ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

লক্ষ্মীপুরে ৩য় স্ত্রীকে হত্যা: স্বামীসহ ২ জনের যাবজ্জীবন

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৩  

লক্ষ্মীপুরে তৃতীয় স্ত্রী আয়শা আক্তার লিপিকে (২৬) হত্যার দায়ে তার স্বামী মো. হারুন (৩৭) ও মো. সোহেল (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

এ সময় মামলার প্রধান আসামি হারুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে অপর আসামি সোহেল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতা গ্রামের বাসিন্দা।

দণ্ডপ্রাপ্ত হারুন লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার উত্তর চর কালকিনি গ্রামের বাসিন্দা। ভিকটিম লিপি তার তৃতীয় স্ত্রী।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চর মনসা গ্রামের সুতারগোপ্তা এলাকার একটি পানির ড্রেন থেকে এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মৃতদেহটির পরিচয় শনাক্ত না হওয়ার ময়নাতদন্তের পর বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় সদর পুলিশের সেই সময়ের এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাশের ভবানীগঞ্জের চরভূতা গ্রামের মো. সোহেল ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সোহেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে চরভূতা গ্রামের সোহেল পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন।

তবে ঘটনার সাতমাস পর ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়। নিহত নারী আয়শা আক্তার লিপি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের মিয়াপুর এলাকার জগমোহনপুর গ্রামের আসলাম মিয়ার মেয়ে। তার পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর হত্যা মামলার নতুন মোড় নেয়। তার মা নিলুফা আক্তার আদালতে মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন করেন।

২০১৮ সালের ২১ আগস্ট হত্যা মামলাটির সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন সদর থানার সেই সময়ের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন। পুলিশ লিপির স্বামী হারুন ও হারুনে সহকর্মী নুর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে হারুন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

পরে হারুনকে হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত করে চারজনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেয় তদন্ত কর্মকর্তা।

তদন্তে উঠে আসে, হারুন পরপর তিনটি বিয়ে করেন। এর মধ্যে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রহিমা বেগমকে হত্যার দায়ে তিনি ২৬ মাস কুমিল্লার কারাগারে বন্দি ছিলেন। জামিনে বেরিয়ে তিনি কুমিল্লার ইপিজেডের একটি সোয়েটার কারখানায় সিকিউরিটির পদে চাকরি নিয়েছিলেন। ওই কারখানার শ্রমিক আয়শা আক্তার লিপির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে তারা ২০১৬ সালের ৯ জুলাই বিয়ে করেন৷ পরে তারা কারখানার পাশে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তবে বিয়ের সময় হারুন ও লিপি দুজনই তাদের অতিত গোপন রাখেন। বিয়ের কয়েকদিনের মধ্যেই হারুন তার স্ত্রী সম্পর্কে জানতে পারেন যে লিপির আগে দুই বিয়ে হয়েছে। তাদের বিয়ের পরেও লিপি বিভিন্ন ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতেন। এসব করতে হারুন তার স্ত্রী লিপিকে নিষেধ করলেও তিনি শোনেননি। তাই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হারুন। পরিকল্পনা অনুযায়ী লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের সুতারগোপ্তা এলাকার একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে লিপিকে হত্যা করে মৃতদেহ ড্রেনে ফেলে দেন হারুন।

এদিকে ঘটনার দ্বিতীয় আসামি সোহেল পুলিশের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে অজ্ঞাত নারীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যার পর মৃতদেহ ড্রেনে ফেলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ঘটনার বর্ণনা ভিন্ন দিলেও হারুন ও সোহেল দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।  

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চারজন আসামির মধ্যে হারুন ও সোহেল আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় পৃথক স্বীকারোক্তি দেন। আদালত তাদের দুজনের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন৷ বাকি দুজন কোনো জবানবন্দি দেননি। তারা খালাস পেয়েছেন।