ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে শতকোটি টাকার জমি উদ্ধারের পর প্রকৌশলী বদলি লক্ষ্মীপুরে বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়াল ২০০ টাকা এক জালে মিলল ৫৫০০ পিস ইলিশ, ১৭ লাখে বিক্রি ছোট ভাইকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন মির্জা কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ফেনীতে কিশোর গ্যাং পিএনএফের প্রধানসহ গ্রেফতার ৫ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সৌদি পৌঁছেছেন ১৭ হাজার ১৪১ হজযাত্রী সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক আজ বিশ্ব মা দিবস জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল
  • রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বিমা খাতকে ডিজিটাল ও অটোমেশনের আওতায় আনার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১ মার্চ ২০২২  

বিমা ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজ ও অটোমেশনের আওতায় আনার এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি এ খাতে অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এর ফলে সবার সুবিধার পাশাপাশি সবাই বিমা করায় আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তো আমাদের দেশটা ডিজিটাল করে ফেলেছি। সব কিছু এখন ডিজিটালি হয়। কাজেই আমি মনে করি বিমা খাতকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটালাইজড এবং অটোমেশনে আনতে হবে।

তিনি বলেন, এটা যদি ডিজিটালাইজড হয় এবং প্রিমিয়াম প্রদান বা অন্যকোনো ব্যাপারে যদি সরাসরি বা অনলাইনে কাজ করা যায়, তাহলে এটা সবার জন্য সুবিধা হবে এবং সবাই আগ্রহী হবে।

মঙ্গলবার সকালে ‘জাতীয় বিমা দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমি মনে করি বিমা খাতকে আরো অন্তর্ভুক্ত করে এর ব্যাপক প্রচার হওয়া দরকার। প্রচার করতে হবে যেন মানুষ বিমা করে।

তার সরকার গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে ‘ইউনিফাইড মেসেজিং সিস্টেম (ইউএমপি)’ পদ্ধতি চালু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিমা নিয়ে মানুষের আস্থা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, গ্রাহকের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিমা সেবা প্রদান করতে হবে। মানুষকে বিমার বিষয়ে আগ্রহী করতে নতুন নতুন পদ্ধতি কাজে লাগাতে হবে। জনগণকে উৎসাহী করতে আরো ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই সেবা যদি মানুষ হাতের কাছে পায় তাহলে অনেকেই তার বিমা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারে। সে জন্য সরকারি বেসরকারি বিমা কোম্পানি গুলোকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, আমি এইটুকু বলতে পারি আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা বেসকারিখাতে অনেক বিমা কোম্পানি দিয়েছি। তাতে অনেকের ব্যবসা করারও সুযোগ হয়েছে। ফলে বিমা ব্যবসায় যেমন সবাই সম্পৃক্ত হয়েছে, পাশাপাশি দেশের অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তিনি যে কাজই করেন না কেন সব সময় জনগণের কর্মসংস্থানের বিষয়টি তার মাথায় থাকে। এ জন্যই তিনি প্রথমবার ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এই উন্মুক্ত করে দেওয়ার একটাই উদ্দেশ্য হলো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। বর্তমানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে এবং বেকারত্ব দূর হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেন এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বিমা খাতে অসামান্য অবদানের জন্য পাঁচ জনকে ‘বিমা পদক’ এবং দুই প্রতিবন্ধী শিশুকে ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বিমা পলিসি’ প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে বিমা খাতের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

১৯৬০ সালের ১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। তাই সরকার প্রতিবছর ১ মার্চকে জাতীয় বিমা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বিমাকে ‘জনগণের আমানত’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিমা ব্যবসায়ীদের বিমা দাবি ও অন্যান্য সুবিধা যথাসময়ে কোনো ঝামেলা বা হয়রানি ছাড়া গ্রাহকদের পরিশোধের নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো বিমা ব্যবস্থা আমাদের দেশেও চালু হোক-সেটাই আমরা চাই। একটি সিস্টেম তৈরি করতে হবে যেন ক্লায়েন্টরা তাদের বিমা দাবি সঠিক সময়ে কোনো ঝামেলা ছাড়াই পেতে পারে। এই বিষয়ে আরো সতর্ক থাকতে হবে।

অতীতে পাটের গুদামে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিমার মিথ্যা দাবির বিষয়ে বিমা কোম্পানিগুলোকে আরো সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এ ধরনের ঘটনা তৈরি পোশাক খাতেও ঘটেছে বলে তার কাছে অভিযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেল ঘন ঘন শুধু আগুন লাগছে। তখন আমার সন্দেহ হলো এবং আমি নজরদারি শুরু করলাম। বাস্তবেও দেখা গেল ঘটনা তাই।

শেখ হাসিনা গাড়ির থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্সকে প্রতারণামূলক কাজ হিসেবে উল্লেখ করে এটি বন্ধের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমি থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্সকে বন্ধ করতে বলেছি। কারণ, এটি ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি এ বিষয়ে সতর্ক এবং গাড়ির ইন্সুরেন্স সবসময় করে রাখেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সততার সঙ্গে কাজ করলে সবাই লাভবান হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যিনি এটা করছেন, তিনি মনে করেন যে টাকা বাঁচালাম। কিন্তু দুর্ঘটনার সময়ে যে মোটা অংকের টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে সেটা আর তার মাথায় থাকে না। কিন্তু বিমা করা থাকলে গাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেকোনো ক্ষেত্রেই আপনি সহযোগিতা পেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রেও ইন্সুরেন্স জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিমা শিল্পকে জাতীয়করণ করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তার উদ্যোগে লাইফ বিমা সেবা প্রদানের জন্য ‘জীবন বিমা কর্পোরেশন’ এবং নন-লাইফ বিমা সেবা প্রদানের জন্য ‘সাধারণ বিমা কর্পোরেশন’ নামে দু’টি পৃথক বিমা কর্পোরেশন গঠন, বিমা প্রতিষ্ঠানসমূহকে তত্ত্বাবধান করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিমা অধিদফতর গঠন এবং বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি প্রতিষ্ঠাসহ বিমা শিল্পের বিকাশে জাতির পিতার বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।

সরকার প্রধান বলেন, তার সরকার প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জনজীবনে আর্থিক সচ্ছলতা আনয়ন করছে। এই আধুনিক প্রযুক্তির যুগে আমাদের ইন্সুরেন্স কোম্পানি আরো বেশি সচল হবে।

বিমা কোম্পানির সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ যেন তাদের কাছে আমানতটা রেখে নিজের এবং পরিবার-পরিজনের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুরক্ষিত করতে পারে, সেটার ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে আরো কাছে এগিয়ে আনতে হবে।