ব্রেকিং:
১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করবে সরকার সংকট উত্তরণের বাজেট বিমানে মন্ত্রী-সচিবদের প্রথম শ্রেণিতে বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত পিপিপি’র পাইপলাইনে নতুন ১৩ মেগা প্রকল্প সরকারের পদক্ষেপে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ হয়েছে প্যানেল স্পিকার হলেন কুমিল্লার প্রাণ গোপাল দত্ত ও আঞ্জুম সুলতানা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আরও বিনিয়োগ করুন সরকারের ঋণ কমেছে ২৩ হাজার কোটি টাকা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার, ৩০ জেলে আটক চাটখিলে সরকারি সহায়তা পেল ৭১ পরিবার সুবর্ণচরে বিস্ফোরক মামলায় যুবদল নেতা কারাগারে হাতিয়ায় ৯ মণ সামুদ্রিক মাছসহ ৩০ জেলে আটক রান্না করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেলো গৃহবধূর ফেনসিডিল মামলায় যুবকের ৮ বছরের কারাদণ্ড ল্যাব ফাউন্ডেশন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা শাখার কমিটি নাঙ্গলকোটে সুইপারের লাশ উদ্ধার কুবিতে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিমানে জঙ্গলে ১৭ বছর মুক্তিযুদ্ধে ভিপি শাহআলমের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে
  • শুক্রবার ০২ জুন ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৮ ১৪৩০

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৪

দর্শনীয় হয়ে উঠছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘শেখ হাসিনা সড়ক’

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৩  

দর্শনীয় হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘শেখ হাসিনা সড়ক’। জেলা সদর থেকে বিজয়নগর উপজেলার সিমনা পর্যন্ত সোয়া ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক বিজয়নগর উপজেলার মানুষের যাতায়াত দুর্ভোগ ঘুঁচিয়েছে। এখন আর ৩৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে না তাদের। যানবাহন চলাচলের জন্যে এরইমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে সড়কটি। এ সড়ক শুধু যে শহরের সঙ্গে দূরত্বই কমাবে তা নয়; ভূমিকা রাখবে স্থানীয় কৃষি, শিল্প ও অর্থনীতিতে।

এদিকে, নদী আর বিলের বুকে নির্মিত এই সড়ক আর সেতু ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। খাল-বিল, নদী-হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেখানে ভিড় করছেন শতশত মানুষ। আগে হাইওয়ে সড়ক ধরে সরাইল বা আখাউড়া ঘুরে যেতে হতো ওই উপজেলায়। সময়ও লাগতো দেড়-দু’ঘণ্টা। যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় পত্তন, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। বর্ষাকালে হাওর পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে আসতে তাদের একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা, আর শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হাঁটা। 

bbariya

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিরাইলকান্দি থেকে বিজয়নগরের পত্তন ইউনিয়নের সিমনা পর্যন্ত প্রায় ৯ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হলেও এখন কাজ প্রায় শেষ। সড়কটি নির্মাণে ব্যয়  প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা। মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর প্রচেষ্টাতেই হয়েছে  হাওরের বুকে পিচঢালা এই পথ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানিয়েছে, শহর সংলগ্ন তিতাস নদীতে ৩১৫ মিটার এবং লইসকা খালে ৩০৮ মিটার দীর্ঘ দুটি সেতু এবং এর সঙ্গে প্রায় ১২শ মিটার এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। সড়ক রক্ষায় পাশে দেওয়া হয়েছে ব্লক। এই কাজটি করেছে মেসার্স মোস্তফা কামাল নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এর সত্বাধিকারী মোস্তফা কামাল বলেন, এই এলাকার মানুষের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর প্রচেষ্টায় নির্মিত এই সড়ক সর্বক্ষেত্রে এই উপজেলার মানুষের আমুল পরিবর্তন ঘটাবে। ব্যবসায়িক চিন্তা না করে কাজটির স্থায়ীত্ব এবং গুনগত মান কিভাবে ভালো হয় সেদিকেই লক্ষ্য ছিল আমাদের। কারণ ভালো কাজের জন্যে এলাকার মানুষের কাছে আমরাও যাতে স্মরণীয় হয়ে থাকি।

bbariya

সড়ক চালু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত বিজয়নগরের মানুষ। আনন্দ আর ধরছে না তাদের। চোখের পলকে শহরে পৌঁছতে পারছেন।

পত্তন ইউনিয়নের লক্ষিমোড়া গ্রামের কৃষক মো. শাহজাহান বলেন, আগে উৎপাদিত শাকসবজি শহরের হাটে তুলতে কষ্ট হতো। হাওর এলাকা হওয়ায় নৌকায় করে শহরে আসতে আসতে বেলা হয়ে যেতো। ফলে সবজির ভালো দাম পাওয়া যেত না। এখন  মাত্র আধা ঘণ্টাতেই পৌঁছাতে পারছেন শহরের হাটে। শাহজাহানের মতো পুরো বিজয়নগর উপজেলাবাসীর ভাগ্য বদলে দেবে ‘শেখ হাসিনা সড়ক’।

মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা বিলকিস বেগম জানান, আগে গ্রামের আশাপাশে কলেজ না থাকায় মেয়েদের শিক্ষা স্কুল পর্যন্ত—ই সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ ছেলেরা শহরে গিয়ে পড়তে পারলেও দূরের পথ হওয়ায় নিরাপত্তার কারণে শহরে পড়তে দেওয়া হতো না মেয়েদের। এখন সড়ক চালু হলে মেয়েরাও শহরে গিয়ে ভালো কলেজে পড়তে পারবে।

bbariya

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি বছর বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের আম, লিচু, মাল্টা ও কাঁঠালসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল উৎপাদিত হয়। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় কৃষকরা যথাসময়ে এসব ফল জেলা শহরে নিয়ে যেতে পারতেন না। এতে করে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতেন তারা। এখন শেখ হাসিনা সড়ক ব্যবহার করে দ্রুতি  সময়ের মধ্যে উৎপাদিত ফল শহরে নিয়ে যেতে পারবেন কৃষকরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল মান্নান জানান, সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলের জন্যে উন্মুক্ত। দুটি ব্রিজের এপ্রোচের কার্পেটিং শেষ। সড়কের প্রথম অংশের ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটারের কার্পেটিংয়ের কাজ এখন চলছে। বাকী ৪ কিলোমিটারের উন্নয়নের জন্যে প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া সড়কটিতে কিছু পুরনো ব্রিজ-কালভার্ট রয়েছে। সেগুলো মেরামত ও পুনঃনির্মাণের জন্যেও প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে।