ব্রেকিং:
কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত
  • শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

তারেকের আশ্বাসেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০১৯  

বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের আশ্বাসেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে তত্কালীন প্রশাসনের প্রশাসনিক সহায়তাও পেয়েছিল জঙ্গিরা।

হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগীরা গ্রেনেড হামলার কিছুদিন আগে বনানীর হাওয়া ভবনে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। তখন সেখানে উপস্থিত তত্কালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তত্কালীন মন্ত্রী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সেনা গোয়েন্দা সংস্থার তত্কালীন পরিচালক সিআইবি মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইয়ের তত্কালীন ডিজি ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুর রহিমের সঙ্গে ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করেন। বৈঠকে তত্কালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করার সহযোগিতা চায় জঙ্গিরা। তারেক রহমান উপস্থিত সবার সামনে জঙ্গিদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আর ওই হামলার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করে তার দলকে নেতৃত্বশূন্য করা। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা দুটি মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ সব বিষয় তুলে ধরেছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ শাহেদ নূর উদ্দিন।

মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন, জব্দকৃত আলামত, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যালোচনা করে রায়ে বলা হয়, গ্রেনেড হামলা চালানোর হীনউদ্দেশ্য হচ্ছে জঙ্গি সংগঠন হুজি, হিজবুল মুজাহিদীন, লস্কর-ই-তৈয়বা, তেহরেকি জেহাদী ইসলাম, রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের জঙ্গি কর্মকাণ্ড এদেশে নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়া; স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করে দেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। এ ছাড়া অবস্থানগত ও ক্ষমতাগত লাভের উদ্দেশেও এখানে কাজ করেছে বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়।

রায়ে বলা হয়, এ উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০০২ সালের জুলাই মাসে মোহাম্মদপুর সুপার মার্কেটের কাছে ও ২০০৩ সালে একই এলাকার সাত গম্বুজ মসজিদে, ২০০৪ সালের প্রথম ও আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে হাওয়া ভবনে, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর সরকারি বাসভবন ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সভা করে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো আসামিরা। এসব সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামি বাবর, রেজ্জাকুল, রহিম, পিন্টু, তারেক, হারিছ, কায়কোবাদের কাছ থেকে জঙ্গিরা প্রশাসনিক সুবিধা নেয়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকায় হামলার কাজটি করা তাদের জন্য সহজ হবে ভেবে ২০০৪ সালের প্রথম দিকে এমপি কায়কোবাদের সহযোগিতায় হাওয়া ভবনে গিয়ে তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে পরিচিত হন জঙ্গিরা।

রায়ে বলা হয়, রেজ্জাকুল ও রহিম ঘটনার দিন গ্রেনেড হামলার বিষয় অবগত থেকেও গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকেন। এভাবে নীরব থেকে প্রশাসনিক সহায়তায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান। শতাধিক নেতা-কর্মী, সমর্থক, আইনজীবী ও সাংবাদিক আহত হন। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।

রায়ে বলা হয়, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মুফতি হান্নান বলেছেন নির্বিঘ্নে গ্রেনেড হামলা চালানোর জন্য তারা প্রশাসনিক সহায়তা পেয়েছেন। আর ওই গ্রেনেড সরবরাহকারী হিসেবে আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনের নাম তত্কালীন আইজিপি খোদাবক্স চৌধুরীর সময় করা তদন্তে প্রকাশ পায়। কিন্তু উনি তাজউদ্দিনকে এই মামলায় গ্রেপ্তারে কোনো পদক্ষেপ নেননি। ফলে এটা স্পষ্টত যে জঙ্গিরা প্রশাসনিক সহযোগিতায় এ হামলা পরিচালনা করেন। হামলাকারীদের বিষয়ে জানা থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের রক্ষা করতে প্রলোভন, ভয়-ভীতি দেখিয়ে অন্য লোকের উপর দায় চাপিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার লক্ষ্যে জজ মিয়া, আবুল হাশেম রানা ও শরিফুল ইসলামদের দ্বারা মিথ্যা ও বানোয়াট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও ভুল রেকর্ড লিপিবদ্ধ করান। একইসঙ্গে অপরাধীদের রক্ষায় ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও গ্রেনেড সরবরাহকারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিদেশে পাঠিয়ে দেন।

প্রসঙ্গত এ দুটি মামলায় গত ১০ অক্টোবর আসামি বাবর ও পিন্টুসহ ১৯ জনকে ‘ডাবল’ মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডিতদের মধ্যে অধিকাংশই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতা। একই অপরাধে তারেক, হারিছসহ ১৯ জনকে ‘ডাবল’ যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। দুটি মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় গত মাসে প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনাল।