ব্রেকিং:
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া? কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি
  • শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জুমার দিনের কিছু বিশেষ আমল

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২১  

জুমার দিন মুসলমানদের জন্য সপ্তাহের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাপূর্ণ একটি দিন। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম সমাজে এই দিনটিকে পৃথিবীর অন্যতম তাৎপর্যবহ দিবস হিসেবে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে পবিত্র জুমা ও জুমাবারের রাত-দিনের রয়েছে অপরিসীম গুরুত্ব।

এই দিনটিকে মহান আল্লাহ তাআলা ইহুদি ও নাছারাদের ওপর ফরজ করেছিলেন। তবে তারা মতবিরোধ করে দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করে। পরে ইহুদিরা শনিবার এবং খ্রিস্টানরা রোববারকে তাদের ইবাদতের দিন বানায়। অবশেষে আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মদির জন্য এক মহান ও ফজিলতের দিন হিসেবে শুক্রবার দিনটিকে দান করেন। যা উম্মতে মুহাম্মদি সাদরে গ্রহণ করে (বুখারী, হাদিস নং: ৮৭৬, মুসলিম, হাদিস নং: ৮৫৫)। 

অথচ কিছু অজ্ঞতা এবং অতি ধর্মীয় কিছু অনুভূতি থেকে আমরা এ দিনে এমন কিছু আমল করি বা দিনটিকে নিয়ে আমরা এমন কিছু ভাবি যার সমর্থনে পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে কোনো দলিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এমন কিছু বিষয় নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

আল্লাহ তা’আলা কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম) ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা : ০৯)।

এই মর্যাদাপূর্ণ দিনের কিছু আমল রয়েছে। যা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। আল্লাহ তায়ালা এই দিন তার কাজের জন্য বান্দার করা প্রতিটি কাজের জন্য নেকী নির্ধারণ করেছেন। চলুন জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল জেনে নেই- 

শুক্রবারে কবর জিয়ারত করা 
কবর জিয়ারত করা সুন্নত। রাসূল (সা.) এ ব্যাপারে আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, বুরাইদা আসলামী মহানবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু আমাকে আমার মাতার কবর জিয়ারতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা তোমাদের মৃতদের কবর জিয়ারত কর। কেননা, তা তোমাদের আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং: ১০৭)।

সাধারণত শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুসল্লিরা গোরস্থানে কবর জিয়ারত করতে যান এবং সেখানে যথেষ্ট ভিড় সৃষ্টি করেন দেখা যায়। এ থেকে প্রশ্ন এসে যায়, শুক্রবারে কবর জিয়ারত করা কি আবশ্যক এবং অধিক সোওয়াবের কাজ। এ সম্পর্কে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, শুক্রবার জুমার সালাতের পর অবসর রয়েছে। সুতরাং এ সময় কোনো ব্যক্তি কখনও কখনও কবর জিয়ারত করতে পারেন। কিন্তু এটাকে শুক্রবারের অবশ্য করণীয় কাজ বা এটাকে সুন্নত বানিয়ে ফেলার কোনো সুযোগ নেই। কেননা কোরআন এবং হাদিসে কবর জিয়ারতের জন্য শুক্রবারকে নির্ধারণ করা বা শুক্রবারের নির্দেশিত আমলগুলোর মধ্যে এ কথা কোথাও উল্লেখ নেই।

এছাড়া শুধু শুক্রবার কবর জিয়ারত করা সম্পর্কে যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তা সঠিক নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, উক্ত হাদিসের সনদে মুহাম্মদ ইবনু নু’মান নামের যে রাবী রয়েছেন, তিনি অপরিচিত এবং ইয়াহইয়া নামের রাবী মিথ্যুক (সিলসিলা যঈফাহ, হাদিস নং: ৫৬০৫, মিশকাত, হাদিস নং: ১৬৭৬)।

শুক্রবারে নফল রোজা রাখা
শুক্রবার হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং: ১০৯৮)। নফল রোজা রাখার জন্য শুক্রবারকে নির্ধারণ বা নিদিষ্ট করে নেওয়া নিষেধ। তবে কেউ যদি বৃহস্পতি এবং শুক্রবার অথবা শুক্র ও শনিবার রোজা রাখেন অথবা আইয়ামুল বিজের অর্থাৎ প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে যদি রোজা পালন করেন, আর সেটা করতে গিয়ে যদি শুক্রবারে পড়ে যায়, তবে তা জায়েজ। এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ জুমার আগে বা পরে একদিন মেলানো ব্যতিত শুধু জুমার দিন রোজা রেখো না (সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ১৮৮৪, মুসলিম, হাদিস নং: ২৫৪৫)।

বেশি বেশি দরূদ পড়া
হজরত আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের সব দিন অপেক্ষা জুমআর দিনটিই হলো শ্রেষ্ঠ। এতে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এবং এতেই বিশ্ব ধ্বংসের জন্য শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে এবং এ দিনের পুনর্জীবিত করার জন্য দ্বিতীয়বার ফুঁক দেয়া হবে। এ দিন তোমরা আমার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ কর।

তোমাদের দরূদ নিশ্চয় আমার কাছে উপস্থিত করা হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের দরূদ আপনার কাছে কেমন করে উপস্থিত করা হবে অথচ আপনি তখন মাটি হয়ে যাবেন?

রাসূলুল্লাহ (সা.) উত্তরে বললেন, ‌আল্লাহ তাআলা নবিদের শরীর জমিনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, বাইহাকি)

যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর ৮০ বার এ দরুদ পড়বে-

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِهِ وَسَلِّم تَسْلِيْمَا

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলিমা।’ তার ৮০ বছরের গোনাহ্ মাফ হবে এবং ৮০ বছর ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে। সুবহানাল্লাহ!

সুরা কাহফ তিলওয়াত করা
মর্যাদপূর্ণ এই দিনের বিশেষ একটি আমল হচ্ছে সুরা কাহফ তিলওয়াত করা। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে। (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)

দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়া
জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ একটি আমল হচ্ছে দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ করা। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে যে, তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর নিকট যে দোয়া করবে আল্লাহ তা কবুল করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেকটি আমল জেনে-বুঝে করার তৌফিক দান করুন। আমিন।