ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রসূতী সেবা নিশ্চিতে সাফল্য

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২১  

“মুজিবর্ষের অঙ্গীকার, পরিকল্পিত পরিবার” চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন জনগণের দোরগোড়ায় সেবা নিশ্চিত করাকে লক্ষ্য নিয়ে লক্ষ্মীপুরে কাজ করে যাচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। আর এ কাজে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করছে বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলি। সাধারণ মানুষজনও পাচ্ছে নিরাপদ স্বাস্থ্য সেবা।

বাংলাদেশের পেক্ষাপটে একসময় গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠী সঠিক স্বাস্থ্য তথ্য ও সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত ছিল। কুসংস্কার আর হাতুড়ে ডাক্তার ও অধিক খরচের ভয়ে নিশ্চিত হতোনা স্বাস্থ্য সেবা। সামর্থবানরা উন্নত হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতো। কিন্তু দরিদ্র প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষজন নিরাপদ মাতৃত্বসেবা ও শিশু সেবা থেকে বঞ্চিত হতো। ইউনিয়ন পর্যায়ে অভিজ্ঞ পরিদর্শিকা না থাকা ও সেবা না পাওয়ায় মানুষজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভীড় করতো। এতে করে জনগণের ভোগান্তিও বাড়তো। কিন্তু বর্তমানে লক্ষ্মীপুরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালের মতই রোগী সেবা নিশ্চিত করেছে পরিবার কল্যান বিভাগ।

জানা যায়, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা: আশফাকুর রহমান মামুন প্রসূতী মায়ের হাতের কাছেই ২৪ ঘন্টা মাতৃত্ব সেবা ও প্রসব পরবর্তী শিশু সেবা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। তার প্রচেষ্টা ও কর্ম পদ্ধতিতে এই কার্যক্রমের সূফলও পেতে শুরু করেছে মানুষজন।
এরই মধ্যে জেলার প্রায় সব ইউনিয়ন সেন্টারেই মানুষজন নিরাপদ মাতৃত্ব ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা গ্রহণ করছে। হাতের কাছেই সেবা পাওয়ায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একসময় এইসব সেন্টারে মাসে ৪/৫টি ডেলিভারী হলেও এখন শতাধিক ডেলিভারী করানো হয়। এতে মানুষের সময় ও টাকা অপচয় রোধ হয়।

সরেজমিনে জানা যায, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, দিঘলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, কমলনগর ইউনিয়নের হাজিরহাট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র শতভাগ নিরাপদ মাতৃত্ব সেবা ও শিশু সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এতে করে পরিবার পরিকল্পনা সেবায় অভাবনীয় সাফল্য বয়ে এনেছে। করোনা কালীন সময়েও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা করে আসছেন তারা।
২৪ ঘন্টা মাতৃত্ব সেবা ও দিনব্যাপী সাধারণ রোগীদের সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছে এসব কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকারা। এছাড়াও এসব কেন্দ্রে সেকমোগণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচেছন। এতে করে স্বাধীন বাংলাদেশের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতও হচ্ছে। করোনার ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য সেবা নিতে কম আসার পরেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মায়ের নিরাপদ ডেলিভারী নিশ্চিত হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানে।

কেরোয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা মিসেস সুফিয়া আক্তার বলেন, গত ৬ মাসে তার সেন্টারে ৬৬৬ জনের ডেলিভারী হয়েছে। এছাড়াও প্রসব পূর্ব ১০৮৩জন, প্রসব পরবর্তি ৭৪৪জন, স্থায়ী ও অস্থায়ী ধরণের জন্মবিরতিকরণ বিভিন্ন পদ্ধতি ২৫০জন, সাধারণ রোগী ১৫০০জন, শিশু ৮০০জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কিশোরী ও মায়েদের বিভিন্ন ধরণের সেবা দেওয়া হয়েছে। এই সেন্টারে সেকমো না থাকায় রোগী সেবায় কষ্ট বেশি করতে হয় বলেও জানান তিনি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশের ইউনিয়নে এই সেন্টারটি হওয়ার পরেও অনেক রোগী হয়। সঠিক ও নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার কারণেই পাশ্ববর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকার পরেও এখানে রোগী বেশি হয় বলেও জানান তিনি।

চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা মিসেস সুলতানা রাজিয়া বলেন, মহামারী করোনার মধ্যেও তার সেন্টারে ৪৭০ জনের ডেলিভারী হয়েছে। এছাড়াও  স্থায়ী ও অস্থায়ী ধরণের জন্মবিরতিকরণ বিভিন্ন পদ্ধতি ৬০জন (করোনায় ক্যাম্প বন্ধ), সাধারণ ও শিশু রোগী ৩০০০জন ও অন্যান্য ৭০জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কিশোরী ও মায়েদের বিভিন্ন ধরণের সেবা দেওয়া হয়েছে। প্রসূতীদের প্রসব পূর্ব ও পরবর্তি সেবা ছাড়াও শিশু কিশোর, সাধারণ অসংখ্য রোগীদের সেবা দেওয়া হয়।

হাজিরহাট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা মৃত্তিকা দাস সাথী বলেন, গত ৬ মাসে তার এই সেন্টারে ২৪১ জনের ডেলিভারী হয়েছে। এছাড়াও প্রসব পূর্ব ১১৩৯জন, প্রসব পরবর্তি ৫৭০জন, স্থায়ী ও অস্থায়ী ধরণের জন্মবিরতিকরণ বিভিন্ন পদ্ধতি ৩০০জন, সাধারণ রোগী ২০৬৬জন, শিশু ৩৪৮জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে। প্রসূতীদের প্রসব পূর্ব ও পরবর্তি সেবা ছাড়াও শিশু কিশোরী, সাধারণ অসংখ্য রোগীদের সেবা দেওয়া হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা: আশফাকুর রহমান মামুন বলেন, আমি চাই লক্ষ্মীপুরের প্রতিটি মা ও শিশু তার হাতের নাগালে সেবা পাক। তার নিজের ইউনিয়নেই সম্পূর্ণ মাতৃত্ব সেবা পায়। ২৪ ঘন্টাই ডেলিভারী সেবা পায়। সেই সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যেই আমি কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন এই কাজে সফল। আশা করি পুরো জেলা এই মুজিববর্ষেই নিরাপদ পরিকল্পনা সেবা ও প্রসূতী মায়ের সেবা যাতে পায় না নিশ্চিত হবে। জনবলের অভাবে আমরা দ্রুত কিছু করতে পারছিনা। তবে অচীরেই লক্ষ্মীপুরের মানুষজন হাতের কাছেই তাদের স্বাস্থ্য সেবা পাবে সে লক্ষ্যে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ কাজ করছে।