ব্রেকিং:
কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত
  • শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

একজন ‘বাকের ভাই’

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০১৯  

বাকের ভাই, একটি চরিত্র। সঙ্গে দুই ‘চেলা’ (সহযোগী)। মহল্লার প্রভাবশালী ‘কুত্তাওয়ালী’ তার পরিচালিত প্রাইভেট ব্রথেল ব্যবসা নির্বিঘ্ন করতে অন্যায়ভাবে বাকের ভাইকে খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। শেষ পর্বের কয়েক পর্ব আগে এক চেলা বদি (আব্দুল কাদের) ভয় ভীতির কারণে রাজসাক্ষী হয়ে বাকের ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়। দর্শক হতাশ, তারা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয়ে যাবে। বাকের ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ায় রাস্তায় গণপিটুনির শিকার হন আব্দুল কাদের! অল্পের জন্য তিনি প্রাণে রক্ষা পান। বহু দিন তাকে পুলিশি নিরাপত্তায় চলতে হয়েছে। ঢাকার রাস্তায় মিছিল বেরুলো, ‘বাকের ভাইয়ের ফাঁসি রায়, মানি না মানবো না!’ ‘বাকের ভাইয়ের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে!’

রাত ৮টা ৪৫ মিনিট। সারাদেশের মানুষ দেখছে ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের পর্দায়। এর আগে রমনা থানায় নিরাপত্তা চাইতে হয়েছিল নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ এবং এর প্রযোজককেও। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হুমায়ুন আহমেদের নিরপত্তা জোরদার করে। খারাপ কিছুর আশংকায় তাকে গোপনে সরিয়ে নেয়া হয় অন্য বাসায়। শেষ পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি হয়ে যায় বাকের ভাইয়ের। সারাদেশে শোকের মাতম উঠে। দর্শক হামলা চালায় হুমায়ুন আহমেদের বাড়িতে। তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে রীতিমতো গরু জবাই করে বাকের ভাইয়ের কুলখানি করা হয়। এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল!

কালজয়ী নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’ নিয়ে এই ঘটনাগুলো মনে আছে নিশ্চয়ই। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের রচনা ও বরকত উল্লাহর প্রযোজনায় নাটকটি প্রচার হয় ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত নাটকের প্রতিটি চরিত্র দর্শক হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। বিশেষ করে মানুষের মুখে মুখে এখনো ঘুরে ফেরে বাকের ভাই, বদি ও মজনুর নাম। তবে এত সব কাণ্ড ঘটে যায় বাকের ভাইয়ের জন্যই!

বাকের ভাইয়ের ফাঁসির দিনে দেশের অবস্থার কথা বর্ণনা করে বদি ভাই খ্যাত অভিনেতা আব্দুল কাদের বলেন, চারদিকে যখন বাকের ভাইয়ের পক্ষে মিছিল স্লোগান, তখন আমরা সবাই একসঙ্গে বসে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। আমরা হুমায়ূন ভাইকে বলতাম যেন বদির ফাঁসি না হয়। কিন্তু হুমায়ূন ভাই দুষ্টুমি করতেন। তিনি ভাষণের মত বলতেন, বাকেরের ফাঁসি কেউ আটকাতে পারবে না। বিশ্বাস করবেন না, যেদিন বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয়, সেদিন সন্ধ্যার পর থেকেই সারা শহর রীতিমত শ্মশান হয়ে যায়। সবাই টিভির সামনে বসে যায় এদিন। দেশে একেবারে কারফিউয়ের মতো অবস্থা ছিল।

যে মানুষটা একটা কল্পিত চরিত্র দিয়ে লাখ-লাখ দর্শকের হৃদয়ে ভালোবাসার আসন গড়ে নিয়েছিলেন, তার নাম আসাদুজ্জামান নূর। আশির দশকের সেই সময়টায় নাকি বাকের ভাইয়ের জনপ্রিয়তার নিচে তার নামটাই হারিয়ে যেতে বসেছিল! এরপরেও তিনি নাটক করেছেন, সিনেমায় অভিনয় করেছেন, বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হয়েছেন। অথচ লোকে এখনো আসাদুজ্জামান নূরের নাম শুনলে ‘বাকের ভাই’কে একবার স্মরণ করেই, যেন দুটো সমার্থক শব্দ!

‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের সম্প্রচার শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালে। শুরু থেকেই দর্শকপ্রিয়তার তুঙ্গে চলে এসেছিল সেটি। নাটক যত এগিয়ে যেতে থাকলো, দর্শকেরা ততই পছন্দ করে ফেললো কেন্দ্রীয় চরিত্র বাকের ভাইকে। আসাদুজ্জামান নূর অভিনীত এই চরিত্রটা সম্ভবত বাংলাদেশের টিভি ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র। বাংলা সিনেমাতেও কি বাকের ভাইকে টেক্কা দেয়ার মতো শক্তিশালী কোনো চরিত্র তৈরি হয়েছে? আমার অন্তত জানা নেই।