ডাঃ আবু তাহেরের ফেসবুক স্ট্যাটাস এবং বাস্তবতা

ডাঃ আবু তাহের (বিসিএস ৩৯তম ব্যাচ) গত ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখে মেডিকেল অফিসার হিসেবে নোয়াখালি জেনারেল হাসপাতালে যোগদান করেন। তিনি হাসপাতালের এ্যানেস্থিশিয়া বিভাগে কর্মরত। 
সম্প্রতি চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর (পিপিই) স্বল্পতা নিয়ে স্বাস্থ্য সচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তার এই স্ট্যাটাস নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ডাঃ আবু তাহের ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন- গত একমাসে তিনি হাসপাতালে শতাধিক অপারেশন করেছেন। নিজের পকেটের টাকা দিয়ে বাজার থেকে মাস্ক কিনে ব্যবহার করেছেন। তাহলে স্বাস্থ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীকে কেন বলছেন তিনি হাসপাতালে  N-95 বা সমমানের মাস্ক দিচ্ছেন? স্বাস্থ্য সচিব মিথ্যাচার করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, গত ১ মাসে তার বিভাগে  ৮ জন চিকিৎসকের জন্য মাত্র ০২টি পিপিই দেয়া হয়েছ।  তিনি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পিপিই এর মজুদ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে, স্বাস্থ্য সচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করায় উক্ত চিকিৎসক’কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। উক্ত নোটিশে বলা হয়, পিপিইসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশনা এবং হাসপাতালের স্টোরে উল্লেখিত সামগ্রী মজুদ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকা সত্ত্বেও আপনি এই বিষয়ে এমন মন্তব্য করেছেন যা, “সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে বা কোন শ্রেণীর কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি, ভুল বোঝাবুঝি বা বিদ্বেষের সৃষ্টি করিতে বা সৃষ্টির জন্য অন্যকে প্ররোচিত করিতে পারে” যাহা সরকারী কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ এর পরিপন্থী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি মোতাবেক “অসদাচরণ” হিসেবে গণ্য এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।   
 নোয়াখালী সিভিল সার্জন এবং হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ২৫০০ পিপিই পেয়েছে এবং প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে ১৩০০ পিপিই ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতাল এর ষ্টোরে পর্যাপ্ত পরিমান পিপিইসহ যাবতীয় সুরক্ষা সামগ্রী মজুদ রয়েছে।

ডা: আবু তাহের পিপিই এর প্রয়োজনীয়তার কথা কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে স্বাস্থ্য সচিবের সমালোচনা করেন যা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
ডাক্তার আবু তাহের করোনা রোগীর চিকিৎসা দেওয়া বা ফ্লু কর্ণারে কাজ করেন না। তিনি শুধু মাত্র সাধারণ রোগীর OT তে কাজ করেন। এক্ষেত্রে তার N-95 মাস্ক বা পিপিই প্রয়োজন নেই, তবে সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করলেই হবে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে দেশ যখন সংকটময় সময় পার করছে তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনতা প্রশাসনের সাথে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে অসহায় মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছে। আর এই সময় ডাঃ আবু তাহের শুধুমাত্র অনুমান ভিত্তিক মনগড়া স্ট্যাটাস দিয়ে ডাক্তার সমাজ তথা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে, যা একজন দায়িত্বশীল পেশার মানুষের কাছ থেকে কোনভাবেই কাম্য নই।