ব্রেকিং:
পূর্বাঞ্চলে রেলের ক্ষতি প্রায় ২২ কোটি টাকা ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার ভাষা নেই: প্রধানমন্ত্রী আঘাত আসবে এমন আশঙ্কা ছিল: প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে চলবে ট্রেন সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে: সেনাপ্রধান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আনুষ্ঠানিক সমর্থন কমপ্লিট শাটডাউনেও চলবে মেট্রোরেল বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের প্রতি বেআইনি শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি আজ বাংলা ব্লকেড বা শাটডাউন ফেনীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২০ ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করলেন আরেক নেতা, লিখলেন ‘আর পারলাম না নোয়াখালীতে যুবদল-ছাত্রদলের ৫ নেতা গ্রেফতার তিস্তায় ভেসে আসা সেই মরদেহ ভারতের সাবেক মন্ত্রীর সারা দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশনা বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন ফার্মগেটে মেট্রোরেল স্টেশনের ভেতরে হামলা চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব আরো জোরদারের অঙ্গিকার দেশে নেই ৪০০ কোটির পিয়ন জাহাঙ্গীর, পালিয়েছেন যে রাষ্ট্রে
  • শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

ডাক্তারের অবহেলায় পা হারালো দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফতাব

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৫ জুলাই ২০২৪  

আফতাব উদ্দিন আহমেদ, বয়স মাত্র (১৫)। এ বয়সে দশটা কিশোরের মতো পড়াশোনা করে (স্থানীয় একটি মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্র) বড় হয়ে ‘কী হতে চাই’ স্বপ্নে বিভোর হওয়ার কথা। কিন্তু, নিজের ডান পা খুইয়ে এখন সে বাড়িতে ও হাসপাতালের বিছানায় থাকতে হচ্ছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে- নিজের দোষে নয়, লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের ডাক্তারের অবহেলায় আফতাবের ডান পাটি হাটু থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। 

সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সোনাপুর গ্রামের নুরমিয়া কয়াল বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে বিচার না পাওয়ায় উচ্চ আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থী আফতাবের অভিভাবক।

রায়পুরের সোনাপুর গ্রামের অসহায় (আফতাবের মা) দিনমজুর স্বামীসহ দুই ছেলে নিয়ে অভাব-অনটনের সংসার কোনোমতে চলছিল। আফতাব বর্তমানে সোনাপুর গ্রামের পাটোয়ারী রাস্তার মাথা নামক এলাকার রেয়ার মডেল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্র।

রায়পুরে নীজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন আফতাব জানায়, গত ১৭ মার্চ দুপুরে নিজেদের ঘরের পাশের পুকুরে কলাগাছ কাটার সময় হাত ফসকে আঘাত লাগে ডান পায়ের হাটুতে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে দ্রুত রায়পুর হাসপাতাল পরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের অর্থপেডিকস ডাক্তার সাইফুল ইসলাম শরীফের কাছে চিকিৎসা যাই। তিনি এক্সরে বা কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে এবং ভর্তি না করেই আফতাবের ভেঙে যাওয়া পায়ের অংশ শক্ত করে বেঁধে প্লাস্টার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গত ১৯ মার্চ আফতাবের অবস্থা খারাপ হলে আবার হাসপাতাল নিয়ে আসলে পুঁজ হয়েছে বলে ব্যান্ডেজ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আস্তে আস্তে হাঁটতে বলেন। পায়ের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় ২১ মার্চ আবারও হাসপাতালে ডাক্তারের শরনাপন্ন হই। কিন্ত, ডাক্তার নার্স দিয়ে পা প্লাস্টার করে দেয়। অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় ২৩ মার্চ আবারও ডাক্তারের কাছে গেলে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। এরপর আফতাব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ধানমন্ডি বাংলাদেশ মেডিকেল ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে তার ডান হাটু থেকে কেটে ফেলেন।

এ বিষয়ে ঢাকার শ্যামলী সেবিকা জেনারেল হাসপাতালের অর্থপেডিকস ডাক্তার ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘যখন আফতাবকে হাসপাতালে আনা হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার পায়ের ভাঙা অংশে গ্যাংগ্রিন হয়ে যায়। ফলে পা কেটে ফেলা ছাড়া অন্য উপায় ছিল না। পা রেখে দিলে কিডনি বিকল হয়ে আফতাবের মৃত্যুও ঘটতে পারত।

আফতাবের মা হোসনেয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, ‘পা ভেঙে যাওয়া খুবই সাধারণ দুর্ঘটনা। সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে কিছুতেই আমার ছেলের পা কাটতে হতো না। সদর হাসপাতালের ডাক্তারের অবহেলার কারণে আমার ছেলেটার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেল।’

তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘ছেলের এ ঘটনায় ডাক্তার শরীফের বিচার চেয়ে লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জনসহ এসপি, ডিসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। সিভিল সার্জন সদর হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার অরুপ পাল, হাড় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহফুজ ও রায়পুর সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বাহারুল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয় এবং সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোট দিতে নির্দেশনা দেয়া হয় কমিটিকে। কিন্তু, তদন্ত কমিটি তা না করে দুই মাস পর অভিযুক্ত ডাক্তার শরীফের পক্ষেই তদন্ত রিপোর্ট দেন। আমি এ অবহেলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চাই।

অভিযোগের বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের ডাক্তার সাইফুল ইসলাম শরীফ হোসেন বলেন, ‘আমি একজন সরকারি অর্থপেডিক্স ডাক্তার। আফতাবের পা ভেঙে গেলে আমি সাধ্যমত চিকিৎসা করি। আমার কোনো অবহেলা ছিলনা।

এ বিষয়ে তদন্ত দলের প্রধান রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বাহারুল আলম বলেন, বিভিন্ন কারনে তদন্ত রিপোর্ট সঠিক সময় দেওয়া সম্ভব হয়নি। 

লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মেদ কবির বলেন, রায়পুরের দুর্ঘটনার শিকার শিক্ষার্থী আফতাবের মা হোসনেয়ারা বেগম সদর হাসপাতালের সার্জারি চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম শরীফসহ দুইজনের বিরুদ্ধে গত ৩ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ করেছেন। ডাক্তারের অবহেলা ছিলোনা বলে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিয়েছেন। আফতাবের পরিবার অসন্তোষ থাকলে অধিকতর তদন্ত করা হবে।