ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দিনে টার্গেট ৩০০ মোবাইল চুরি

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

বাসে কোথাও যাচ্ছেন। জানালার পাশেই আপনার সিট। হাতে মোবাইল নিয়ে আনমনে বসে আছেন অথবা কানে ধরে কথা বলছেন। হঠাৎ ছোঁ-মেরে মোবাইলটি নিয়ে গেলো কেউ। বাস থেকে নেমে চোর ধরা তো দূরে থাক, ভিড়ের মধ্যে তার দেখাই মেলে না। এভাবে দিনের পর দিন ছিনতাই করা তরুণ-যুবকদের নিয়ে রাজধানীতে গড়ে উঠেছে একটি চক্র, যা পরিচিতি পেয়েছে ‘ছোঁ-মারা পার্টি’ নামে। শুধু বাসের যাত্রী নয়, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, ট্রেনে চলাচলকারী এমনকি রাস্তার ফুটপাত ধরে হাঁটা ব্যক্তিরাও ছোঁ-মারা পার্টির টার্গেট।

গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বলছে, ঢাকায় ছোঁ-মারা পার্টির অন্তত ১০০ সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন নেতা, যাদের মাধ্যমে এ চক্রটি পরিচালিত হয়। চক্রের এ নেতারা ‘মহাজন’ নামে পরিচিত। তারা চক্রের তরুণ-যুবকদের নামমাত্র টাকা অথবা মাদকদ্রব্য দেন। তা নিয়েই দিনের পর দিন রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ছিনতাই করে যাচ্ছেন চক্রের সদস্যরা। মহাজনরা চক্রের সদস্যদের দিনে অন্তত তিনটি মোবাইল চুরির নির্দেশনা দেন। অর্থাৎ ছোঁ-মারা পার্টির ১০০ সদস্যকে দিয়ে দিনে ৩০০ মোবাইল চুরি করানো হয়। মোবাইলের বাইরেও তারা ল্যাপটপ, ব্যাগসহ দামি জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতে সিদ্ধহস্ত।

ছোঁ-মারা পার্টিতে সক্রিয় এমন ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে ছোঁ-মারা পার্টির তিনজন ‘মহাজন’ও রয়েছেন। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্র সম্পর্কে ধারণা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।

উত্তরখান থেকে গ্রেফতাররা হলেন- মিজান, আমিরুল ইসলাম বাবু, শরিফ হোসেন, হৃদয়, রাজ, সুমন, সোহেল বাবু, হৃদয়, মনিরুজ্জামান, নাজমুল, মনির, ইমরান, ফারুক, আশরাফুল ইসলাম সজিব, আরিফ ও হাসান। তাদের কাছ থেকে একটি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৫০টি মোবাইল, চারটি চাকু, দুই জোড়া সোনার দুল ও নগদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাস, ট্রেন, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলে চলাচল করা যাত্রীরা মোবাইলে কথা বলার সময় জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে যায় চক্রটি। গাড়ির জানালা দিয়ে যাত্রীদের বা পথচারীদের ব্যাগ, সোনার চেইন, ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেন তারা। অনেকের নাম পেয়েছি, তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

ডিবিপ্রধান জানান, ছিনতাইয়ের পর নামমাত্র দামে মোবাইলসহ বিভিন্ন পণ্য মহাজনদের কাছে বিক্রি করতেন। এরপর মহাজনরা নির্ধারিত দোকানে সেসব বিক্রি করে দিতেন। দোকানিরা তুলনামূলক কম দামি মোবাইল খুচরা বাজারে বিক্রি করতেন। তবে দামি মোবাইল হলে তার যন্ত্রাংশ খুলে আলাদাভাবে বিক্রি করে হতো। অনেক ক্ষেত্রে দামি মোবাইল আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিক্রি করতো চক্রটি। কখনও দেশের বাইরে পাচার করে এরা।

হারুন অর রশীদ বলেন, উত্তরখানে বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং নামে একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ছোঁ-মারা পার্টির দলনেতা ও চোরাইমাল ক্রয়-বিক্রয়কারীসহ চক্রের ১৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রটির নেতৃত্বে মহাখালী থেকে টঙ্গী বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ১৫-১৬টি স্পটে ছিনতাই চালিয়ে আসছিল। চক্রের নেতা মিজান, জয়-বাবু ও শরীফের নেতৃত্বে এ কাজ চলতো। এরপর সেসব চোরাইমাল ক্রয়-বিক্রয়কারী সুমন, ফারুক ও আশরাফুল ইসলাম সজিবের মাধ্যমে বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং নামে দোকানে বিক্রয় করে আসছিল।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, গ্রেফতারদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত। মূলত মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে তারা ছিনতাই করেন। কখনও কখনও দলনেতা তথা মহাজনরা তাদের মাদক সরবরাহ করতের। যাতে তাদের দিয়ে ছিনতাইয়ের কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। চক্রের সদস্যরা গ্রেফতার হলে তাদের জামিন করানো বা পরিবারকে অর্থ সহায়তাও করেন এ মহাজনরা।

ছোঁ-মারা চক্রের সমস্যা সমাধানের মূলে যেতে হবে উল্লেখ করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করলে জামিনে বের হয়ে আবার এ কাজে জড়িয়ে পড়েন। এজন্য তাদের শাস্তির পাশাপাশি রিহ্যাব সেন্টারে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আমাদেরও অন্ধকার জায়গা এড়িয়ে চলা কিংবা গাড়িতে চলাচলের সময় জানালার পাশে মোবাইল ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।