ব্রেকিং:
ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি, আ.লীগ নেতাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা নোয়াখালীর চরজব্বার থানার ওসি প্রত্যাহার নোবিপ্রবিতে চালু হলো প্রথমবারের মতো পিএইচডি প্রোগ্রাম তিন রাত শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মাসহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া? কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে
  • সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২১  

আজ ১৭ রমজান, ঐতিহাসিক বদর দিবস। মদিনা থেকে প্রায় ৭০ মাইল দূরে বদর প্রান্তরে ইসলামের ইতিহাসে প্রথম সম্মুখ সমর অনুষ্ঠিত হয় এই দিনে। পৃথিবীতে ইসলাম থাকবে কি থাকবে না- এ ফয়সালা হয় বদরের রণাঙ্গনে, ঐতিহাসিক এক যুদ্ধের মাধ্যমে। 

মাহে রমজানে যে বছর মদিনায় প্রথম সিয়াম পালিত হয়, সেই দ্বিতীয় হিজরি সালের ১৭ রমজান, মাগফিরাতের সপ্তম দিন মোতাবেক ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মার্চ ইসলামের ইতিহাসের প্রথম আত্মরক্ষামূলক সশস্ত্র যুদ্ধ ‘গায্ওয়ায়ে বদরে’ ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন হয়েছিল বলে এ দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের ইতিহাসে ‘বদরের যুদ্ধ’ বিশেষভাবে স্মরণীয়। ওই যুদ্ধে মুসলমানদের ‘চূড়ান্ত মীমাংসা’ হয়েছিল।

বস্তুত মহানবী (সা.) যুদ্ধপ্রবণ মানুষ ছিলেন না। কিন্তু তৎকালীন অমুসলিম শক্তির নানামুখী ষড়যন্ত্র, নির্যাতন আর ইসলামকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দেওয়ার অপপ্রয়াস মোকাবিলায় রাসুলে পাক (সা.)-এর হাতে যুদ্ধ ব্যতীত কোনো বিকল্প ছিল না। তাওহিদ ও রেসালতের প্রতি আনুগত্যকারী মোহাজের ও আনসারদের সমন্বয়ে অসম সাহসী সাহাবায়ে কেরামের এক প্রত্যয়দীপ্ত বাহিনী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নেতৃত্বে নজিরবিহীন বীরত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে বদরের প্রান্তরে। মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গী হয়েছিল মহান আল্লাহপাক প্রদত্ত রহমত, মদদ ও সুসংবাদ সংবলিত বার্তাবলির অমোঘ শক্তিমত্তা। 

ইসলামের বিরুদ্ধবাদী বিশাল সৈন্য সামন্তের মোকাবিলায় ইমানদার বান্দাদের ছোট একটি দলের শশস্ত্র সংগ্রাম ছিল এটি। যুদ্ধে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সঙ্গে মাত্র ৩১৩ জন প্রায় নিরস্ত্র মুজাহিদ। অপরপক্ষে অবিশ্বাসীদের নেতা আবু জেহেলের নেতৃত্বে ছিল এক হাজার প্রশিক্ষিত সৈন্যের সুসজ্জিত বাহিনী। এ যুদ্ধে মানুষের ধারণাপ্রসূত সব রকমের চিন্তা ও উপলব্ধির বাইরে গিয়ে আল্লাহতায়ালা অস্ত্র-শস্ত্রহীন ইমানদারদের অতিক্ষুদ্র দলটিকে বিজয় দান করেন।

সেদিন বদরের প্রান্তরে ইমান ও কুফর, ন্যায় ও অন্যায়ের এক অন্যরকম ইতিহাস রচিত হয় যা যুগ যুগ পর্যন্ত এক আল্লাহতে বিশ্বাসী মুসলমানদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে আছে। মুসলমানরা বিশ্বাস করেন জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। সম্মান অপমান আল্লাহর হাতে।

এ বিশ্বাস ও চেতনা লালন করে পৃথিবীর যে প্রান্তে যখনই মুসলমানরা অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন তারা সংখ্যায় বা সম্পদে কম হলেও আল্লাহ তাদের বিজয় দান করেছেন।

পক্ষান্তরে আল্লাহর ওপর ভরসাহীন অঢেল সম্পদ ও প্রচুর সৈন্য সামন্তের বহরে সুসজ্জিত মুসলমানদের পরাজয়ের বর্ণনায় ইতিহাসের পাতা ভরপুর হয়ে আছে।

বদরের যুদ্ধ শুরুর আগে আল্লাহর নবী (সা.) দোয়া করেছিলেন, হে আল্লাহ, তুমি যদি চাও দুনিয়াতে তোমার ইবাদত করার কেউ না থাকুক, তাহলে এই ক্ষুদ্র দলটিকে নিশ্চিহ্ন হতে দাও। আল্লাহতায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দোয়া কবুল করেছিলেন। কুরাইশদের অহমিকা ও দম্ভ ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।

চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন বাহ্যিক উপায় উপকরণের তুচ্ছতা। তাই নিরস্ত্র মুষ্টিময় মুজাহিদের কাছে পরাজিত হয় সুসজ্জিত বিশাল বাহিনী। তাদের পক্ষে নিহত হলো ৭০ জন। বন্দি হয় আরও ৭০ জন। আর মুসলমানদের মধ্যে শহিদ হন মাত্র চৌদ্দজন।

যুদ্ধের এ ধরনের ফলাফল ছিল সম্পূর্ণ অভাবনীয়। কিন্তু তা ছিল আল্লাহর কুদরতের প্রমাণ। তিনি স্বল্পসংখ্যক মানুষকে বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়ী করে দেখিয়ে দিলেন অবিশ্বাসী লোকদের প্রকৃত দুর্বলতা ও অসহায়তা। তাই বদরের যুদ্ধ ইমানদারদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ।

মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরত করে যাওয়ার দ্বিতীয় বছরে যুদ্ধের অনুমতি নিয়ে হজরত জিবরাইল (আ.) কুরআন মজিদের কয়েকটি আয়াত নিয়ে আসেন-‘যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো হচ্ছে, তাদেরকে (যুদ্ধের) অনুমতি দেওয়া হলো এ জন্য যে, তারা নির্যাতিত হয়েছে।

আর আল্লাহ তাদের সাহায্য করতে সক্ষম। তাদেরকে নিজেদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল অন্যায়ভাবে শুধু এ কারণে, তারা বলে আমাদের প্রভু আল্লাহ।’ (সূরা হজ ৩৭)। অবিশ্বাসীদের প্রতিরোধ করার অনুমতি লাভের পর আল্লাহর নবী (সা.) বদর যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

বদরের প্রান্তরে ইসলাম বিজয়ের সূচনা হয়েছিল। তাই প্রতি বছর সতেরোই রমজান এলেই বিশ্ব মুসলিম শ্রদ্ধা ও গৌরবের সঙ্গে বদরের বিজয়কে স্মরণ করেন।