লাশের পাশে ফাহিমের আবেগঘন চিরকুট ‘প্রিয় মা-বাবা,আমাকে ক্ষমা কর

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নে ঝুলন্ত অবস্থায় মাহমুদুল হাসান ফাহিম নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার  দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ বিষ্ণপুর গ্রামের পুরাতন সর্দার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে।

নিহত মাহমুদুল হাসান ফাহিম পুরাতন সর্দার বাড়ির হারুন অর রশিদ বাবুলের ছেলে। সে স্থানীয় কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। লাশ উদ্ধারের সময় এর পাশে পড়ে থাকা একটি চিরকুট পাওয়া যায়।

চিরকুটে লেখা ছিল- ‘প্রিয় মা-বাবা আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দিও, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, আমার মৃত্যুর জন্য ডিপ্রেশনই দায়ী। চোরাবালির মতো ডিপ্রেশন বেড়েই যাচ্ছে, ক্রমাগত আমাকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। মুক্তির কোনো পথ নেই। গ্রাস করে নিচ্ছে জীবন, নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আজ আমি বড্ড ক্লান্ত, এবার মুক্তি চাই এই জীবন থেকে বাঁচার জন্য মরতেছি, সবাই ক্ষমা করে দিও- ফাহিম।’

জানা গেছে, ফাহিমরা দুই ভাই, বাবা-মার সঙ্গে ছোট ভাই চট্টগ্রামে থাকে। চাচাদের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত ফাহিম। কিন্তু গত কয়েকমাস থেকে মোবাইল গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে সে। এসব ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে মোবাইলে তাকে বকাঝকা করেন তার বাবা।
 
শুক্রবার রাতে খাওয়ার পর নিজের ঘরে যায় ফাহিম। সকালে ঘরের ভেতর থেকে তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।

চিরকুটে আরো লেখেন, ‘দোকানদার সোহাগ ভাই ১০০০ টাকা পাবে, লাস্ট কষ্ট করে এই টাকাগুলো দিয়ে দিয়েন।’

সেনবাগ থানার এসআই সবুজ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত শিক্ষার্থী মোবাইলে বিভিন্ন গেমে আসক্ত হয়ে ডিপ্রেশন থেকে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে।