ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জয় বাংলা, বাংলার জয়

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০১৯  

আনন্দে মাতোয়ারা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। দেশের নাগরিকগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অগ্রগতি ও উন্নয়নের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছে। তরুণ প্রজন্মসহ দেশের অন্যান্য নাগরিকদের এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে লেখা হয়েছে আওয়ামী লীগের বিজয়গাঁথা। পক্ষান্তরে এ বিজয় জনগণের।

বলা হচ্ছে, এ বিজয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হচ্ছে শেখ হাসিনার গণমুখী রাজনীতির ফল। এই নিরঙ্কুশ বিজয়ের ফলে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধির সুউচ্চ সোপানে অধিষ্ঠিত করার বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত যে সকল কাজ তাঁর সুযোগ্য কন্যা, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হাতে নিয়েছিলেন, তা সমাপ্ত করে এই দেশ ও জাতিকে অনন্য উচ্চতার শিখরে নিয়ে যাওয়ার পথের অন্যতম বাধা দূর হলো। সেই সঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে এবং লাখো শহীদের রক্তের ও লাখো মা-বোনের ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনা এই জাতি আবারও প্রমাণ করল যে, জাতির ক্রান্তিলগ্নে তারা সব সময়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যায় বিজয়ের পথে।

১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা ফিরে আসেন দেশের মাটিতে। সামরিক শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট নেতৃত্বহীন অওয়ামী লীগের হাল ধরেন শক্ত হাতে। সেই থেকে শেখ হাসিনা জাতি এবং দেশবিরোধী ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতার বাইরে থাকা বিদেশী এজেন্টদের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ধ্বংস প্রায় আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজিয়ে দলটিকে আবার দেশের সবচেয়ে শক্তিধর রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ৯১’ সালের নির্বাচনে তাই যুক্তিসঙ্গতভাবেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা ছিল সময়ের চাহিদা। কিন্তু সূক্ষ্ম কারচুপির মাধ্যমে, ভুয়া ভোটার লিস্ট ও অন্যান্য চক্রান্তের ফলে দেশ বিএনপির হাত ধরে ফিরে যায় পূর্বের জিয়া-এরশাদের পাকিস্তানী ধারায়।

ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচনে দীর্ঘ একুশ বছর পর জাতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফিরে পায় একাত্তরে ছিনিয়ে আনা বিজয়ের স্বাদ। ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধুকন্যা একুশ বছরের ক্লেদ, গ্লানি ও জঞ্জাল সরানোর কাজে হাত দেন। ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক পানি বণ্টন চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তিসহ অসংখ্য ঐতিহাসিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করেন, শুরু করেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া। দেশকে ক্ষুধামুক্ত করে উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্যের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পথে অনেক দূর এগিয়ে যান। বিদ্যুত, গ্যাস, শিল্প ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে দেখান সোনালি ভবিষ্যতের স্বপ্ন। কিন্তু ২০০১ সালের লতিফ-শাহাবুদ্দীন-সায়েদ গং পরিচালিত নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা হয় একাত্তরের পরাজিত শক্তির এ দেশীয় এজেন্টদের। দেশ আবার নিমজ্জিত হয় গভীর অমানিশায়। শেখ হাসিনার অর্জিত সাফল্যগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয় একে একে। দেশে আবার শুরু হয় ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মঙ্গার প্রকোপ, বিদ্যুত উৎপাদন চলে যায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে। সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে উত্থান ঘটে জঙ্গীবাদের। হাওয়া ভবন করে দুর্নীতিকে সর্বগ্রাসী করে তোলা হয়। দেশের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রাসহ অন্যান্য সম্পদ সরকার প্রধান ও তার পরিবারের প্রতিটি সফরে স্যুটকেসে করে পাচার করা হতে থাকে। বিদেশী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঘুষের বিনিময়ে অসম চুক্তি করে দেশকে আবার ‘তলাবিহীন ঝুড়িতে’ পরিণত করে একাত্তরের পরাজিত শক্তির পদলেহনে ব্যাপৃত হয় তাদের এ দেশীয় এজেন্টরা। ধারাবাহিকভাবে ঘটানো হতে থাকে হত্যা, নির্যাতন। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য ঘটানো হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ড, খুন করা হয় আইভি রহমান, আহসান উল্লাহ মাস্টার, কিবরিয়াসহ অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতাকে।
কিন্তু শেখ হাসিনা পরম করুণাময়ের অশেষ দয়ায় বেঁচে যান। সেই সঙ্গে বেঁচে থাকে দেশের কোটি মানুষের আশা। ২০০৮ সালের সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রতিফলিত হয় শেখ হাসিনার প্রকৃত জনপ্রিয়তা। তিন শ’ আসনের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ পায় ২৩০টি আসন, যার বিপরীতে বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট পায় ৩০টি আসন। এবার ক্ষমতায় আসীন হয়ে শেখ হাসিনা দেশকে নিয়ে যান এমন এক উচ্চতায়, যা ছিল এ জাতির জন্য কল্পনাতীত। দেশজ সম্পদ, মাথাপিছু আয়, শিল্প-কৃষি ও সেবা খাতের উন্নয়ন, উন্নয়নের গতিশীলতা, নারী উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা,অবকাঠামো, সড়ক ও পরিবহন, যুব উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, অবহেলিত জনপদ ও জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, সমুদ্র জয়, সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান, মানুষের দোরগোড়ায় প্রযুক্তি পৌঁছে দেয়া, মহাকাশ বিজয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ, সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন সর্বক্ষেত্রেই বাংলাদেশ হয়ে ওঠে বিশ্বের রোল মডেল। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ শুরু করে পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প। শুরু হয় মেট্রোরেল, পারণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পসহ বিশাল কর্মকাণ্ড। শেখ হাসিনা হয়ে ওঠেন উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও অধিকারের মানসকন্যা।

