নদীর তীর সংরক্ষণে এগিয়ে এসেছে এলাকাবাসী

হাতিয়া দ্বীপের উত্তরাংশ বিশেষ করে হাতিয়ার বৃহৎ বাণিজ্যকেন্দ্র আফাজিয়া বাজার নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা কল্পে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়নে  জিও ব্যাগ ফেলার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমান স্টীমার ঘাট থেকে পশ্চিম  দিকে  ২০০ মিটার ও পূর্ব দিকে ৫০০ মিটার সর্বোমোট ৭০০ মিটার তীর এলাকায় এ জিও ব্যাগ ফেলা হবে। এ ব্যাপারে সম্প্রতি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী এক  সভা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী মহি উদ্দিন আহমদকে সভাপতি, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মুহি উদ্দিন মুহিনকে সেক্রেটারী ও আজহার উদ্দিনকে কোষাধ্যক্ষ করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট  হাতিয়া নদী শাসন ও তীর সংরক্ষণ সেচ্ছাসেবী সংগঠন নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতোমধ্যে গত তিন দিনে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার সেচ্ছা অনুদান জমা হয়েছে সংগঠনের ব্যাংক একাউন্টে। প্রতিদিনই বিশাল অংকের টাকা জমা হচ্ছে ওই ব্যাংক একাউন্টে। মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে আমাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিএনপি নেত্রী ফৌজিয়া খিলজী সোহেলীও ২ লক্ষ টাকা দিয়ে শরীক হয়ে আমাদের এই কর্মকান্ডকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সংগঠনের সভাপতি মহি উদ্দিন আহমদ জানান, হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী ও তাঁর সহধর্মিনী বতর্মান এমপি আয়েশা ফেরদাউসের প্রচেষ্টায় হাতিয়ার ভাঙ্গন রোধে ২২ শত কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে চুড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। করোনার মহামারিতে সরকার স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও কৃষি খাত ছাড়া সকল উন্নয়ন বরাদ্দ স্থগিত রাখায় প্রকল্পটি কবে কখন অনুমোদন হয় তা বলা যাচ্ছে না।  ইতোমধ্যে হাতিয়ার বৃহৎ বাণিজ্যকেন্দ্র আফাজিয়া বাজার নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে। তাই আমরা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী উদ্যোগ নিয়ে আফাজিয়া বাজার ও মানুষের বাড়ি-ঘর রক্ষার্থে এ উদ্যোগ নিয়েছি। সর্বমহলের বেশ সাড়াও পেয়েছি, হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সাহেব ৪ লক্ষ ফুট বালু দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন এবং সংগঠনের পুঁজির সংকুলান না হলে অবশিষ্ট টাকাও উনি বহন করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শক্রমে ঈদের আগেই কাজ শুরু  করবো, ইনশাল্লাহ। ইতোপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে নলচিরা ঘাট রক্ষায় মাত্র ৩০০ মিটার কাজ করেছে। এতে ঘাট এলাকার নদীর তীর সংরক্ষণে সুফল পাওয়া গেছে। এ সুফলকে অনুসরণ করে  আফাজিয়া বাজার ও হাতিয়ার মানুষের বাড়ি-ঘর রক্ষার্থে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।

 হাতিয়া নদী শাসন ও তীর সংরক্ষণ সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সেক্রেটারী মুহি উদ্দিন মুহিন বলেন, দলমত নির্বিশেষে আমরা হাতিয়ার সন্তান। হাতিয়া আমাদের জন্মভূমি,আমাদের ভিটেমাটি রক্ষার দায়িত্ব অবশ্যই আমাদের নিতে হবে। আমাদের এই চেষ্টার সুফল সারা হাতিয়ার জনগণ পাবে। দেশে এবং দেশের বাইরের সকল মানবিক বিত্তবানদের প্রতি আকুল আবেদন – হাতিয়া নদী ভাঙ্গন রোধের এই কাজে আপনারাও  এগিয়ে আসুন। কেউ যদি স্বেচ্চায় অনুদান প্রদান করতে চান,নিচের এই ব্যাংক হিসাবে পাঠাতে পারেন। “হাতিয়া নদী শাসন ও তীর সংরক্ষণ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন” , হিসাব নং-১৪৭৫৯০১০২৪৯৬৩, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড হাতিয়া শাখা। আমরা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সাথে আমাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করবো । নিন্দুকদের মুখে চুনকালি দিয়ে আমরা সফল হবো  ইনশাআল্লাহ।