ব্রেকিং:
ছোট ভাইকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন মির্জা কাদের শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের পুনর্জন্ম ফেনীতে কিশোর গ্যাং পিএনএফের প্রধানসহ গ্রেফতার ৫ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সৌদি পৌঁছেছেন ১৭ হাজার ১৪১ হজযাত্রী সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক আজ বিশ্ব মা দিবস জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল ঋণ শোধের সক্ষমতা অর্জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নোয়াখালীতে হেরে গেলেন ওবায়দুল কাদের পতেঙ্গায় আগুন ধরে প্রশিক্ষণ বিমান কর্ণফুলীতে, ২ পাইলট আহত লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টিতে ভোটার শূন্য কেন্দ্র
  • শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বাবার কোলে মারা গেল পেট জোড়া লাগানো যমজ শিশু

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৪ মে ২০২৪  

দিনমজুর বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া পেট জোড়া লাগানো যমজ শিশু মায়মুনা ও মরিয়ম মারা গেছে। অর্থসংকটে দুই দিন জ্বরে আক্রান্ত এই দুই শিশুর চিকিৎসা চলছিল পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। মা সন্তানদের ওষুধ খাইয়ে বাবার কোলে রেখে যান। তারপর বাবার কোলেই তারা মারা যায়। 

শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে চাটখিল উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর বদলকোট গ্রামের দরগা বাড়িতে তাদের মৃত্যু হয়।

জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি ভোর ৪টায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে আফরোজা সুলতানা মেঘলা ও মো. শাহানুর ইসলাম দম্পতির যমজ দুই কন্যার জন্ম হয়। তবে নবজাতক দুজনের পেট জোড়া লাগা (কনজয়েন্ট টুইন) থাকায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে তাদের।

মা আফরোজা সুলতানা মেঘলা নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর বদলকোট গ্রামের দরগা বাড়ির মাহবুব আলমের মেয়ে। মো. শাহানুর ইসলামের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায়। শাহানুর মুন্সীগঞ্জের ভাটারচরে একটি কাপড়ের মিলে স্বল্প বেতনে দিনমজুরের কাজ করেন। নিরুপায় হয়ে শিশু দুটিকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন শাহানুর। 

জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ‘পেট জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিনমজুর বাবা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়াও টাকার অভাবে তাদের দিনমজুর বাবা উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না এমন প্রতিবেদনও বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশ করে। বিষয়টি নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ি) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিমের নজরে আসলে তিনি চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

পরে গত ৫ ফেব্রুয়ারি এইচ এম ইব্রাহিমের সহযোগিতায় বিকেলে শিশু দুইটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে কিছু দিন চিকিৎসা নিয়ে অর্থাভাবে বাড়িতে ফিরে আসেন তারা। গত দুই দিন জ্বরে আক্রান্ত ছিল মায়মুনা ও মরিয়ম। শুক্রবার দুপুরে মা আফরোজা ওষুধ খাইয়ে দিয়ে তাদেরকে বাবা শাহানুরের কোলে দিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই বাবার কোলে মারা যায় তারা।

নবজাতক দুটির মা আফরোজা সুলতানা মেঘলা  বলেন, আমার সন্তানদের ওষুধ খাইয়ে আমি গোসল করতে গেছি। হঠাৎ করে আমার স্বামীর চিৎকার শুনে এসে দেখি আমার সন্তানদের নড়া চড়া নেই। অর্থের অভাবে দীর্ঘদিন তাদের ভালো চিকিৎসা করাতে পারিনি। আর কিছু বলার ভাষা আমার নাই।

শিশু মায়মুনা-মরিয়মের বাবা শাহানুর ইসলাম  বলেন, আমার কোলে আমার সন্তান আজ মারা গেল। আমি তাদের নড়াচড়া না দেখে চিৎকার দেই। তারপর মানুষজন আসে। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক এসে জানায় তারা আর দুনিয়াতে নেই। অনেকে আমাকে সহযোগিতা করেছে। আমি অর্থের অভাবে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা করাতে পারিনি। 

চাটখিল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল হক  বলেন, তাদের দুই দিন ধরে জ্বর ছিল। কোনো চিকিৎসকের সহায়তা নেয়নি। আজ দুপুরে শিশু দুইটা মারা যায়। নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম ও নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান মহোদয়সহ অনেকেই তাদের অর্থ সহায়তা দিয়েছিল। তাদের ঢাকায় হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছিল। কিছু দিন চিকিৎসা শেষে চিকিৎসক তাদের বাড়িতে পাঠায়। তাদের আরেকটু বয়স হলে অপারেশন করার কথা ছিল। সব মিলিয়ে অর্থ ও সঠিক পরামর্শের অভাব ছিল।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দীন  বলেন, আমার বিষয়টি জানা ছিল না। আমি নতুন এসেছি এই উপজেলায়। মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরেছি। যদি আমি আগে খবর পেতাম তাহলে তাদের সহযোগিতা করতে পারতাম। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে তাদের বাড়িতে যেতে বলেছি। আল্লাহর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই।