ব্রেকিং:
নিজ্জর হত্যাকাণ্ড: কানাডায় আরো একজন ভারতীয় গ্রেফতার ‘দেশে তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দামও’ হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক আজ বিশ্ব মা দিবস জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল ঋণ শোধের সক্ষমতা অর্জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নোয়াখালীতে হেরে গেলেন ওবায়দুল কাদের পতেঙ্গায় আগুন ধরে প্রশিক্ষণ বিমান কর্ণফুলীতে, ২ পাইলট আহত লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টিতে ভোটার শূন্য কেন্দ্র সুবর্ণচরে এক বুথে ঘণ্টায় পড়ল ১ ভোট ছেলের বিরুদ্ধে ভোট করলে ইউনিয়নে উন্নয়ন বন্ধ করার হুমকি এমপিপত্নীর নোয়াখালীতে ভোটের আগের রাতে টাকা বিতরণের অভিযোগ আওয়ামী লীগে স্বজনদের নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসী নিহত উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি
  • রোববার ১২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৯ ১৪৩১

  • || ০৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

জেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে কুমিল্লায় আ.লীগ নেতাদের দৌড়ঝাঁপ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২  

কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড এতদিন অনেকটা নিরবে হলেও তফসিল ঘোষণার পর থেকেই তাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের এখন ভোটারদের কাছে ছুটতে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। প্রায় সকল প্রার্থীর ব্যস্ততা এখন কেন্দ্রের দিকে।

দেশের অন্যতম বৃহৎ জেলা কুমিল্লার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেশ কয়েকজনের ভাষ্য- বর্তমান সরকার টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে। আসন্ন এ নির্বাচনে যেসব জনপ্রতিনিধি ভোটার, তাদের প্রায় সকলেই আওয়ামী লীগের লোকজন। যার কারণে দলীয় সমর্থন পেলে এবং বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলে চেয়ারম্যান হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এজন্য দলের মনোনয়ন পাওয়াটাই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন তারা।

গত ২৩ অগাস্ট কুমিল্লাসহ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৭ অক্টোবর এই নির্বাচনের ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে।

তফসিল ঘোষণার পরপরই আলোচনা শুরু হয়েছে- কে পাবেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন আর কে হচ্ছেন কুমিল্লা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তবে এ নির্বাচনে বিএনপিসহ অন্য কোনো দলের কোনো তৎপরতা নেই কুমিল্লায়।

কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন-কুমিল্লা জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ওমর ফারুক, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখি, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ সম্পাদক ডা. এ বি এম খোরশেদ আলম।

এছাড়া আলোচনায় আছেন- কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম ও একই কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. আলী আকবরসহ আরও কয়েকজন।

জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে কুমিল্লা সদরসহ দক্ষিণের দশটি উপজেলা নিয়ে আওয়ামী লীগের কুমিল্লা দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা। আর উত্তরের সাতটি উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা উত্তর সাংগঠনিক জেলা।

জাহাঙ্গীর আলম সরকার ছাড়া বাকি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাড়ি পড়েছে কুমিল্লা দক্ষিণে। আবার উত্তরে জাহাঙ্গীর আলম সরকার ছাড়া অন্য কেউ এখনো আলোচনায়ও আসেননি। এতে কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবেন জাহাঙ্গীর।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে ওমর ফারুককে কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আবু তাহের। তাদের দুজনই কুমিল্লা দক্ষিণের।

গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপনকে ৪৬ ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হন আবু তাহের। এবার নির্বাচনে মনোনয়ন চাইবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বপন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক মো. আবু তাহের বলেন, “আমি বিগত সময়ে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। কোনো বিতর্কে নিজেকে জড়াইনি। তাই আমি আশাবাদী, এবারও আওয়ামী লীগ আমাকেই মূল্যায়ন করবে।”

জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ওমর ফারুক বলেন, “পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনকালে প্রতিবছরই কাজের জন্য সারাদেশের মধ্যে প্রথম হয়েছি। গত নির্বাচনে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম, তবে নেত্রীর সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। আশা করছি, এবার জননেত্রী শেখ হাসিনা ও দল আমাকেই মূল্যায়ন করবে।”

কুমিল্লার বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আফজল খানের ছেলে এবং দলের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, “ আমি সদ্য সমাপ্ত সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মাঠে ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেত্রীর সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।

নেত্রী আমাদের অভিভাবক। আমি শতভাগ আশাবাদী রাজনীতিতে আমার পরিবারের ত্যাগ ও অবদানের কথা বিবেচনা করে নেত্রী এবার আমাকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেবেন।”

এ বি এম খোরশেদ আলম বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৪ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। ২০১৬ সালে কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলাম। তবে দলের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করি।

“এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মনোনয়ন চাইবো। আমি সেই লক্ষ্যে কাজ করছি এবং ভোটারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।

“আশা করছি আমার রাজনৈতিক ত্যাগ এবং পরিশ্রম বিবেচনায় নিয়ে নেত্রী ও দল আমাকে মূল্যায়ন করবেন।” যোগ করেন আওয়ামী লীগের এ নেতা।

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য স্বাধীনতা যুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখি ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম জানান, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৬৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৪৯ জন এবং নারী ৬২৭ জন। এদের ভোটে একজন চেয়ারম্যান ও জেলার ১৭টি উপজেলায় সাধারণ ওয়ার্ডে ১৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৬ জন নির্বাচিত হবেন।

তিনি বলেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক। রিটার্নিং অফিসারদের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে ১৮ সেপ্টেম্বর।

মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে আপিল করা যাবে ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি হবে ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৬ সেপ্টেম্বর।