ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মাসহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া? কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা
  • সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালীর অবদান

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২০  

‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ’ হাজার বছরের বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক অসাধারণ গৌরব ও গর্বের অবিস্মরণীয় ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালীবাসীর অনন্য ভূমিকা ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদান ইতিহাসের পাতায় বীরগাথা অধ্যায় হিসেবে চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ২৬ মার্চ নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক সার্কিট হাউজে সর্বদলীয় এবং গন্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশের কথা উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের কাছে উপস্থাপন করেন। সভায় সকলেই যার যা কিছু আছে তা নিয়ে সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার শপথ নেন।
২৬ মার্চ টাউন হলে মরহূম রফিক উল্যাহ কমান্ডারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, আনসার, পুলিশ, ইপিআর, আওয়ামিলীগ, ছাত্রলীগের সদস্যবৃন্দ একত্রিত হয়ে একটি দল গঠন করা হয়। 
যার মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য আহবান জানানো হয়। আহবানে সারা দিয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ পুর্ণাঙ্গভাবে সহযোগিতা করেন। মাইজদী পুলিশ লাইন (বর্তমানে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার) ম্যাগজিন থেকে ধার করা অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধংদেহী তরুন ছাত্র, শ্রমিক, বৃদ্ধদের সবাইকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়। 
এরই মধ্যে মুক্তিবাহিনী গঠন করার জন্য এম, পি নুরুল হক মিয়ার আহবানে জেলা প্রশাসকের পরামর্শক্রমে জেলা আর্মড সার্ভিসেস বোর্ডের সেক্রেটারী সফিকুর রহমানের স্বাক্ষরে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ও ছুটিতে আসা সদস্যদের আহবান করা হয় প্রশিক্ষণক্যাম্পে রিপোর্ট করার জন্য।
প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিরোধ যুদ্ধ ছিল বিক্ষিপ্ত ও আঞ্চলিক ভিত্তিতে। অবশেষে ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের অসহনীয় সরকার গঠিত হলে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধেও নুতন অধ্যায়ের সুচনা করে। 
এ সময় ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় শহরাঞ্চল হানাদার বাহিনীর কবলিত হলেও বৃহত্তর নোয়াখালীর সমগ্র এলাকা ছিল পাক হানাদার মুক্ত। এখানে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত বাংদেশের পতাকা উড়েছিল এবং এখানকার প্রশাসন নোয়াখালীর কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
ইতোমধ্যে পাকসেনাদের আগমন পথে বাধার সৃষিটর জন্য লাকসাম, নীলকমল, চর জব্বর, শুভপুর প্রভৃতি স্থানে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। সুবেদার লুৎফর রহমান ও সুবেদার সামছুল হকের নেতৃত্বে ৪ এপ্রিল লাকসামের উত্তরে বাঘমারায় প্রথম সংঘর্ষ হয়। 
এরপর ১০ এপ্রিল লাকসামে সম্মুখ যুদ্ধে মাত্র ৭০জন মুক্তিযোদ্ধা দিয়ে পরিচালিত যুদ্ধে ২৬জন হানাদার সৈন্য নিহত ও ৬০ জনকে আহত করা হয়। ২০ এপ্রিল নাথের পেটুয়াতে, ২১ এপ্রিল সোনাইমুড়ী রেল স্টেশনের আউটার সিগনালের কাছে, ১ মে বগাদিয়ায় নায়েক সিরাজের নেতৃত্বে সম্মুখ যুদ্ধে ১৫/২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। সে যুদ্ধে ২জন বীর মুক্তি যোদ্ধা শহীদ হন।
পরবর্তীতে, শত্রু বাহিনীকে মোকাবেলা করার সুবিধার্থে বিলোনিয়াসহ নোয়াখালীকে ২নং সেক্টরের অধীনে আনা হয় এবং ৫টি জোনে ভাগ করা হয়। ২নং সেক্টরের প্রধান ছিলেন মেজর খালেদ মোশারেফ (এপ্রিল-সেপ্টেমবর) এবং মেজর এটিএম হায়দার (সেপ্টেমবর-ডিসেমবর) এ বাহিনী ফোর্স নামে পরিচিত ছিল।
অবশেষে এফএফ ও বিএলএফসহ সম্মিলিত বাহিনীর বীর যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত আত্রুমণে পাক হানাদার ও তাদের দোসর বাহিনীর পরাজয় ও পশ্চাদগমনের মধ্য দিয়ে নোয়াখালী পাকহানাদার মুক্ত হয়। এবং গ্রামগঞ্জ থেকে অজস্র বিজয় মিছিল এসে নোয়াখালী টাউনকে মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে তোলে। অবশেষে ৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ আমাদের স্বাধীনতার ইতিাহাসে রচিত হয় নোয়াখালী মুক্তির অবিস্মরনীয় ইতিহাস।