ব্রেকিং:
পূর্বাঞ্চলে রেলের ক্ষতি প্রায় ২২ কোটি টাকা ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার ভাষা নেই: প্রধানমন্ত্রী আঘাত আসবে এমন আশঙ্কা ছিল: প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে চলবে ট্রেন সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছে: সেনাপ্রধান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আনুষ্ঠানিক সমর্থন কমপ্লিট শাটডাউনেও চলবে মেট্রোরেল বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের প্রতি বেআইনি শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি আজ বাংলা ব্লকেড বা শাটডাউন ফেনীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২০ ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করলেন আরেক নেতা, লিখলেন ‘আর পারলাম না নোয়াখালীতে যুবদল-ছাত্রদলের ৫ নেতা গ্রেফতার তিস্তায় ভেসে আসা সেই মরদেহ ভারতের সাবেক মন্ত্রীর সারা দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশনা বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন ফার্মগেটে মেট্রোরেল স্টেশনের ভেতরে হামলা চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব আরো জোরদারের অঙ্গিকার দেশে নেই ৪০০ কোটির পিয়ন জাহাঙ্গীর, পালিয়েছেন যে রাষ্ট্রে
  • শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

শখের খামারে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন বুনছেন নিঝুমদ্বীপের মামুন

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৪  

ছোটবেলা থেকেই পশুপালনের প্রতি শখ। বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড হওয়ায় সেভাবে সুযোগ হয়ে উঠেনি। বিদেশি গরু পাওয়া যেন ভাগ্যের ব্যাপার। একজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে অসুস্থ একটি অস্ট্রেলিয়ান বাছুর কেনার পর শুরু হয় ভিন্ন পথচলা। এরপর চার বছরে পেয়েছেন সফলতা। এখন গরুদের নিজের সন্তানের মতো করে ভালোবাসেন। তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হলে ছটফট করতে থাকেন। শখের বশে বাছুর থেকে কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন বুনছেন নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার তরুণ উদ্যোক্তা আবদুল্লাহ আল মামুন।

জানা যায়, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন নিজ বাড়িতে ২০২০ সালে স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী আরিফ গোয়ালের কাছ থেকে প্রথম একটি অস্ট্রেলিয়ান জাতের বাছুর কিনেন। এরপর সেই বাছুর দিয়েই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তার খামারে গরুর সংখ্যা, সেই সঙ্গে মুনাফাও। চারপাশের মেঘনা নদী বেষ্টিত বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডে আবদুল্লাহ আল মামুনই প্রথম বাণিজ্যিক খামারি। যাকে দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।

আবদুল্লাহ আল মামুন  বলেন, আমাদের এলাকার ৯৫ শতাংশ মানুষ নদীর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কখনো কেউ অস্ট্রেলিয়ান গরু দেখেনি। আরিফ গোয়াল নামের এক গরু ব্যবসায়ী অস্ট্রেলিয়ান গরু এনে লালন পালন করতে পারছিলেন না। আমি দেখে একটা গরু নিলাম। শুরুতে অনেক কষ্ট হয়েছে। আমাদের গরুগুলো দেশীয় খাবারে বড় হচ্ছে। বর্তমানে ৬-৭ ঘণ্টা এসব গরুর পেছনে সময় না দিলে আমার ভালো লাগে না। আমার সন্তানের মতোই তাদের আমি ভালোবাসি। নিজেকে খামারি হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি ভালো লাগে। 

আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, আমার দুইটা গরু নিয়মিত দুধ দেয়। নিজে খাওয়ার পর বাজারে বিক্রি করি। বর্তমানে খামারে ৫টি গরু আছে। যার মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। আমার খামার দেখে মানুষ খামারে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। আমার আগে বাণিজ্যিকভাবে নিঝুমদ্বীপে কেউ গরু লালন পালন করেনি। আমরা অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে সময় পার করি। গরুর ভ্যাক্সিনেশন ও চিকিৎসা এখানে ব্যয়বহুল। একজন ডাক্তার আনতে আমাদের অনেক টাকা গুনতে হয়। যদি সরকার এদিকে নজর দেয় তাহলে মানুষ বাণিজ্যিক খামারে আগ্রহী হবে। আমার স্বপ্ন আছে একদিন শত শত গরুর খামার হবে। আমার ভাগ্যের চাকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দেশ ও মানুষের ভাগ্যের চাকার পরিবর্তন হবে।

আবদুল্লাহ আল মামুনের বাবা আব্দুল মান্নান  বলেন, বিভিন্ন সময় গরু অসুস্থ হলে আমাদের অনেক টাকা গুনতে হয়। অবহেলিত জনপদে আমরা চিকিৎসা পাই না। গরু নিয়ে যেতে হয় হাতিয়ায় যা আমাদের সবার ভাগ্যে জোটে না। তবে আমার ছেলে মামুন ভালো করছে। বর্তমানে অনেকেই তার কাছে পরামর্শ নেয়। যদি সরকারি সুবিধা পেত তাহলে আরও অনেকেই আগ্রহী হতো।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিনবলেন, বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে আমাদের এই নিঝুমদ্বীপ। এখানে জীবনযাত্রা অন্য রকম সংগ্রামের। কেউ কোনো ব্যবসা করলে সেটা টিকিয়ে রাখা কঠিন। সরকারি সুযোগ সুবিধা অপ্রতুল হওয়ায় নানান প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয় এই দ্বীপের বাসিন্দাদের। আরিফ গোয়াল আবদুল্লাহ আল মামুনসহ বেশ কয়েকজন গরুর খামারি আছেন। যারা পশু চিকিৎসকের অভাবে অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। আমাদের এখানে প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সেবা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। তাহলে প্রাণিসম্পদে ভরে উঠবে এই নিঝুমদ্বীপ। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড নিঝুমদ্বীপ। সেখানে আমাদের প্রাণিসম্পদের সেবা পৌঁছে দেওয়া কঠিন। তবে আবদুল্লাহ আল মামুনের খামারটা উৎসাহব্যঞ্জক। তাকে দেখে উপজেলার অনেক বেকার যুবক গরুর খামার করতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আমাদের জনবল কম। আমরা চেষ্টা করব মামুনসহ সবাইকে সেবা দিতে। আমরা আছি সবার পাশে। এতে করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রাণিসম্পদে দেশ আরও সমৃদ্ধ হবে।