ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কুমিল্লার সেনেরবাজারে পাকবাহিনীর দুটি নৌকা ডুবে অনেক সৈন্য নিহত

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২১  

১৯৭১ সালের ২৭ আগস্ট দিনটি ছিল শুক্রবার। এদিক পাকবাহিনীর একটি দল সকালে নৌকাযোগে কুমিল্লার সেনেরবাজারের দিকে অগ্রসর হলে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে দুটি নৌকাই ডুবে যায় এবং অধিকাংশ সৈন্যের মৃত্যু ঘটে। 

পরপর দুদিন আক্রান্ত হবার পরে পাকবাহিনী নয়ানপুরের পশ্চিম পাশে শশীদল গ্রামের কাছে জমায়েত হয় এবং সেনেরবাজার মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের ওপর মর্টার আক্রমণ চালায়। দীর্ঘ যুদ্ধের পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পাকসেনারা পিছু হটে। এই সংঘর্ষে দুপক্ষের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। মুক্তিবাহিনী পরশুরাম থানার কাছে অ্যামবুশ করে ৭ জন পাকসেনাকে হত্যা করে।

ফেনী-বিলোনিয়া সড়কে হাসানপুর সেতুটি মুক্তিযোদ্ধারা ধ্বংস করে দেয়। সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা সিয়ালা ঘাটের কাছে কাকারদি সেতু ধ্বংস করতে গেলে রাজাকারদের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয় এবং তাদের পরাস্ত করে সেতু ধ্বংস করে দেয়। এ যুদ্ধে ২ জন রাজাকার নিহত ও ১ জন বন্দি হয়।

পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকাররা খুলনা খালিশপুরে পিপলস জুট মিলের খেয়াঘাট পেরিয়ে সেনহাটি গ্রাম হয়ে দিয়ারা এসে পৌঁছায়। ভোর রাতেই কয়েকশ রাজাকার, বিহারি ও পাকিস্তানী সেনা সদস্যরা গোটা দিয়ারা গ্রামটি ঘিরে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে থাকে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে না পেয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হানাদার বাহিনী প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবদারের বাড়ী থেকে পিতা ডা. মতিয়ার রহমানসহ ৬ জনকে ধরে রাস্তায় এনে  পিঠমোড়া করে বেঁধে সেখানেই তাদের কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এরপর হানাদারদের আক্রমণের মুখে গ্রামের কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হলেও হায়েনাদের হাতে ৬১ জন যুব-বয়স্ক ধরা পড়ে। মাটিতে ফেলে হানাদার, অবাঙালি ও রাজাকাররা ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে তাদের। ৬১ জনের মধ্যে ৬০ জন ঘটনাস্থলেই শাহাদাতবরণ করেন। এদের মধ্যে ৩৮ জন শহীদের লাশ ভৈরব নদীতে ছুঁড়ে ফেলে এবং বাকি ২২ জনকে তিনটি গণকবরে মাটিচাপা দেয়।

বাংলাদেশ সরকারের মুখপাত্র মিজানুর রহমান চৌধুরী মুজিবনগরে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক মোতায়েন না করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব উ’ থান্টের প্রতি আহ্বান জানান। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বিশেষ সহকারী ডা. এ এম মালিক ইসলামাবাদে বলেন, ইয়াহিয়া খান দেশে একটি বেসামরিক সরকার গঠনে আগ্রহী।‘হংকং স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকার এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, সামরিক আদালতে শেখ মুজিবুর রহমানের বিচারের নামে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা যা করতে যাচ্ছে তা একটা প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই বিচার প্রহসনের পেছনে পাকিস্তানী সামরিক জান্তার যে গোপন দুরভিসন্ধি রয়েছে তা বীভৎস।

আইরিশ আইনজীবী, রাজনীতিক ও মানবাধিকার আন্দোলনের অন্যতম নেতা শ্যন ম্যাকব্রাইট এক চিঠিতে জেনারেল ইয়াহিয়াকে শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার অসামরিক আদালতে করার জন্যে আবেদন জানিয়ে বলেন, কোন বিদেশী আইনজীবীকে পাকিস্তানের আদালতে শেখ মুজিবের পক্ষ সমর্থনের অনুমতি যদি না দেয়া হয় তাহলে শেখ মুজিবুর রহমান যাতে তার ইচ্ছে মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন তার ব্যবস্থা যেন করা হয়। তিনি বলেন, বিচারে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যদি তার ইচ্ছে মতো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেয়া তাহলে তা বিচার বলে গণ্য হতে পারে না।

জয়বাংলা ১ম বর্ষ, ১৬তম সংখ্যায় বলা হয়, সভ্য জগত থেকে বিচ্ছিন্ন বেলুচিস্তানের কাকুনে বাংলাদেশে হত্যা চালাবার জন্য বিশেষ জল্লাদ বাহিনী ট্রেনিং লাভ করেছে। এক ডজন আমেরিকান বিশেষজ্ঞ ইয়াহিয়ার স্পেশাল ফোর্স তৈরির কাজে ট্রেনিং দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিকামী ভিয়েতনামী নাগরিকদের বেছে বেছে হত্যা ও ধ্বংসের উদ্দেশ্যে যেমন করে ট্রেনিংপ্রাপ্ত গুপ্তবাহিনী প্রেরণ করেছিল এবং যার নাম সরকারীভাবে দিয়েছিল ‘গ্রিন ব্যারেট’, ইয়াহিয়া সরকারও ঠিক তেমনি করে গোপন ট্রেনিং দিয়ে একটি বিশেষ হত্যাকারী বাহিনী গড়ে তুলেছে।