ব্রেকিং:
ফেনীতে কিশোর গ্যাং পিএনএফের প্রধানসহ গ্রেফতার ৫ সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেলেন সেনাপ্রধান সৌদি পৌঁছেছেন ১৭ হাজার ১৪১ হজযাত্রী সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ সাবেক মন্ত্রীর ৪ ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক আজ বিশ্ব মা দিবস জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল ঋণ শোধের সক্ষমতা অর্জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নোয়াখালীতে হেরে গেলেন ওবায়দুল কাদের পতেঙ্গায় আগুন ধরে প্রশিক্ষণ বিমান কর্ণফুলীতে, ২ পাইলট আহত লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টিতে ভোটার শূন্য কেন্দ্র সুবর্ণচরে এক বুথে ঘণ্টায় পড়ল ১ ভোট ছেলের বিরুদ্ধে ভোট করলে ইউনিয়নে উন্নয়ন বন্ধ করার হুমকি এমপিপত্নীর
  • শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

তীব্র গরমে শ্রমিক সংকট, মাটি কাটার মজুরি ১৮০০ টাকা

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২ মে ২০২৪  

সারাদেশের ন্যায় ফেনীতেও তীব্র তাপপ্রবাহে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরমে রাস্তাঘাটে কমে গেছে মানুষের চলাচল। তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে দিনমজুর, রিকশাচালকেরা জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হলেও দীর্ঘক্ষণ থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। 

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ফেনী শহরের ট্রাংক রোড খেজুর চত্বরের শ্রম বেচাকেনার হাটে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য সময়ের তুলনায় শ্রমিকের সংখ্যা অনেক কম। স্বাভাবিক সময়ে এ শ্রমবাজারে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ দিনমজুর কাজের সন্ধানে জড়ো হলেও এদিন ৫০-৬০ জন দিনমজুর চোখে পড়ে। এ অবস্থায় গত কয়েকদিন ধরে চড়া মজুরিতেও শ্রমিক না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিকপক্ষ। 

জামাল উদ্দিন নামে ভাসমান এ হাটের এক শ্রমজীবী বলেন, প্রতিদিন ভোর থেকে শতশত শ্রমিক ট্রাংক রোডে এসে দাঁড়ায়। এরপর বাড়িওয়ালা, ঠিকাদাররা এসে চুক্তির মাধ্যমে কাজের জন্য নিয়ে যান। রাজমিস্ত্রী, ফসল কাটাসহ চুক্তিতে নানা রকমের কাজ করি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিক সংখ্যা অনেক কম। রোদের তপ্ততায় আমরাও ঠিকভাবে কাজ করতে পারছি না। 

বোরহান নামে আরেক শ্রমিক বলেন, বছরের প্রায় প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে আমাদের মতো দরিদ্র বহু শ্রমজীবী মানুষ এ শ্রম বেচাকেনার হাটে আসেন। গত কয়েকদিন তীব্র গরমের কারণে শ্রমিকের সংখ্যা কম। গরমে বাড়তি কষ্ট করতে হচ্ছে সেজন্য মজুরিও অন্য সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশি। পেটের দায়ে কাজে গেলেও রোদে খুব কষ্ট হয়। 

পার্শ্ববর্তী চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা মো. এনাম। ফেনীতে ভালো কাজ পাওয়া যায় বলে প্রায় তিনবছর ধরে নিয়মিত এ ভাসমান হাটে আসেন তিনি। গরমে দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, গরমের তীব্রতায় কতক্ষণ পরপর বিশ্রাম নিয়ে কাজ করছি। বারবার গলা শুকিয়ে যায়। তারপরও পরিবারের কথা চিন্তা করে রাস্তায় বের হয়েছি। 

মনু মিয়া নামে এক শ্রমিক বলেন, বাড়তি আয়ের জন্য দিনাজপুর থেকে ফেনীতে আসি। কাজ পেলে মালিকের বাড়ি বা আশপাশের এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। কিন্তু গত দুইদিন গরমের কারণে কাজে যাইনি। রাতে স্টেশনে ঘুমাচ্ছি। খুব কষ্টে দিন পার করছি।

হাটে কাজের লোক নিতে আসা আহমেদ রুবেল নামে একজন বলেন, বাড়িতে মাটি কাটার কাজের জন্য শ্রমিক নিতে এসেছি। বাড়তি মজুরি দিতে চাইলেও গরমের কথা বলে তারা এ কাজে যেতে রাজি হচ্ছে না। জরুরি প্রয়োজন হওয়ায় দৈনিক ১৮০০ টাকা মজুরিতে দুইজন নিয়েছি।

আরিফুর রহমান নামে আরেকজন বলেন, ধান কাটার জন্য লোক নিতে এসেছি। তবে মজুরি বেশি চাওয়ায় আপাতত বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি মজুরি দাবি করছে। কিন্তু এতো টাকা মজুরি দিয়ে কাজ করালে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। 

সদর উপজেলার লেমুয়া এলাকা থেকে শ্রমিক নিতে আসেন রমজান আলী। তিনি বলেন, অন্যান্য জেলার তুলনায় ফেনীতে কাজ বেশি পাওয়া যায় বলে এখানে বছরের সবসময় শ্রমিকরা আসে। তাদের বেশিরভাগই আসেন রংপুর, সিলেট, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর ও কুমিল্লাসহ অন্যান্য জেলা থেকে। তবে গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে লোকজন কাজে যেতে চাচ্ছে না। বাড়তি মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। 

পরশুরাম উপজেলা বীরচন্দ্র নগর এলাকার কৃষক আবুল কালাম বলেন, এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে আমাদের স্বপ্নের ফসল মাঠেই নষ্ট হয়ে যাবে। এ ছাড়া এতো টাকা মজুরি দিয়ে কাজ করালেও লোকসান গুনতে হবে। আমরা নিরুপায় হয়ে গেছি।

এদিকে চলমান দাবদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অফিস। ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেনীতে শনিবার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫০ শতাংশ। আরও কয়েকদিন তাপপ্রবাহ স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।