনায় তা মাত্র ১ হাজার কোটি টাকা বেশি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়ন ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া সরকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও এসডিজি অর্জনে এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবার বাজেট প্রণয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে।