ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মাসহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া? কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা
  • সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ওরা গ্যাং কালচার থেকে গ্যাংস্টার, নিয়ন্ত্রণ করছে ভিন্ন জগৎ!

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২০  

গ্যাং কালচার থেকে গ্যাংস্টার। রাজনৈতিক মোড়কের আড়ালে তারা গড়ে তুলেছেন ভিন্ন জগৎ। হত্যাকান্ড, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে তারা। নিজেদের মধ্যে হিরোইজম ভাবকে টিকিয়ে রাখতে কি না করছে তারা। আর তার সবই হচ্ছে বড় ভাইদের ছত্রছায়ায়।

র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালীন সময়ে মূলত প্রকোপ আকার ধারণ করেছে কিশোর গ্যাং। এখন পর্যন্ত র্যাবের অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১৯টি। আর চলতি বছরেই র্যাব কতৃক গ্রেফতার হয়েছে ২৭২ জন। ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে সক্রিয় গ্যাং রয়েছে ২৩টি। স্থানীয় বড় ভাইদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসব কিশোর গ্যাং।

ডেইলি বাংলাদেশের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরায় শফিকুল হাসান ওরফে সানী ও শাকিল হোসেন ওরফে ড্যান্সার শাকিল নামে আপন দুই ভাই মিলে গড়ে তুলেছে এক অপরাধের মহারাজ্য। বড়ভাই ড্যান্সার শাকিল মাদক ব্যবসা আর ছোট ভাই সানী স্থানীয় ছাত্রনেতা। রাজনৈতিক মোড়কের আড়ালে তারা গড়ে তুলেছেন ভিন্ন এক জগৎ। সানী গড়ে তুলেছে শতাধিক সদস্যের এক কিশোর গ্যাং। দুই ভাইয়ের নামে রাজধানীর দুটি থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৬টি মামলার সন্ধান মিলেছে। এরপরও ধরাছোঁয়ার বাইরে তারা।

রাজধানীর দক্ষিণখানের গোয়ালটেকের চিশতিয়া মার্কেটের পাশেই এই দুই ভাইয়ের নিজস্ব বাড়ি। সেখানেই থাকেন তারা। নানার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে তারা বাড়িটির জায়গা পেয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী। তবে দুই ভাই বাড়িটি বানিয়েছেন অবৈধ টাকায়।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাহপুর পলওয়েল মার্কেটের সামনে, দিয়াবাড়ি বিআরটিএ অফিসের সামনে, উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর, ১১ নম্বর সেক্টর ও ৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় হত্যাকাণ্ড, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে কিশোর গ্যাং।

সম্প্রতি গত ২৭ আগস্ট রাতে উত্তরখান এলাকায় কলেজছাত্র মো. সোহাগকে হত্যা করে সানীর কিলার গ্রুপ। এরপর থেকে সানী ও ড্যান্সার শাকিল আত্নগোপনে যায়।

স্থানীয়রা বলছেন, দামি ব্র্যান্ডের পোশাক, জুতা, দামি মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে চলাফেরা সানীর। তার সঙ্গে থাকত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মোটরসাইকেল বহর। তার কিশোর গ্যাং গ্রুপের নাম ‘সানী গ্রুপ’। কেউ কেউ এটিকে ‘রগকাটা গ্রুপ’ হিসেবেও চেনে। উত্তরা ও আব্দুল্লাহপুরের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করেন তারা। তবে ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না। তার কথার অবাধ্য হওয়ায় অন্তত তিনটি খুনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানান তারা।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বড় ভাইয়ের মাদক ব্যবসায় সহযোগীতা করে সানী। সানীর নামে ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। চলতি বছরের ৩ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা হয় তার নামে।
সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট উত্তরখানে কলেজছাত্র সোহাগ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সানীর নামে উত্তরখান থানায় মামলা হয়। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও খুনোখুনির ঘটনায় মামলা হলেও অজানা কারণে কখনো গ্রেফতার হননি সানী।

সরেজমিনে জানা যায়, সানীর বড়ভাই ড্যান্সার শাকিল উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। আব্দুল্লাহপুর কোর্টবাড়ী ও উত্তরা পাবলিক কলেজের পাশের রেললাইন এলাকায় তার মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেট সক্রিয়। এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খুনাখুনিতেও জড়িয়েছেন ড্যান্সার শাকিল।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ জুলাই দক্ষিণখান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে শাকিলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টম্বর উত্তরা পূর্ব থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৮ সালের ১৪ জানুয়ারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের হয়। মাদক মামলায় গ্রেফতার হলেও কিছুদিন পরই আবার জামিনে বেরিয়ে আসেন ড্যান্সার শাকিল। জামিনে বেরিয়ে ফের মাদক ব্যবসা শুরু করেন।
সানী ও ড্যান্সার শাকিল দুই ভাই পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ ডেইলি বাংলাদেশকে জানান, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় করোনাকালীন সময়ে প্রকোপ আকার ধারণ করেছে কিশোর গ্যাং। সম্প্রতি  স্থানীয় বড় ভাইদের ছত্রছায়ায় এরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই গ্যাংগুলো মূলত পাড়া-মহল্লা কেন্দ্রিক ক্ষমতা বিস্তার করে থাকে। 

কিশোর অপরাধ বন্ধে পারিবারিক বন্ধন ও শিশু কিশোরদের লালনপালন করা জরুরি বলে মনে করেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

স্থানীয় বড় ভাইদের প্রসঙ্গে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, র‌্যাব মূলত যেকোনো জায়গায় যেকোনো পরিস্থিতিতে ফৌজদারি অপরাধ বা ফৌজদারি আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই র‌্যাব সেখানে ব্যবস্থা নেয়। তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আমি নতুন এসেছি। এ ব্যাপারে জেনে তার পর আপনাকে জানাতে পারব।