ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

উপরের পেটে মেদ বেড়েছে? ঝরিয়ে ফেলুন এই সহজ উপায়ে

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

অনেকেরই খুবই কমন একটি সমস্যা হচ্ছে উপরের পেটে মেদ জমা। এর ফলে উপরের পেটে চর্বি জমে কোমরের সাইজ নষ্ট করে দেয়। তাছাড়া পেট ফুলে থাকার কারণে কোনো ড্রেসই মানানসই মনে হয়না। শারীরিক সৌন্দর্য পুরাই নষ্ট করে দেয় এ অংশের মেদ।
মেদজনিত সমস্যায় শরীরের সব অংশের তুলনায় দ্রুত আক্রান্ত হয় উপরের পেট। আর সবচেয়ে বেশি দেরিতেও ঝরে এ অংশের মেদ। তাই এ নিয়ে নারী পুরুষ উভয়েরই দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন ও নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের উপরের পেটের মেদ জমা থেকে বাঁচাতে পারে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক উপরের পেটে মেদ বাড়ার কারণ ও পরিত্রাণের উপায়-

যে পাঁচটি কারণে উপরের পেটে মেদ বাড়ে
১. আমরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন জাঙ্ক ফুড যেমন ভাজাপোড়া খাবার, ফাস্টফুড ও মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করি। এসব খাবার বেশিরভাগই অস্বাস্থ্যকর। কারণ এগুলো আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত জাঙ্ক ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার আমাদের বিপাক তন্ত্রের ক্রিয়া হ্রাস করে এবং উপরের পেটে মেদ জমায়।

২. ব্যস্ততার কারণে বা আলসেমি করে আমরা শারীরিক পরিশ্রম করিনা। বাইরে বের হলে পায়ে না হেঁটে যানবাহন ব্যবহার করি। সিঁড়ি ব্যবহার না করে দ্রুত লিফটে উঠে যাই। নিয়মিত হাঁটাচলা আর ব্যায়াম আমাদের জন্য খুব জরুরি। এতে আমাদের শরীরসহ উপরের পেট মেদ মুক্ত থাকে।

৩. আমাদের কঠিন জীবন ধারার কারণে আমরা প্রায়ই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ি। আর এ দুশ্চিন্তাই আমাদের উপরের পেটের চর্বি বাড়ায়। দুশ্চিন্তা আমাদের শরীরে আ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে নিসৃত এক ধরনের হরমোন তৈরি করে, যা আমাদের যকৃত থেকে চিনি নিঃসরণ করে উপরের পেটে মেদ তৈরি করে।

৪. অনিয়মিত ঘুম, রাত জাগা, ঘুম কম হওয়া এসব কারণেও উপরের পেটে মেদ জমে।

৫. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে অনেক পরিবর্তন আসতে থাকে। তখন ত্বকের নিম্নস্তরের চর্বি হ্রাস পেতে থাকে এবং উপরের পেটে মেদ তৈরি হতে থাকে।

উপরের পেটের মেদ ঝরানোর পাঁচটি উপায়
১. এর থেকে মুক্তি পেতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। বাইরের এনার্জি ড্রিংকস, সফট ড্রিংকস এগুলো খাওয়া বাদ দিতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান আমাদের শরীরে ম্যাজিকের মতো চর্বি কাটতে সাহায্য করে।

এছাড়া প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানির সঙ্গে অর্ধেকটা লেবু ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে উপরের পেটের মেদ কাটে। আবার আদা থেতো করে ১ গ্লাস পরিমাণ পানির সঙ্গে সেদ্ধ করে এতে অর্ধেকটা লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলেও মেদ কেটে যায়। নিয়মিত এই মিশ্রণ গুলো খেলে উপরের পেটের মেদ অনেকাংশেই কেটে যাবে।

২. স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। সকালের নাস্তায় ওটস রাখতে হবে। এক বাটি ওটসের সঙ্গে ফ্যাট ফ্রি দুধ, সঙ্গে যেকোনো ফল মিশিয়ে সকালের নাস্তা করতে হবে। প্রচুর ফলমূল খেতে হবে। ওটস আমাদের শরীরের এনার্জি বাড়ায়।

৩. সঠিক ডায়েট অনুসরণ করলে আমাদের উপরের পেটের মেদ কমার সঙ্গে সঙ্গে সুন্দর ও সুগঠিত থাকবে। একবারে ভরপেট না খেয়ে দৈনিক ৫ থেকে ৬ বার অল্প অল্প করে খাবেন। এতে করে ঘন ঘন ক্ষুধাভাবটা কেটে যাবে আর খাওয়ার পরিমাণটাও কমে যাবে।

