ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

গৃহবধুর মনিকার আত্মহত্যা না হত্যা ?

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২০  

এক সপ্তাহ আগে রবিবার (২৬ জুলাই) দিবাগত গভীর রাতে হাতিয়ার চরকিং ইউনিয়নের দক্ষিন বোয়ালিয়া গ্রামের ভগবান বাবুর বাড়ির কৃষক শ্রীকৃষ্ণ দাসের মেয়ে ও নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রী মনিকা দাস গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরদিন সোমবার সকালে স্বজনরা তার লাশ ফাঁসমুক্ত করে। দুপুরে হাতিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মনিকার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।ময়না তদন্তের পর মঙ্গলবার রাতে স্বজনদের নিকট হস্তান্তরের পর মনিকার লাশ তার স্বামীর বাড়ির শ্মশানে দাহ করা হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে এ আত্মহত্যা(?) নিয়ে নিহতের স্বজনদের মধ্যে ও স্থানীয় জনমনে হাজরো রহস্য দানা বেঁধেছে।

মনিকার মা ইন্দু প্রভা দাস জানান,  রবিবার (২৬ জুলাই) রাতে খাওয়া দাওয়ার পর মনিকা স্বামীসহ একসাথে ঘুমাতে যায়। রাত একটা পর্যন্ত তাদের দুজনের কথাবার্তা শোনা গেলেও গভীর রাতে মনিকাকে কোথায়ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার ভোরে মনিকার স্বামী প্রথম তাদের পশ্চিমমুখী ঘরের দক্ষিন-পূর্ব কোনে একটি ছোট করই গাছের সাথে নাইলনের দড়ি দিয়ে মনিকাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পায়। ভোর ছয়টায় স্বামী গোবিন্দ দাস, তার বাবা শ্রী কৃষ্ণ দাস ও অন্যরা লাশকে ফাঁসমুক্ত করে। তবে ফাঁস দেওয়ার কোন লক্ষন (জিহবা বের হওয়া,পায়ের পাতা বাঁকা হওয়া,চোখের দৃষ্টি বিকৃত হওয়া পায়খানা-প্রস্রব-বীর্যপাত করা ইত্যাদি) ছিলো না। তিনি বলেন, পুলিশ মনিকার আত্মহত্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে।

তিনি আরো বলেন মনিকার স্বামী,শ্বাশুড়ি গৌরি দাসী,দেবর গিরিধারী দাস ও ননদ ফক্সি দাস সবাই তাকে চরমভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। গত ২৬ মার্চ মনিকা স্বামীসহ নোয়াখালীর চন্দ্রগঞ্জের ভাড়া বাসা থেকে শ্বশুর বাড়িতে আসে। এরপর থেকে তার উপর আবার শুরু হয় নির্যাতন। মেয়ের এমন অভিযোগ পেয়ে তারা কয়েকদিন পর মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তখন থেকে মনিকা বাপের বাড়িতেই থাকতো। এর মধ্যে মনিকার স্বামী কয়েকবার তাদের বাড়িতে এসে ৫/১০ দিন করে থেকে যায়। সবশেষে ঘটনার দুদিন আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় সে তাদের বাড়ি আসে। মৃত্যুর এক মাস আগেও স্বামী গোবিন্দ তাদের বাড়িতেই মনিকাকে মারধোর করে।

মনিকার মৃত্যুর পর তার ভ্যানেটি ব্যাগ থেকে তার হাতের লেখা কিছু কাগজ উদ্ধার করা হয়। ওই কাগজগুলোতে সে লিখেছে যে,তার স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে,তাদের বিরুদ্ধে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

মনিকার মা ও ভাইয়ের অভিযোগ মনিকার আত্মহত্যা বা হত্যা যাহাই হোক না কেন তার মৃত্যুর জন্য তার স্বামী এবং তার পরিবারের লোকজনই দায়ী। মনিকার মৃত্যুর ব্যাপারে নানা প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন,মনিকার মৃত্যুতে সেদিন আমরা এতই শোকাহত ছিলাম যে,তখন আমরা কি করবো তা বুঝে উঠতে পারিনি।

মনিকার আত্মহত্যা ও তার স্বামী এবং তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে মনিকার পরিবারের উপরোক্ত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিকার স্বামী গোবিন্দ দাস রবিবার (২ জুলাই) রাতে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন্

উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে একই ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামের বালাগো বাড়ির মৃত বিহারী দাসের ছেলে ও মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক গোবিন্দ দাসের সাথে মনিকার বিয়ে হয়। অন্নপূর্ণা নামে তাদের সাড়ে সাত মাসের একটি মেয়ে রয়েছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) কাঞ্চন কান্তি দাস এ প্রসঙ্গে আলাপকালে রবিবার (২ আগস্ট) সকালে জানান ,মনিকার আত্মহত্যার ব্যাপারে মনিকার ভাই গোপীনাথ দাস (ইবনে সিনা কোম্পানীর এম আর) সোমবার (২৭ জুলাই ) হাতিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। হাতিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মো. রমযান মনিকার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন এবং তার মৃত্যুর কারন নির্ণয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে । রির্পোট হাতে পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রবিবার (২ জুলাই) রাতে মনিকার ভাই গোপীনাথ দাস মনিকার আত্মহত্যার জন্য তার স্বামী গোবিন্দ দাস,তার মা গৌরী দাসী ও ভাই গিরিধারী দাসকে কে দায়ী করে হাতিয়া থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের ,রবিবার (২ আগস্ট) রাত দশটায় বলেন, মনিকার আত্মহত্যার বিষয়ে হাতিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, মামলার তদন্ত চলছে।