ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

মায়ের সম্পত্তি জোরপূর্বক লিখে নিল

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২০  

সম্পত্তি সংক্রান্ত ঘটনার জের ধরে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে বাংলাদেশে। সম্পত্তির লোভে আপন ভাই, মা-বাবাকে খুন করার ঘটনাও বহুল আলোচিত আছে আমাদের দেশে।

এবার সম্পত্তি লিখে নিয়ে গর্ভধারিনী মা তফুরা বেগম (৬৫)কে ঘর থেকে বের করে দের ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। সৌদি প্রবাসী সন্তান তৌহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী রুবি বেগমের পরামর্শে বাবার অবর্তমানে মায়ের নামের ১৪শতক জমি অপর দুই ভাই-বোনকে বঞ্চিত করে নিজের নামে লিখে নিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিরোধ মিমাংসায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলেও রুবি বেগমের দায়েরকৃত মামলায় অনেকেই হয়রানীর শিকার।

ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৭ইং সনে উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম করপাড়া গ্রামের হুমার বাড়িতে। ঘটনার পর থেকে মা গত দুই বছর থেকে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়ীতে বসবাস করে আসছে। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণসহ ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে জানানোর অপরাধে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতে ছেলের স্ত্রী রুবি বেগমের দায়ের করা মামলায় আসামী দেয়া হয়েছে বৃদ্ধা তফুরা বেগমসহ স্থানীয় এলাকাবাসীকে। মামলাটি জেলা গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছেন।

বুধবার (১৯ আগষ্ট) দুপুরে বৃদ্ধা তফুরা বেগম প্রতিদিনের সংবাদ প্রতিনিধিকে জানান, আমার স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১৫ বছর আগে। বহুকষ্টে সন্তানদের মুখে খাবার জুটিয়েছি। ছোট ছেলে তরকারী বিক্রি করে, মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি একই ইউনিয়নের ভাটিয়ালপুর গ্রামে।

২০১৭ইং সনে আমার বড় ছেলে তৌহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী রুবি বেগমের কথামতো আমার স্বামীর রেখে যাওয়া ১৪শতক সম্পত্তি তার নামে লিখে দেয়ার জন্য বহু চাপ প্রয়োগ করে আসলেও আমি রাজি হইনি। একদিন আমি ঘরে অসুস্থ্য থাকাবস্থায় আমাকে চিকিৎসার কথা বলে রামগঞ্জে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একটি দোতলা কক্ষে নিয়ে আমার কাছ থেকে সকল সম্পত্তি লিখে নিয়ে জোর করে টিপসই আদায় করে। আমি পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে ছোট ছেলে তছলিম ও মেয়েকে কিছু সম্পত্তি দেয়ার জন্য অনেক কাকুতি মিনতি করলে সে আমার কোন কথা শুনেনি। আমি এসময় অনেক কান্নাকাটি করি। ঘটনার পর থেকে আমার ছেলের স্ত্রী রুবি বেগমের কথামতো আমার ছেলে আমাকে বেশ কয়েকবার মারধর করে। কয়েকবার ঘর থেকেও বের করে দিয়েছে। আমি ঘর থেকে বের হয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়ীতে গিয়ে ঘরে এসে দেখি আমার রুমে তালা দেয়া। এদিকে ছেলের স্ত্রী-শাশুড়ি ও তার আত্মীয় স্বজন ঘরে বসবাস করছে।

আমার ছেলে তৌহিদুল ইসলাম সৌদি আরব চলে গেলে নতুন করে আমার উপর নেমে আসে অত্যাচার। ঘরের কোন কিছুতেই আমার কোন অধিকার থাকতো না। একদিন বাড়ীর গাছের পেপে পাশ্ববর্তি বাড়ীর একজনকে দেয়ার কারনে আমার ছেলের স্ত্রী রুবি বেগম আমাকে ঝাড়ু পেটা করে। আমাকে ঘর থেকে বের করার জন্য আমার প্রবাসী ছেলের কাছে আমার নামে দেয়া হয় নানান অভিযোগ।

ছেলের স্ত্রী’র এ ধরনের আচরনে বাধ্য হয়ে আমি বেশিরভাগ সময় আত্মীয়স্বজনদের বাড়ীতে চলে যেতাম। ১৫ আগষ্ট শনিবার সকালে আমি ছেলের বাড়ীতে এসে আমার হাতে লাগানো গাছ থেকে দুইটি পেপে বিক্রি করে ঔষধ ক্রয় করলে আমার ছেলের স্ত্রী রুবি বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ীর সব পেপে ও পেয়ারার গাছ কেটে সাবাড় করে দেয়। স্থানীয় এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানালে তারা ছেলের স্ত্রী রুবি বেগমের পরামর্শদাতা ও মামলার ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।

এ ব্যপারে বৃদ্ধা তফুরা বেগমের ছেলে তৌহিদুল ইসলামের মোবাইল ইমো নম্বরে কথা হলে তিনি জানান, বাড়ীতে কিছু হলেই আমার স্ত্রীর দোষ দেয় আমার মা। আসলে সব দোষ আমার মায়ের। আমার মায়ের কারনেই সংসারে অশান্তি লেগে আছে। এ পর্যন্ত ৫০ বার বৈঠক করেও কাউকে ম্যানেজ করতে পারিনি আমি। আমি রুজি করে গাড়ী-বাড়ী ও সম্পদ কিনেছি। সে সম্পদ আমি আমার নামে নিয়েছি তাতে তো কারো কিছু বলার নেই।

স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বলতে চাইলে, তিনি কথা রেকর্ড না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ভাই আমি মাপ চাই। আমি কোন কথা বলতে পারবো না। এ পরিবারের বিরোধ মিমাংসা করতে গিয়ে মামলার আসামী হয়েছি।

জেলা গোয়েন্দা সংস্থার ওসি একে ফজলুল হক জানান, আমি তো বিষয়টি জানি না। আর আমিতো এখানে যোগদান করেছি মাত্র এক সপ্তাহ। এর আগে হয়তো আদালতে মামলার প্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা সংস্থার কোন কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করতে পারে। তারপরও যদি এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাই অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।