কম তেল ও কম মশলা যুক্ত খাবার খেতে হবে। রান্নায় সয়াবিন ও সরিষার তেলের পরিবর্তে অলিভ ওয়েল ব্যবহার করবেন। লাল চালের ভাত ও লাল আটার রুটি খেতে হবে। চর্বি জাতীয় মাংস বর্জন করে মুরগীর মাংস খান। আঁশ জাতীয় খাবার ,মাছ, ডিম,শাকসবজি ও সালাদ খেতে হবে। খাওয়ার ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করতে হবে। এতে ক্ষুধাভাব কমে যাবে। খাওয়ার এক ঘন্টা পর পানি পান করতে হবে। রাতে ঘুমের ২ ঘন্টা আগে খাওয়া শেষ করতে হবে।

৪. ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে আমাদের উপরের পেটের মেদ বাড়ে। আমাদের শরীরে ২ ধরনের হরমোন কাজ করে- গ্রীলিন হরমোন ও ল্যাপটিন হরমোন। গ্রীলিন হরমোন আমাদের শরীরে ক্ষুধাভাব তৈরি করে। যখন আমরা কম ঘুমাই, রাত জাগি তখন আমাদের শরীরে প্রচুর গ্রীলিন হরমোন তৈরি হয়। এতে আমাদের ক্ষুধাভাবও বেড়ে যায়। ল্যাপটিন হরমোন জানান দেয় কখন আমাদের খাওয়া বন্ধ করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আমাদের শরীর থেকে ল্যাপটিন হরমোন কমে যেতে থাকে। কাজেই দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুম আমাদের শরীর ফিট রাখে এবং উপরের পেটে মেদ না জমতে সাহায্য করে।

৫. উপরের পেটের চর্বি কমানোর কার্যকর সমাধান হলো ব্যায়াম। ব্যাস্ততার কারণে আমরা জিমে যেতে না পারলে ঘরে বসেই সহজ কিছু ব্যায়াম করে আমরা উপরের পেটের মেদ কমাতে পারি। যা করতে সময়ও কম লাগে এবং বাড়তি কোন উপকরণের প্রয়োজনও পড়ে না। সপ্তাহে ৪ দিন ৪৫ মিনিট করে ব্যায়াম করুন। এছাড়া সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো উপরের পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে।

উপরের পেটের মেদ কমানোর ব্যায়াম
নিচে কিছু ব্যায়ামের নিয়মাবলী আলোচনা করা হলো, উপরের পেটের মেদ দ্রুত কমাতে যা আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন।

১. আরামদায়ক দূরত্বে পা ফাঁক করে মাথার পেছনে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে একবার বা দিকে ঝুঁকতে হবে, আরেকবার ডান দিকে ঝুঁকতে হবে। এভাবে ৩০ বার করুন।

২. পা দুটো সোজা করে রেখে শুয়ে পড়ুন। দুই হাত নিতম্বের নিচে থাকবে। হাত দুটো নিচে রেখে পা দুটো এবার আরো উপরে তুলতে হবে। উপরে উঠানোর সময় নিশ্বাস ছাড়তে হবে এবং নিচে নামানোর সময় নিশ্বাস নিতে হবে। এভাবে ১৫ থেকে ২০ বার করতে হবে।

৩. ম্যাটের উপর হাঁটু ভাজ করে রাখুন। এবার মাথার নিচে হাত রাখুন। কোমর পর্যন্ত পুরো শরীরকে উপরের দিকে উঠান। আবার নামিয়ে আনুন। কিন্তু শরীর নামানোর সময় মাথা যেন ম্যাটের সঙ্গে লেগে না যায়, খেয়াল রাখতে হবে সেদিকে। এভাবে ৩০ বার করুন।

৪. হাত মাথার নিচে রাখুন। পা ভাঁজ করে উপরের দিকে তুলুন। এবার মাথা উপরে তুলে বাম হাতের কনুই দিয়ে ডান পা ছোঁয়ার চেষ্টা করুন। একই ভাবে ডান কনুই দিয়ে বাঁ পাশের পায়ে ছোঁয়াতে হবে। এভাবে ৩০ বার করুন।

৫. দুই কনুইয়ের উপর ভর দিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন। চোখ থাকবে সামনের দিকে। পায়ের আঙ্গুল ও কনুইয়ের উপর ভর দিয়ে পুরো শরীরকে উপরের দিকে উঠান। দুই কনুই ও পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে প্রতিবার ১ মিনিট থাকতে হবে। এভাবে ৩ বার করুন।

নিয়মিত এ ব্যায়াম করলে ৩ মাসের মধ্যে এর সুফলতা পাবেন। সকালে খালি পেটে ৪৫ মিনিট অথবা সকালে সম্ভব না হলে সন্ধ্যা বা রাতের দিকেও করতে পারেন। সঠিক খাদ্যাভ্যাস আর দৈনন্দিন জীবনের সুন্দর পরিবর্তন আপনাকে উপরের পেটের মেদ ঝরিয়ে করে তুলতে আকর্ষণীয় ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।