ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মাসহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া? কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা
  • সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রতিদিন তিনশ ভিক্ষুককে চা-সিঙারা খাওয়ান এই বৃদ্ধ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০১৯  

শহরের মানুষের ঘুম ভাঙলেই ভিড় জমে গুলাব সিং জি ধীরাওয়াতের দোকানে। তাইতো তার দিনটা শুরু হয় রাত ৩টায়। এক সেকেন্ডও এদিক-ওদিক নয়। এমন ঘুটঘুটে অন্ধকারেই দোকান খোলেন তিনি। এক ঘণ্টার মধ্যেই চুলায় বসে যায় চায়ের পানি। এরপর দুধ জাল দিতে দিতে অতীতে হারিয়ে যান বৃদ্ধ। আদা, লবঙ্গ, এলাচ, তেজপাতার সঙ্গে উথলে ওঠা দুধের গন্ধে ঘুম ভাঙে জয়পুরের।
জয়পুরের অলি-গলিতে অসংখ্য চায়ের দোকান। তারপরও সেখানকার মানুষদের গুলাবের দোকানেই সকালের চা-টা খেতেই হবে! গোটা জয়পুর তাকে চেনে ‘গুলাব জি চাওয়ালা’ নামে। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, এই চা-এ চুমুক দিতে লাইন পড়ে যায় নামী-দামি ব্যক্তিত্বদেরও।

গুলাব সিং-এর এই দোকানে কয়েক রকমের চা পাওয়া যায়। দোকানটিতে গিয়ে আপনার চা-জার্নি শুরু করতে পারেন গন্ধ ও স্বাদ দিয়ে। ধীরে ধীরে চায়ের গভীরে যাওয়া যাবে। ঘন সর পড়া দুধে নানারকম মশলা দিয়ে বানানো চায়ে যিনি একবার চুমুক দিয়েছেন, তিনি ঘুরে ফিরে আসবেন। অনেকক্ষণ ধরে ফুটিয়ে গ্লাস ভর্তি ঘন ‘কড়ক চা’ খেয়ে বলতেই হবে, ‘বাহ! মামা..বাহ!’

এই দোকানের মাটির গ্লাসে ফুটন্ত তন্দুরি চা পেতে হলে খানিকটা অপেক্ষা করতে হবে। সকালের লাইনে ‘মশলা ম্যাজিক’, ঘন দুধ চা-এর ভিড় একটু পাতলা হলে, বিকেল-সন্ধ্যা থেকে বানানো শুরু হয় তন্দুরি চা। এই চায়ের অধিকাংশ ক্রেতা ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী। কলেজ শেষে বা অফিস ফেরত এক ভাঁড় তন্দুরি চায়ের সঙ্গে ভালোই মিলে জমানো গল্প।

এই দোকানটা আজকালের নয়, ১৯৭৪ সালে শুরু করেছিলেন গুলাব সিং। সেই থেকে চলছেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দীর্ঘ লাইন। রাত ১০টায় বন্ধ হয় দোকান। প্রতিদিন গড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ চা খেতে আসেন এই দোকানে। কোনো কোনো দিন আবার ঝটিকা সফরে চা খেয়ে যান সেলিব্রিটিরাও। মশলা চায়ের সঙ্গে সিঙারা, বান মাস্কা, কচুরি বান তো আছেই! অনেকেরই ধারণা গুলাবের চায়ে একটা সিক্রেট রেসিপি রয়েছে, যেটা ৭৩ বছর ধরে সাবধানে আগলে রেখেছেন তিনি! 

তবে গুলাব বলেন, আমার দোকানের চা আলাদা কিছু নয়। সেই একই চা পাতা, দুধ, মশলা যা সকলে ব্যবহার করে আমিও তাই করি। মানুষের ভালোবাসার সঙ্গে মিশে গেছে জয়পুরের ইতিহাস, তাই চায়ের স্বাদ একটু অন্যরকম লাগে।

অন্য এক গুলাব সিং

গুলাব সিং শুধু একজন চাওয়ালা নন। তিনি সমাজসেবকও। জয়পুরের মির্জা ইসমাইল রোডের এই দোকানে প্রতিদিন ফ্রিতে চা-সিঙারা খেয়ে যান ৩০০ জন গরিব মানুষ। কেউ চাইলে সিঙারার বদলে মাখন রুটিও নিতে পারেন। রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে যাই হোক, এই খাওয়ানোর বন্ধ নেই। ভিখারিদেরও আসা থেমে থাকে না।  ৩০০ জনের চেনা মুখ অনেক সময়েই বেড়ে ৩৫০ হয়ে যায়। তাতে অবশ্য গুলাবের চায়ের দোকানের দরজা বন্ধ হয় না।

গুলাব বলেছেন, মানুষ ভুলে যায় কোনো কিছুই আমাদের নয়। খালি হাতেই ফিরতে হবে সকলকে। মানুষকে আনন্দ দেয়ার মধ্যেই জীবনের সার্থকতা আছে। এই আনন্দের জন্য আমি এই কাজ করি। শেষ নিঃশ্বাস অবধি পরিশ্রম করে যেতে চাই। আরো বেশ কিছু বছর সবাইকে ভালোবাসতে চাই।