ব্রেকিং:
হামাসের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা পুলিশের নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম ড. ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত দেশজুড়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর দেশজুড়ে যেসব কার্যালয়-স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুর-আগুন ১৬ বছর পর বাংলাদেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র চালু হয় এই দিনে প্রতিটি হত্যার বিচার হবে, একটু সময় দিন: সেনাপ্রধান ১১টার মধ্যে শহীদ মিনারে জড়ো হতে বললেন আসিফ মাহমুদ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই ব্যবস্থা আজ থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি শুরু শহীদ মিনারে স্লোগান দিচ্ছেন রিকশাচালকেরাও শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আগুন গণভবনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক বসছে আজ আন্দোলনকারীরা চাইলে এখনই বসতে রাজি: প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে বাস চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ, সঙ্গে টেলিগ্রামও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের গেজেট প্রকাশ পুরো আগস্ট কালো ব্যাচ পরতে হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের
  • সোমবার ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ২২ ১৪৩১

  • || ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

ঈশ্বরচন্দ্রের বিধবা বিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে ছিল ৩৬ হাজার মানুষ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২২  

বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি ছিলেন একাধারে বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক ও প্রাবন্ধিক। ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে তার জন্ম।

ছোটবেলায় শিক্ষার প্রতি তার ছিল গভীর আকর্ষণ। তবে রাতে ঘরে আলো জ্বালানোর মতো সামর্থ্য না থাকায় রাস্তায় লাইটের নিচে বসে পড়ালেখা চালিয়েছেন তিনি। এরপর গ্রামের পাঠশালা থেকে সংস্কৃত শিখে তার বাবার সঙ্গে চলে যান কলকাতায়। বাংলা, সংস্কৃতি ও ইংরেজি ভাষায় অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃতি কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তাকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি দেয়া হয়।

এদিকে তখনকার দিনে নারীদের শিক্ষার বিষয়টি মারাত্মক অবহেলিত ছিল। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে তখন নারীদের জন্য ৩৫টি বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। এ ছাড়াও সনাতন (হিন্দু) ধর্মে বিধবা বিয়ে নিষেধ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে যখন বিধবাদের স্বামীর চিতায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো, তখন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়েছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এ নিয়ে পরবর্তীতে তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ‘বিধবা বিবাহ’ আইন পাস হয়। 

এ ছাড়াও বিধবা বিবাহকে আইনসংগত করার জন্য যে আবেদনপত্র দাখিল করা হয়েছিল, তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন ৯৮৭ জন ব্যক্তি। আর এ আবেদনের বিরোধিতাকারী পাল্টা আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন প্রায় ৩৬ হাজার ব্যক্তি। এত বাধার পরও জয় হয়েছিল ঈশ্বরচন্দ্রের। শুধু প্রতিবাদ করেই ক্ষান্ত হননি, এ প্রথা বাতিল করাতেও সক্ষম হন তিনি। হিন্দু নারীদের কেবল স্বামীর দাসী হিসেবে বিবেচনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, মানুষ হিসেবে বিবেচনা এবং বিধবা বিয়ে চালু করতে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

এ ছাড়া সমাজসংস্কারক, শিক্ষাবিদ পরিচয়ের অন্তরালে থেকে গেছে তার হোমিওপ্যাথি-চর্চা। পুরোদস্তুর ডাক্তারবাবুর ভূমিকায় তাকে পেয়েছিলেন এলাকার আদিবাসী মানুষজন। বাড়ির বৈঠকখানাই ছিল তার অবৈতনিক ডিসপেনসারি। বিদ্যাসাগরের হোমিওপ্যাথি চর্চার ডায়েরি রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারে। 

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা লিপি সংস্কারের মাধ্যমে সহজপাঠ্য করে তুলেছেন। তিনি বাংলা বর্ণমালা পুনর্গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তার অবদানে, বাংলা বর্ণমালায় ১২টি স্বরবর্ণ এবং ৪০টি ব্যঞ্জনবর্ণে রূপান্তর হয়। তিনিই প্রথম বাংলায় যতি চিহ্নের প্রচলন ঘটিয়েছিলেন। 

বিবিসি বাংলার ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে?’ জরিপে শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ ২০ বাঙালির তালিকায় অষ্টম স্থানে আছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি যে শুধু বাংলা ভাষাকে যুক্তিগ্রাহ্য ও সবার বোধগম্য করে তুলেছিলেন তাই নয়, তিনি ছিলেন বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বাঙালি সমাজে প্রগতিশীল সংস্কারের একজন অগ্রদূত। ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই এ মহান সংস্কারকের জীবনাবসান ঘটে।