ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে শতকোটি টাকার জমি উদ্ধারের পর প্রকৌশলী বদলি লক্ষ্মীপুরে বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা এক জালে মিলল ৫৫০০ পিস ইলিশ, ১৭ লাখে বিক্রি ছোট ভাইকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন মির্জা কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ফেনীতে কিশোর গ্যাং পিএনএফের প্রধানসহ গ্রেফতার ৫ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সৌদি পৌঁছেছেন ১৭ হাজার ১৪১ হজযাত্রী সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক আজ বিশ্ব মা দিবস জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল
  • রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

খুন ছিনতাই ধর্ষণসহ সব অপরাধ কমেছে

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২০  

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে রাজধানীতে খুন, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণসহ প্রায় সব ধরনের অপরাধ কমেছে। মাদকবিরোধী অভিযান না থাকায় কমে এসেছে মাদক মামলাও। এমনকি প্রতারণা বা নারী নির্যাতনের মামলাও কমেছে। এই ক্রান্তিকালে গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল বা সাধারণ অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযানও প্রায় বন্ধ।

ডিএমপি’র সূত্র জানায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে রাজধানীর ৫০টি থানায় মাসে গড়ে মামলা হয়েছে ২ হাজার ২০০টি করে। সেখানে করোনাকালে এপ্রিল মাসে ৩৪৯টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা জানান, করোনার কারণে অপরাধ প্রবণতা কমেছে। বড় ধরনের অপরাধী ছাড়া সাধারণ অপরাধীদের ধরতে অভিযানও চালানো হচ্ছে না। মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা সবাই করোনা সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করছেন বেশি। কখনও মৃত ব্যক্তির সৎকার, জানাজা, করোনা আক্রান্ত পলাতক রোগীদের ধরে আনা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে, করোনা আক্রান্তের বাসা, ভবন ও এলাকা লকডাউন করা, ত্রাণ বিতরণসহ এই ক্রান্তিকালে হাজারো কাজে পুলিশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তাদের করোনার সঙ্গে প্রতিনিয়ত করা সম্মুখ যুদ্ধের কার্যক্রম চলার কারণে ডিএমপির দুজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ও একজন সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশের ১২৮৫ জন করোনা আক্রান্তের হয়েছেন। করোনাযুদ্ধে ছয় পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, দেশের করোনা ক্রান্তিকালে অপরাধ প্রবণতা কিছুটা কমেছে ঠিক। কিন্তু পুলিশের তো বসে থাকার সুযোগ নেই। তারা করোনায় লকডাউনসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ কার্যকর করার জন্য মাঠে রয়েছে। থানাগুলোতে আগের তুলনায় সেবাভোগীদের সংখ্যাও কমেছে। যারা আসছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়া হচ্ছে।

ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স সূত্র জানায়, গত বছর (২০১৯) রাজধানীতে ২০৮টি খুনের ঘটনা ঘটে। সেই হিসেবে মাসে গড়ে ১৭টির বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ২১টি করে খুনের ঘটনা ঘটেছে। মার্চে ১৭টি হত্যার ঘটনা ঘটে। আর করোনাকালে এপ্রিলে ৮টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। একইভাবে ২০১৯ সালে ১৭৬টি ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটেছিল। এতে মাসে গড়ে ১৪টির বেশি ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটে। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম তিন মাস জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে যথাক্রমে ২১, ১৬ ও ১৬টি করে ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে। আর করোনাকালে এপ্রিলে এই সংখ্যা কমে ৬টিতে এসেছে। নারী-শিশু নির্যতন ও ধর্ষণের ঘটনাও কমে এসেছে। ২০১৯ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৪০৮টি। সেই হিসেবে মাসে গড়ে দুই শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যথাক্রমে ১৭২, ১৯৪ ও ১৮৭টি ঘটনা ঘটেছিল। আর করোনাকালে এপ্রিল মাসে এই সংখ্যা কমে ৪৯ এ দাঁড়ায়। গতবছর অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৯৮টি। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ১২টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। আর করোনাকালে এপ্রিল মাসে অপহরণের কোন ঘটনা ঘটেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২০১৯ সালে ডিএমপির ৫০টি থানায় চুরি, দস্যুতার ২ হাজার ২১১টি মামলা রেকর্ড হয়েছিল। এতে মাসে গড়ে ১৮৪টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২০৩টি, ফেব্রুয়ারিতে ১৮৭টি, মার্চে ১৫৯টি চুরির মামলার রেকর্ড করা হয়েছে। করোনাকালে এপ্রিলে ১৯টি গৃহে চুরির ঘটনা ও ২৭টি অন্যান্য চুরির ঘটনা ঘটেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অপরাধ প্রবণতার পাশাপাশি মামলার সংখ্যাও কমেছে। একই সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের দাগী আসামি ছাড়া ছোটখাটো আসামিদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। গ্রেফতার অভিযান চালানো হলে করোনাকালে নতুন আসামি কারাগারগুলোতে রাখা সমস্যা হতে পারে। কোন ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া বড় বড় মাদকের চালান ছাড়া ছোটখাটো মাদকবিরোধী অভিযানগুলো বর্তমানে বন্ধ। ছোটখাটো ক্রিমিনালদের গ্রেফতারের জন্যও গোয়েন্দা টিমগুলোকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

ডিএমপির থানাগুলোতে সেবাগ্রহীতার ভিড় কম ॥ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, করোনাকালে রাজধানীতে অপরাধ প্রবণতা কমে গেছে। এতে সেবাগ্রহীতার সংখ্যাও কমে এসেছে। বিশেষ করে করোনাকালে পারিবারিক সমস্যার কারণে থানা আছে। এতে করে তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবা দেয়া হচ্ছে। পুলিশের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, করোনাক্রান্তিকালে থানাগুলোতে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা কমে গেছে। দিনে একটি বা দুটি ঘটনায় লোকজন হয়তো আসে। তাও পারিবারিক সমস্যা নিয়ে। এতে থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবাগ্রহীতাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতসহ কেউ যদি থানায় আসেন বা বসেন তাহলে তিনি চলে যাওয়ার পর জীবাণুনাশক দিয়ে তা পরিষ্কার করা হচ্ছে।