ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মৃত ব্যক্তির লাশ রেখে পালালো স্বজনরা, দাফন করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২০  

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত সাহাব উদ্দিন (৫৫) নামে এক ব্যক্তির লাশ রেখে পালিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা ও স্বজনরা। ৩১ মে রোববার দিবাগত রাত ৮টার দিকে মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভাদাদিয়া গ্রামের হোসেন ডিলারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রাত ২টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যানে মোঃ রবিউজ্জামান বাবুর উদ্যোগে ইসলামী আন্দোলনের করোনা রোগে দাফন টিমের লোকজন মৃত ব্যক্তির জানাজা ও দাফন কার্যক্রম সমাপ্ত করেন।

এলাকবাসী, ইউপি চেয়ারম্যান ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, হোসেন ডিলার বাড়ির সাহাব উদ্দিন চট্রগ্রামের একটি পেট্রোল পাম্পের ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৭-৮ দিন পূর্বে জ্বর, কাশি, শ্বাস রোগে আক্রান্ত হন তিনি। ২৭মে তিনি করোনার উপসর্গ নিয়ে স্বপরিবারে চট্রগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন । দুই দিন তিনি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করালেও রোববার বিকালে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রদান করেন। রাত ৮টার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করলে তার বসত ঘরের দ্বিতল ভবনের একটি কক্ষে মরদেহ রেখে পরিবারের সদস্যরা ও বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। 

বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে মতিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু ইসলামী আন্দোলনের করোনা রোগে দাফন টিমের লোকদের খবর দেন। দাফন টিমের সদস্যদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পিপিই (পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট ও থানা থেকে মরদেহ রাখার জন্য একটি ব্যাগ সংগ্রহ করেন। রাত ১টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে তিনি সুনশান নিরবতার একটি ভুতের বাড়ি দেখতে পেয়ে নিজে অনেকটা ভয় পেয়ে যান। গ্রামের মসজিদে রাখা লাশ বহনের খাটিয়া ব্যবহার না করার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয়রা। কবর খোঁড়ার কোদালও দিচ্ছেননা কেউ। মরদেহ গোসল করানোর জন্য সমাজের পর্দাও না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সমাজপতিরা। নিজের টাকায় কাপনের কাপড় কিনে, সমাজপতি, গ্রামের লোকদের অনেকটা বুঝিয়ে খাট ও পর্দার কাপড় সংগ্রহ করেন তিনি। 

গ্রাম পুলিশ ও ইসলামী আন্দোলনের লোকদের সাথে নিয়ে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করেন চেয়ারম্যান। কবর খোঁড়া, জানাজা ও দাফন কাজে অংশ নেন চেয়ারম্যান সহ ৭জন ব্যক্তি। মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত সাহাব উদ্দিনকে শেষ বিদায় জানাতে পরিবারের সদস্য, স্বজন ও বাড়ির লোকজন কেউ এগিয়ে আসেনি। সবাই পালিয়ে গেছে। অথচ মৃত লোকটি পেট্রোল পাম্পে কর্মরত থেকে ৪ ভাইকে প্রবাসে পাঠিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনটি মেয়ে বিয়ে দিয়ে জামাইদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিজেও বহু অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। টাকা পয়সা রোজগার করে সারা জীবনের উপার্জন দিয়ে পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। অথচ মহান আল্লাহ তার এমন একটি মৃত্যু দিয়েছেন শেষ বিদায়ে কোন স্বজন তার পাশে নেই। এর চেয়ে হৃদয় বিদারক আর কি হতে পারে? 

মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি কোন শত্রুকেও যেন তিনি এমন মৃত্যু না দেন। এই মৃত্যু থেকে পৃথিবীর সব মানুষ শিক্ষা নেয়া উচিৎ। আসলে কার জন্য এই উপার্জন আর অর্থবিত্ত রেখে যাওয়া? করোনার এই মহামারিতে মানবতাও যেন আজ থমকে গেছে! সাহাব উদ্দিন মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৩মেয়ে, এক ছেলে ও ৪ভাই সহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। তিনি ভাদাদিয়া গ্রামের হোসেন ডিলারের বাড়ির মরহুম আনার আহম্মদের ছেলে। সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উৎফল দাস জানান, করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।