ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শ্রীলঙ্কার মত কেন হবে না বাংলাদেশ?

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২  

বাংলাদেশে অদূর কিংবা সুদূর ভবিষ্যতেও, শ্রীলঙ্কার মত পরিস্থিতি হবার কোন সম্ভাবনা নাই। বিগত মাসখানেক যাবৎ যখন থেকে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দেউলিয়া হবার সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে; তখন থেকেই একশ্রেণীর মানুষের মাঝে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া কিছু উন্নয়ন বিরোধী ষড়যন্ত্রকামী মানুষ; বর্তমান সরকারের মেগাপ্রকল্পসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের বিরুদ্ধে একপ্রকার নেতিবাচক প্রচারণা শুরু করেছে। 
প্রিয় দর্শক, আজকের ভিডিওতে আমরা জানাবো শ্রীলঙ্কা কোন কোন কারণে আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। এবং আমরা কতটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি।

প্রসঙ্গ ১- বৈদেশিক ঋণঃ
পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা দেশই নিজেদের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বড় দেশগুলো থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। এই ঋণের শর্ত ও সুদের পরিমাণ নির্ণয়ে যে দেশের কূটনৈতিকরা বেশি দক্ষ সেই দেশ খুব সহজে ঋণমুক্ত হতে পারে। 
শ্রীলঙ্কা প্রায় এককভাবে ঋণের জন্য চীনের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার ‘পোর্ট সিটি’ নামক মেগাপ্রকল্প তাদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২৫ বছর সময় নিয়ে, সাগরের বুক থেকে মাটি এনে রাজধানীর কাছে বিলাসবহুল নগর বানানোর মত অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কা উচ্চহারে চীনের কাছে ঋণ নিয়েছে। শুধু তাই নয়- চীনের কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে তারা প্রকল্পের সব কাজ করানোর শর্তে ঋণ পেয়েছে। ফলে ওইসব বিদেশী প্রতিষ্ঠান নিজেদের মত বিল বানিয়ে শ্রীলঙ্কার জনগণের উপর ঋণের বোঝা বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু আমরা তো নিজ অর্থেই নির্মাণ করেছি। জুন মাসের মধ্যেই পদ্মাসেতু চালু হবে। পাশাপাশি আগামি বছরের মধ্যেই কর্ণফুলি টানেল, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পরমানু প্রকল্প, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ইত্যাদি চালু হয়ে যাবে। বাংলাদেশ এসব প্রকল্পে ঋণের জন্য এককভাবে কোণ দেশের উপর নির্ভরশীল নয়। এছাড়াও আমাদের ঋণ কোন নির্দিষ্ট একটি দেশের বদলে বিশ্বব্যাংক, এডিপি ও জাইকার উপর নির্ভরশীল। এসব সংস্থার সুদের পরিমাণ কম; ঋণ পরিশোধে সময়ও অনেক পাওয়া যাবে; এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের সাথে আমরা কাজ করতে বাধ্য নই। অন্যদিকে আমাদের নির্মানাধীন প্রকল্প চালুর সাথে সাথেই জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি যুক্ত হতে শুরু করবে।

প্রসঙ্গ ২- খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাঃ
শ্রীলঙ্কা সরকার হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেয় তারা রাসায়নিকমুক্ত কৃষি উৎপাদন করবে। পরিবেশের জন্য এটা ভাল উদ্যোগ হলেও দীর্ঘদিনের খাদ্য সরবারহ সুনিশ্চিত করে কাজটা করা দরকার ছিল। কিন্তু রাসায়নিক থেকে হঠাৎ করে অর্গানিকে শিফট করলে দেশের চাহিদা পূরণের কি হবে সে কথা না ভেবেই হঠকারি সিদ্ধান্ত নেয়। ফলশ্রুতিতে এক বছরের মধ্যেই তাদের অর্ধ মিলিয়ন ডলারের চাল আমদানি করতে হয়। এবং শ্রীলঙ্কার চা শিল্প একদম ধ্বংস হয়ে যায়।
এদিক দিয়ে বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই ধান, চাল, মাছ চা পাতা ও মশলা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দিন দিন আমাদের উৎপাদন বাড়ছে। সরকারি খাদ্য গুদামে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি খাদ্যপণ্য মজুদ আছে। বাংলাদেশের জনগণকে কখনোই ভাতের জন্য রাস্তায় নামতে হবে না

প্রসঙ্গ ৩- অর্থনৈতিক দুরবস্থাঃ
শ্রীলঙ্কার প্রধান অর্থনৈতিক আয় হল পর্যটন শিল্প। কিন্তু বিগত ২ বছরের করোনা সংকট ও কিছু উগ্রবাদী আক্রমণে তাদের পর্যটন শিল্প খাদের কিনারায় চলে গেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শক্তি এককভাবে একটি শিল্পের উপর নির্ভরশীল নয়। কৃষি আমাদের প্রধান অর্থনৈতিক মাধ্যম। এরপর বৈদেশিক রেমিট্যান্স, তৈরী পোষাক রপ্তানি আমাদের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় করছে। মেগাপ্রকল্পগুলো চালুর পর দেশের অর্থনীতির চাকা সামলাবে তারাই। সুতরাং শ্রীলঙ্কার মত অর্থনৈতিক দুরাশাই নেই আমরা। 
 
প্রসঙ্গ ৪- কাগুজে পরিসংখ্যানঃ
বাংলাদেশের বর্তমান রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সম্মিলিত রিজার্ভের দ্বিগুণ। এছাড়া বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির মাত্র ১২শতাংশ সেখানে শ্রীলঙ্কার ঋণ জিডিপির প্রায় ৪৮শতাংশ। শ্রীলঙ্কার মাথাপিছু ঋণ ১৬৫০ মার্কিন ডলার আর বাংলাদেশের মাত্র ২৯২ মার্কিন ডলার। চলতি অর্থ বছরের দুই মাস বাকি থাকতেই তৈরি পোশাক রপ্তানিতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছি আমরা। বন্ধ হয়ে যাওয়া পর্যটন শিল্পই যেখানে ছিল শ্রীলঙ্কার রেমিট্যান্স অন্যতম উৎস, সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক শ্রম রপ্তানি, তৈরি পোশাক এবং কৃষি ও কৃষি পণ্য রপ্তানি খাতে নিয়মিত বৈদেশিক মুদ্রা যোগ হচ্ছে। করোনার ধাক্কা সামলে পুরো এশিয়ার মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় তরাণ্বিত হচ্ছি। সেখানে যে শ্রীলংকাকে আমরা কদিন আগেও ২৫০ মিলিয়ন ডলার সাহায্য দিলাম; সেখানে আমরা তাদের মত হয়ে যাব এই আশংকা অমূলক ও ভিত্তিহীন।