ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে নোয়াখালীর নুর উদ্দিনের বাজিমাত

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২৩  

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে বাজিমাত করেছেন কৃষক নুর উদ্দিন। কেবল নুর উদ্দিনই নন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় উপজেলায় এবছর টমেটো চাষ করেছেন ১০৫ জন কৃষক যার প্রতি কেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

জানা গেছে, ৫ শতক জায়গায় উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বারি টমেটো-৮ চাষাবাদ করেছেন কৃষক নুর উদ্দিন। ৫ টা শেডের মধ্যে ৩ শতাধিক চারা রয়েছে। এসব চারায় ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি টমেটো আহরণের আশা করছেন তিনি। মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচে তার লাভ হবে ৫০ হাজার টাকা। অসময়ে টমেটোর ভাল ফলনে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন নুর উদ্দিন। 

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাইব্রিড টমেটো বারি-৮ একটি উচ্চ তাপ সহিষ্ণু উচ্চফলনশীল গ্রীষ্মকালীন জাত। আকর্ষণীয় লালবর্ণ বিশিষ্ট এর ত্বক এবং শাঁস। ফল বেশ মাংসল। প্রতিটি গাছে গড়ে ৪০-৪৫টি ফল ধরে। প্রতি ফলের গড় ওজন ৬০-৬৫ গ্রাম। ফলের আকৃতি চ্যাপ্টা গোলাকার ধরনের। এ টমেটো মূলত শীতকালীন ফসল। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত গ্রীষ্মকালীন টমেটো বারি-৮ অসময়ে চাষ করে উচ্চমূল্যে বাজারজাত করছেন কৃষক নুর উদ্দিনসহ ১০৫ জন কৃষক। যখন বাজারে উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেশি এবং দাম ও বেশ চওড়া। এতে করে বর্ষাকালে তার মৌসুমী পতিত জমি আবাদের আওতায় আনার পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এবং মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে। টমেটোর ফলন দেখে তারা খুশি। তাদের সফলতা দেখে স্থানীয় অনেক কৃষক গ্রীষ্মকালীন চমেটো চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

কৃষক নুর উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকল উপকরণ ও পরিচর্যা খরচ পেয়ে ৫ শতক জমিতে পলিশেড পদ্ধতিতে বারি-৮ জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করি। কৃষি অফিস থেকে সঠিক সময়ে সার, বীজ, ও কীটনাশক পাওয়ায় তিনি সফলভাবে চাষাবাদ শুরু করি ও সফলতা পাই। বাজারমূল্য অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা খরচ করে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করার আশা করছি।

dhakapost

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মদিনুল হক  বলেন, বারি-৮ টমেটোটা দেখতে ভালো এবং খেতেও সুস্বাদু। মৌসুমি টমেটো থেকে বাজারে এই টমেটোর চাহিদা ভালো। একটা শেড দুই বছরের বেশি টেকসই হয়। এই শেডে আবার ব্রোকলিসহ অন্যন্য ফসল আবাদ করা যাবে। নুর উদ্দিনের সাফল্য দেখে এলাকার বিভিন্ন কৃষক প্রতিনিয়ত তার প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন করছেন ও ভবিষ্যতে এই ফসল চাষাবাদের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। 

স্থানীয় কৃষক আমিনুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এই জমিগুলো পতিত থাকতো। গ্রীষ্মকালে কোনো ফসল হতো না। কৃষি অফিস আমাদের উদ্বুদ্ধ করায় আমরা টমেটো করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আমাদের দেখে অনেকেই গ্রীষ্মকালে এ ফসল করার আশা প্রকাশ করেছেন। বাজারে টমেটোর চাহিদা থাকায় আমরা ভালো দাম পাচ্ছি। কৃষি বিভাগ এমন সহযোগিতা করলে নোয়াখালীর শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সুবর্ণচর উপজেলা আরও সমৃদ্ধ হবে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত রবি মৌসুমে সুবর্ণচর উপজেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়। এটি শীতকালীন ফসল হিসেবে শীতকালে অধিক পরিমাণে আবাদ হলেও সাধারণত কৃষক তার ন্যায্য মূল্য পায় না। মৌসুম শেষে তা ৫ থেকে ১০ টাকায় নেমে আসে, যা অফ সিজনে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুবর্ণচরের পক্ষ থেকে আমরা গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করে আসছি। বিগত ২০২১-২২ মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে সুবর্ণচর উপজেলায় ১.০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদে সক্ষম হয়েছিলাম এবং কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হন, যার ফলে এই বছর নতুন অনেক কৃষক গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

মো. হারুন অর রশিদ আরও বলেন, সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়নে প্রয়োজনীয় বীজ, সার, কীটনাশক, আন্তঃপরিচর্যাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে ১০৫ জন কৃষককে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে এবং কৃষকের ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন ব্লকে এই বছর প্রায় ৮ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদ হয়। আশা করছি, আগামী বছর এর দিগুণ জমিতে আবাদ হবে। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘এক ইঞ্চি জায়গাও খালি থাকবে না’ প্রতিপাদ্য ধারণ ও বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা করছি স্থায়ী পতিত জমিকে আবাদে আনার পাশাপাশি মৌসুমি পতিত জমিগুলো অফ সিজনাল বিভিন্ন ফসল চাষাবাদের মাধ্যমে আবাদের আওতায় নিয়ে আসা।

গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ বাড়ানো গেলে আমদানি নির্ভরতা কমে কৃষক লাভবান হবেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ বাড়াতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি সবার সহযোগিতা পেলে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ বাড়ানো গেলে আমদানি নির্ভরতা কমে কৃষক লাভবান হবেন। কৃষক লাভবান হলে আমাদের দেশও লাভবান হবে।