কিন্তু বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে পদদলিত করার ঘৃণ্য চক্রান্ত থেমে থাকেনি। বাংলার মানুষের অগ্রযাত্রা রোধ করার বহু যুগের এ ষড়যন্ত্র চলমান থাকবে, যত কাল এ দেশে বিচরণ করে যাবে অতি চেনা মীরজাফরের বংশধররা। বাংলার মানুষের সকল প্রকার অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ইতিহাসও তাই বিশাল। ব্রিটিশ ভারতে বাংলা ছিল ব্রিটিশবিরোধী অন্দোলনের সূতিকাগার। ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন, প্রীতিলতা, সুভাষ বোস, তিতুমীর, নজরুল এরা সবাই এই বাংলার মানুষ, এরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথিকৃৎ। এই বাংলাকে পদদলিত করে শোষণ করার প্রক্রিয়া চলেছে শতাব্দীর পর শতাব্দীব্যাপী। কিন্তু এ জাতি নতি স্বীকার করেনি কোন দিন। আর হাজার বছর পরে এই দেশে জন্ম নেয়া সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী শেখ মুজিবুর রহমান জাতিকে রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ মুক্ত ও স্বাধীন করেন। নিজের ব্যক্তিগত সব স্বার্থের অনেক উর্ধে উঠে, অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট বরণ করে এই বীর নেতা জাতিকে দিয়ে যান একটি স্বাধীন দেশ, লাল-সবুজ পতাকা আর সার্বভৌমত্ব। একাত্তরের ষোলোই ডিসেম্বর এই বাংলার কোটি মানুষের কাছে মাথা নিচু করে মাটিতে অস্ত্র রেখে বন্দীশালায় ঢুকতে হয় ছিয়ানব্বই হাজার হানাদার পাকিস্তানীকে। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে দেরি করেনি পাকিস্তানীরা ও তাদের দালালের দল। স্বাধীনতার স্থপতিকে তাঁর পরিবার পরিজনসহ, এমন কি শিশু সন্তানসহ নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানের এ দেশীয় দালালবাহিনী স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই। আর অওয়ামী লীগকে এবং দেশের স্বাধীনতাকে আবার ভূলুণ্ঠিত করার লক্ষ্যে জেলখানায় হত্যা করা হয় স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় নেতাদের। এটা ছিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গণহত্যার ধারাবাহিকতা। আর এধরণের সন্ত্রাস ও হত্যাকাণ্ডের পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে ঘটাতে থাকে পাকিস্তানী দালালবাহিনী এবং তাদের উত্তরসূরি নব্য পাকিস্তানী দালালরা। এরাই এ দেশে উৎপাদন করে যেতে থাকে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ, বিভেদ, অপরাজনীতি, ও ২১ আগস্টের মতো হত্যাকাণ্ডের। উদ্দেশ্য একটিই-এ দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।

শেখ হাসিনা জাতির আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখালেন সুখ ও সমৃদ্ধির। বাঙালী আবার বিশ্বলোকে আবির্ভূত হলো বিজয়ী বীরের জাতি হিসেবে। আজ এই দেশ কেবল সমগ্র তৃতীয় বিশ্বের নয় সমগ্র বিশ্বের উন্নয়নের আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, আদর্শিক, প্রতিটি খাতে, প্রতিটি বিভাগে এ দেশ শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। এ দেশের মানুষ জয় করেছে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে। শেখ হাসিনা এ দেশকে, এ জাতিকে নিয়ে যাবেন সকল প্রকার উন্নতির চরম শিখরের দিকে। আমাদের শিশুরা হবে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী ও সমৃদ্ধশালী জাতির অংশ।