ব্রেকিং:
নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি, আ.লীগ নেতাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা নোয়াখালীর চরজব্বার থানার ওসি প্রত্যাহার নোবিপ্রবিতে চালু হলো প্রথমবারের মতো পিএইচডি প্রোগ্রাম তিন রাত শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মাসহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া? কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মামুনুল হক শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়? সরাসরি মুসলিমদের নিশানা বানিয়ে ভোটের প্রচারে মোদি দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী
  • বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জিনোম উন্মোচনে করোনার টিকা নির্বাচন ও গতিপ্রকৃতি জানা যাবে

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২০  

বাংলাদেশি বাবা-মেয়ে ডাক্তার যুগল সফলভাবে করোনা ভাইরাস জিনোম সিকোয়েন্স উদ্ঘাটন করেছেন। এর মধ্য দিয়ে করোনার বিরুদ্ধ লড়াইয়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছেন। বাবা চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. সমীর কুমার সাহা ও মেয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে চাইল্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক ডা. সেঁজুতি সাহা। মেয়ে ডা. সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) আট সদস্যের একটি গবেষক দল জিনোম সিকোয়েন্সের ম্যাপিংয়ের কাজ করেছেন। এই দলে বাবা ডা. সমীর কুমার সাহাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আছেন। করোনা ভাইরাসের জিনোম উন্মোচনের ফলে ভাইরাসটির গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে পারবেন গবেষকরা। পাশাপাশি কোনো ধরনের প্রতিষেধক দেশের করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করবে অথবা দেশে প্রতিষেধক তৈরির সম্ভাবনাকেও সহায়তা করবে।

গতকাল বুধবার টেলিফোনে করোনা ভাইরাসের জিন-নকশা উন্মোচন জিনোম সিকোয়েন্সিং নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. সমীর কুমার সাহা। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের নকশা উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্সিং) দেশের জন্য বড় মাইলফলক। জিনোম হলো জীবের জিনগত বৈশিষ্ট্যের বিন্যাস বা নকশা। বংশগতির সব বৈশিষ্ট্য এক বা একাধিক জিনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। ফলে এর গতিপ্রকৃতি বুঝতে পারা যাবে। কোত্থেকে এলো তা জানা যাবে। এরা সময়ে সময়ে পরিবর্তন হয়। পরিবর্তন হয়ে শক্তিশালী হতে পারে, যা আমাদের জন্য খুব খারাপও হতে পারে। আবার দুর্বলও হতে পারে এখান থেকেই আমরা বুঝতে পারব।

বিভিন্ন দেশ করোনার টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে ডা. সমীর বলেন, এই টিকা ব্যবহারের আগে আমরা বুঝতে পারব কোন টিকা আমাদের দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে।

বাংলাদেশে সংক্রমিত নতুন করোনা ভাইরাসের (সার্স সিওভি-২) জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের পর এর তথ্য-উপাত্ত গ্লোবাল জিনোম ডেটাবেজে (জিআইএসএআইডি) জমা দেওয়া হয়েছে।

এটি উন্মোচনের ফলে অহঙ্কার করার মতো একটা কাজ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেখানে আপলোড করা হয়েছে, সেখানে নাম দেওয়া হয়েছে করোনা ভাইরাস বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে বড় অহঙ্কার হচ্ছে এই কাজ বিদেশে নয়, বাংলাদেশেই হয়েছে।

সার্স ভাইরাসের ভয়াবহতা তুলে ধরে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ভাইরাস যখন আক্রমণ করেছিল, তখন সার্স আক্রান্ত মানুষের কবর দেওয়া অথবা সৎকার করা নিয়ে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু সার্স বেশি দিন টিকেনি।

গত মঙ্গলবার তাদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ঢাকার গবেষণাগারে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পুরো কাজ হয়েছে। জিনোম হলো প্রাণী বা উদ্ভিদের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের বিন্যাস বা নকশা। কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদের জিনোমে নিউক্লিওটাইডগুলো কীভাবে বিন্যস্ত আছে তার লিপিবদ্ধ করাকে বলে জিনোম সিকোয়েন্সিং। এই নকশার ওপরই নির্ভর করে ওই প্রাণী বা উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য।

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাধারণত ভাইরাসের সিকোয়েন্সিং করা কিছুটা দুঃসাধ্য। সেখানে নভেল করোনাভাইরাসের মতো একটি সংক্রমণশীল ভাইরাসের সিকোয়েন্সিং করা খুবই কঠিন। চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করে মেটাজিনোমিক সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজটি সম্পন্ন করেছে। আমরা আশা করছি, খুব শিগগির বাংলাদেশের আরও কিছু স্থানের নমুনা থেকে আরও কিছু ভাইরাসের সিকোয়েন্সিং করতে সক্ষম হব, যা আমাদের ভাইরাসটির উৎপত্তি, গতিপ্রকৃতি বুঝতে ও প্রতিরোধের উপায় খুঁজতে সহায়তা করবে। এ কাজে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আইইডিসিআর, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং চ্যান জুকারবার্গ বায়োহাব/ইনিশিয়েটিভ সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. সমীর কুমার সাহা বলেন, ফলে আমরা জানতে পারব, আমাদের এখানে ভাইরাসটি মোকাবেলায় কোন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। এখানে বড় বিষয় হলো, বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশে বসে সিকোয়েন্সিংটা করেছে। তার মানে হলোÑ বাংলাদেশে এই ভাইরাসের আরও সিকোয়েন্সিং করা যাবে। আমরা হয়তো আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে আরও অনেক সিকোয়েন্সিং করে আপনাদের বলতে পারব। আমরা যখন আরও সিকোয়েন্সিং করতে পারব তখন বুঝতে পারব, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন বা কোনো ওষুধ কতটা কাজ করবে।

এখানে যে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছে, তার সঙ্গে রাশিয়া ও সৌদি আরবের ভাইরাসের মিল পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি