ফেনীতে যুবদলের কমিটি গঠনে অর্থ লেনদেন

দীর্ঘদিন পর ফেনীর বিভিন্ন ইউনিটের যুবদলের কমিটি গঠনের তোড়জোড় চলছে।  যুবদলের বর্তমান সভাপতি জাকির হোসেন জসিম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন খোন্দকার জেলার আওতাধীন ইউনিটসমূহের ১১টি ইউনিটের কমিটি ঘোষনার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এরইমধ্যে ৬ টি ইউনিটের কমিটি  অনুমোদনের জন্য নিজেদের পছন্দ মতো তালিকা তৈরি করে তা কেন্দ্রে পাঠানোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

তবে বিভিন্ন ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নেতাকর্মীদের কাছথেকে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের করার অভিযোগ উঠেছে বর্তমান কমিটির সভাপতি - সম্পাদকের বিরুদ্ধে।

চাহিদা মোতাবেক অর্থের যোগান দিতে না পারায় অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রাপ্য পদ থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে পদ বানিজ্যে গা না ভাসানো প্রকৃত ত্যাগী ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নাম বাদ দিয়ে নিজেদের পছন্দ মতো তালিকা তৈরি করে তা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে  বলে অভিযোগ রয়েছে।  এতে করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে।

রবিবার ফেনী সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান মামুন, যুগ্ন-আহবায়ক কামরুল হাসান ও পৌর যুবদলের সমন্বয়ক রাসেল পাটোয়ারীর নেতৃত্বে একটি টিম ফেনী জেলা যুবদলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থবানিজ্যের অভিযোগ এনে লিখিত আকারে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন।

অভিযোগ পত্রে ফেনী সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক আতিকুর রহমান মামুন বলেন,  তাকে সদর থানা যুবদলের আহবায়ক বানাবে বলে সদর থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।  আহবায়ক বানানোর কথা বলে তার কাছথেকে সাংগঠনিক খরচ দেখিয়ে বিশ হাজার টাকা নেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে শুধু সদস্য হিসেবে রাখা হয়৷

অনুরূপ ভাবে দাগনভূঞা উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক হাসানুজ্জামান শাহাদাতের কাছথেকেও বিভাগীয় টিমের খরচ দেখিয়ে বিশ হাজার টাকা নেওয়া হয়।

অন্যদিকে ফেনী জেলা যুবদলের সদস্য মোঃ জামাল উদ্দিন গাজী  অভিযোগ করেন, ছাগলনাইয়া উপজেলা যুবদলের ১ নাম্বার যুগ্ম  আহবায়ক বানানোর কথা বলে তাকে ঢাকার একটা হোটেলে ডেকে পাঠানো হয়। পদবি দেওয়ার কথা বলে তার কাছে ৩ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি দুই ধাপে ১ লক্ষ ৩ হাজার টাকা প্রদান করলেও চাহিদা মোতাবেক  বাকি টাকা না দেওয়ায় তাকে পদ থেকে বঞ্চিত করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।

এছাড়াও পৌর যুবদল নেতা হায়দার আলী রাসেল, মোঃ আজীম, শাহাদাত হোসেন লিটন সহ বেশ কয়েকজন  নেতাকর্মীকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অর্থ লেনদেন করা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।  অপরপক্ষ থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা৷

রবিবার অভিযোগ পত্রটি কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষথেকে গ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে অভিযোগকারীদের আস্বস্ত করেন তিনি।

অন্যদিকে টাকা না দিতে পারায় যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অনেকে। যোগ্যতা ও পরিশ্রমি জাতীয়তাবাদী দলের প্রকৃত ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করার দাবী জানান তারা।