ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি, আ.লীগ নেতাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা নোয়াখালীর চরজব্বার থানার ওসি প্রত্যাহার নোবিপ্রবিতে চালু হলো প্রথমবারের মতো পিএইচডি প্রোগ্রাম তিন রাত শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মাসহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া? কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী
  • বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে বিদায় নিচ্ছেন এক মহানায়ক

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৫ জুলাই ২০১৯  

বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে বিদায় নিচ্ছেন এক ক্রিকেট মহানায়ক। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে দ্বাদশ বিশ্বকাপের অভিযান শেষ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে বিদায় নেবেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের মহানায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। 
বিদায়ের পর্বটা ভালো হলো না বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফীর। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে পা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি বাংলাদেশের। বাজে ফিল্ডিং, বৃষ্টিতে পয়েন্ট নষ্ট, জয়ের কাছে গিয়েও হেরে যাওয়া- দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছুই নয়। তাই তো সংবাদ সম্মেলনে প্রায়ই মাশরাফী বলে থাকেন, ‘ভাগ্য অনেক বড় ফ্যাক্টর। আপনি যতই ভাল খেলুন না কেন, ভাগ্যের সহায় থাকতে হয়।’ 

দুর্ভাগ্য মাশরাফি ও বাংলাদেশের। সেমিফাইনালের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে তো অন্তত ভাগ্যের সহায় মনে প্রাণে চাইতেন পারেন মাশরাফী। কারন এটাই বাংলাদেশ অধিনায়কের বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচ।


 
বয়স-৩৬ ছুঁই-ছুঁই। আগামী বিশ্বকাপ ২০২৩ সালে। সেখানে মাশরাফীর খেলা দুরূহ। সেটি নিজেও জানেন মাশরাফী। তাই তো দেশ ছাড়ার আগেও ইংল্যান্ডে এসে বলেছেন- এবারের আসরই আমার শেষ বিশ্বকাপ। মাশরাফীর শেষ বিশ্বকাপটা রঙিন হল না। তবে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচটা রঙিন করতে মুখিয়ে থাকবেন তিনি।

তবে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না মাশরাফীর। দুর্দান্ত ফর্ম নিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৭ ইনিংসে বল করে মাত্র ১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৪৯ ওভার বল করে ৬ দশমিক ৪২ ইকোনমি রেটে ৩১৫ রান দিয়েছেন তিনি। এমন পারফরমেন্সে মাশরাফী নিজেও হতাশ। 

মাশরাফী মন খারাপ নিয়েই বলেছিলেন, নিজেরও খুব খারাপ লাগছে। খারাপ লাগছে ভক্তদেরও। তাই তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশরাফীকে নিয়ে হাহাকার তাদের। তবে যারা সমালোচনাতে পটু, তারা ঠিকই তাদের কাজটি করেছেন। মাশরাফীকে নিয়ে সমালোচনা করতে ভুল করেননি। তারা হয়তো ভুলে গেছেন, পায়ে সাতটি অস্ত্রোপচার নিয়ে এখনো ক্রিকেট খেলে যাচ্ছেন তিনি। অধিনায়কত্ব, বোলিং দিয়ে দলকে সেরা অবস্থানে আনতে বড় ভূমিকা ছিল গত ৩০ ডিসেম্বর এমপি নির্বাচিত হওয়া মাশরাফীর।


 
২০১৪ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট যখন টালমাটাল অবস্থা তখনই দলের দায়িত্ব নেন মাশরাফী। বিশ্বকাপের আগে দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক হন তিনি। দায়িত্ব নিয়ে দলকে পাল্টে দেন মাশরাফী। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজের সবগুলোতেই জয় পায় বাংলাদেশ। এই সাফল্য নিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপের এগারতম আসরে খেলতে নামে টাইগাররা।

সে আসরে বড় কোন লক্ষ ছিল না বাংলাদেশের। কিন্তু মাশরাফীর নেতৃত্বে বিশ্বকাপের মঞ্চে সেরা সাফল্যই পায় বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথমবারের মত খেলে টাইগাররা। শেষ আট থেকে বিদায় নিলেও, থেমে যায়নি বাংলাদেশের পথচলা। মাশরাফীর নেতৃত্বে এরপর ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলকে নাকানিচুবানি দেয় বাংলাদেশ। এইসব সাফল্যে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাংকিংয়ে সাত নম্বরে উঠে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সরাসরি খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। সেখানে চমক দেখায় টাইগাররা। দলের খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত পারফরমেন্স, মাশরাফীর বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্ব বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে তুলে। কিন্তু সেখানেই থেমে যায়নি বাংলাদেশের পথচলা।

বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সাফল্যে বাংলাদেশকে আরো বড় স্বপ্ন দেখান মাশরাফী। দ্বাদশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার পণ করে ইংল্যান্ডে আসেন তিনি। কিন্তু ওই যে ভাগ্য সহায় হয়নি দলের। ভাগ্য সহায় হয়নি মাশরাফীর। নয়তো বাংলাদেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বিশ্বকাপের মঞ্চে মাত্র ১টি উইকেট পাবেন, বেমানানই বটে।


 
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথম খেলতে নামেন মাশরাফী। ৯ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে প্রধান ভূমিকা ছিল মাশরাফীর। ৯ দশমিক ৩ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। হন ম্যাচসেরা।

২০০৭ সালের বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলা মাশরাফী, ২০১১ সালের বিশ্বকাপ মিস করেন। দেশের মাটিতে ওই বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণার এক মাস আগে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় আবারো হাটুঁর ইনজুরিতে পড়েন তিনি। তাই মাশরাফীকে ছাড়াই দেশের মাটিতেই বিশ্বকাপ খেলতে হয় টাইগারদের।

তবে অধিনায়ক হিসেবে ২০১৫ বিশ্বকাপ খেলেছেন মাশরাফী। ৫ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৭ উইকেট নিয়েছেন দলের নেতা। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর আজ পর্যন্ত ৭২ ম্যাচে ৭৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়বার অধিনায়ক হওয়ার পর নেতা হিসেবেও বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন বড় বড় সাফল্য। বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের সেরা অধিনায়ক বনে যান মাশরাফী। ৮৪ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৪৭টি জয় পেয়েছেন তিনি, হার ৩৫টি।

পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশের ক্রিকেটের মহানায়কের ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখার আভাস দিলেন টাইগার কোচ স্টিভ রোডসও, ‘মাশরাফীর শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচের বাস্তবতা বুঝেই ক্রিকেটে মূল মনোযোগ দলের। আশা করি, ছেলেরা তার শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচে যথোপযুক্ত সম্মান দেবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভালো ফল করা।’