ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ যুগের পর এক্সরে ও সনোগ্রাফি

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২  

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৩ বছর পর আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন ও বিকল হওয়ার ১৮ বছর পর এক্স-রে মেশিনটি চালু করা হয়েছে। অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি এখন স্বল্প মূলে এসব সেবা পাচ্ছে উপজেলার সাধারণ মানুষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দীর্ঘদিন পর কাঙ্খিত আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও এক্স-রে সেবা দিতে পেরে কর্তৃপক্ষের মধ্যে মিলেছে আনন্দ। তেমনি অল্প খরচে এসব সেবা পেয়ে রোগীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

সরেজমিনে ঘুরে ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করা হয়। শুরু থেকে এক্স-রে মেশিন থাকলেও ২০০৪ সালে মেশিনটি বিকল হয়ে যায়। এর পর থেকে দীর্ঘ ১৮ বছর মেশিনটি বিকল হয়ে এক পর্যায়ে এটি অকেজো হয়ে পরে। পরে বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন নিজ উদ্যোগে অন্য উপজেলা থেকে একটি পুরাতন এক্স-রে মেশিন এনে দুই মাস পূর্বে তা চালু করেন। যার ফলে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় এক্স-রে পরীক্ষা করতে পারছেন রোগীরা। এর পর থেকে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারজন ও মাসে নব্বই থেকে একশজন রোগী এখান থেকে এক্স-রে সেবা গ্রহন করে আসছেন।

এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু হওয়ার ২৪ বছরেও আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন ছিল না। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় গত তিন মাস পূর্বে আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন স্থাপন করা হয় এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। মেশিনটি স্থাপনের পর থেকে সহজেই আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার করাতে পারছেন রোগীরা। আর এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্ধারিত ফি মাত্র ২৫০ টাকা খরচ হয় তাদের। গড়ে প্রতিদিন সাত থেকে আটজন ও মাসে ১৭০ থেকে ১৮০ জন রোগী এই সুবিধা নিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা হয় বহিঃ বিভাগ থেকে চিকিৎসা সেবা নেয়া রোগীর স্বজন উপজেলার বালিনা গ্রামের জসিম উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃ বিভাগে একজন গাইনী চিকিৎসককে দেখিয়েছি। তিনি স্ত্রীকে তিনটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিয়েছেন। এর মধ্যে আল্ট্রাসনোগ্রাফি ছিল। সেটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আল্ট্রাসনোগ্রাফি থেকেই ওই গাইনী চিকিৎসক করে দিয়েছেন। আর অন্য দুটি পরীক্ষা এখানকার প্যাথলজি থেকে করা হয়েছে। আর এসব পরীক্ষা এখান থেকে আমি স্বল্প মূল্যে করতে পেরেছি।

এক্স-রে কক্ষে গিয়ে দেখা হয় দীর্ঘভুমি গ্রামের মমিন মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, বেশ কয়েক দিন যাবত আমার বুকে ও পায়ে ব্যাথা অনুভব করছি। আজ এখানকার একজন চিকিৎসকের কাছে আসলে তিনি আমার বুকের ও পায়ের এক্স-রে পরীক্ষা করতে বলেন। পরে আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে বিভাগ থেকে এক্স-রে করি। এতে আমার পায়ের এক্স-রে ৮০ টাকা ও বুকের এক্স-রে ১০০ টাকায় ফি দিতে হয়েছে। ১৮০ টাকায় আমার দুটি এক্স-রে পরীক্ষা হয়েছে যা বাহিরের কোন ক্লিনিক থেকে করলে ১২ থেকে ১৫শ টাকা খরচ হতো। আমাদের গরীব রোগীদের জন্য এটি সুবিধা হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে টেকনোলজিষ্ট ইউসুফ খান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে পরীক্ষায় রোগীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ৮০ থেকে ১০০ টাকা নেয়া হয়। এখন প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ জন রোগী এখান থেকে এক্স-রে পরীক্ষা করেন। তবে এই মেশিনটি পুরাতন মডেলের। বর্তমান সময়ে যার ব্যবহার কম। বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন হলে রোগীদের আরও বেশি সেবা দেওয়া যেতো এবং রোগীরা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্বল্পমূল্যে তাদের এসব পরীক্ষা করতে আগ্রহী হতো।  

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও সনোলজিষ্ট ডা. তরেকা রায়হানা জুই বলেন, বিগত দিনে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। গত দুই মাস যাবত এটি চালু করা হয়েছে। বাহিরের কোন ক্লিনিকে এ পরীক্ষা করতে গেলে রোগীদের কমপক্ষে ৬০০ টাক দিতে হয়। আর সরকারি হাসপাতালে এ পরিক্ষায় মাত্র ২৫০ টাক খরচ হয়। এতে সাধারণ রোগীরা অল্প খরচে আল্ট্রাসনোগ্রফি পরীক্ষা করতে পারছেন। এখনকার মানুষরা বিষয়টি না জানার কারণে প্রথম দিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় রোগী কম হতো। দিনে দিনে মানুষ জানতেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় রোগীদের আগ্রহ বাড়তেছে। ডা. তরেকা রাইহানা বলেন, রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে প্রতিমাসে আল্ট্রাসনোগ্রাফির যা পরীক্ষা হয় এর মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি ও অধিকাংশই গরর্ভবতী মা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, আমি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি চালু করা ও এখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার ব্যবস্থা করার। লক্ষ্য অনুযায়ী এই দুটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে সফল হয়েছি। দীর্ঘদিন এক্স-রে মেশিন বিকল হয়ে পরে থাকায় ও এখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন না থাকায় এখানকার রোগীরা এসব সেবা থকে বঞ্চিত হয়েছে। তিন মাস দুই মাস হল এক্স-রে মেশিন ও তিন মাস হয় আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন চালু করা হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে এটি উপজেলাবাসীর কাছে প্রচার হচ্ছে ও দিন দিন এসব সেবা গ্রহীতা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে বর্তমান সময়ের সথে আমরা একটি সিআর ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে পেয়ে যাবো। শেষে তিনি রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা সেবা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবা গ্রহনের আহবান জানান।