ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চিকুনগুনিয়ায় আতঙ্কিত নগরবাসী

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৬ জুলাই ২০১৯  

বাংলাদেশে গত দুই বছর যেভাবে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছিল তা রীতিমত আতঙ্কিত করে তুলেছিল নগরবাসীকে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে বাড়ছে চিকুনগুনিয়া জ্বরেরও প্রকোপ। গত ছয় মাসে শুধু রাজধানীতে ১ হাজার ৮৩১ জন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।  

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজধানীর প্রায় ৩৩ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এদিকে চিকুনগুনিয়া জ্বরের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাসজনিত রোগ চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস যে এডিস মশা বহন করে, সেই মশাই চিকুনগুনিয়া ভাইরাসও বহন করে। চিকুনগুনিয়া জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। সাধারণত মশা কামড়ের পাঁচদিন পর থেকে শরীরে লক্ষণগুলো ফুটে ওঠে। এর যন্ত্রণা অনেক দিন থেকে যায়। 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য মতে, শুধু জুন মাসের ৩০ তারিখে রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি সব হাসপাতালে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫২জন। তার মধ্যে, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৪জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৫জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৮ জন, বিজিবি হাসপাতাল-পিলখানায় ৩জন। এছাড়া বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে ভর্তি ছিলেন ৩২জন। 

এছাড়া গত ৬ মাসে রাজধানীর সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৮৩১ জন ভর্তি হয়েছেন এই ভাইরাস জ্বর নিয়ে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৫জন। মিটফোর্ড হাসপাতালে ৫২জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ৪৮জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৫৭জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১৫৩জন, বারডেম হাসপাতালে ২৪জন, রাজারবাগের পুলিশ হাসপাতালে ৬৯জন,  মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০জন, বিজিবি হাসপাতালে ৬০জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৩৬জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ৮জন। এছাড়া বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে ১হাজার ১৩৯জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজনের মৃত্যুও হয়েছে। 

বর্তমানে রাজধানীর সব হাসপাতালে এই রোগে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৮৮জন। এর মধ্যে মিটফোর্ড হাসপাতালে ২৪জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১৮জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ২২জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ২০জন, বারডেম হাসপাতালে ৫জন, বিজিবি হাসপাতালে ২৯ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২৩জন। এছাড়া বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে ১৪৭জন ভর্তি রয়েছেন। 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, দিনে কামড়ানো মশার আগমন বেড়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। তাই এরকম নতুন ভাইরাস থেকে মুক্তির একই উপায়, সতর্কতা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে এই ভাইরাস জ্বরটির প্রকোপ বাড়ছে। লক্ষণ দেখে ও রক্তে সেরোলজিক্যাল টেস্ট করে রোগটির ডায়াগনসিস করা হয়। চিকুনগুনিয়া জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। প্রচুর পানি, শরবত, স্যালাইন, ডাবের পানি পান করতে হবে। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল খেতে হবে। বমি বা অন্যান্য উপসর্গের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। 

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফুল হাসান শামীম বলেন, বর্তমানে অনেকেরই এই জ্বর হচ্ছে। এটি এক ধরণের ভাইরাস জ্বর। ডেঙ্গুর মতোই এর লক্ষণ। মশার কামড় থেকেই এই জ্বরের শুরু। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে হাড়ে ও গিটে গিটে প্রচণ্ড ব্যথা থাকে। শরীর হয়ে পড়ে প্রচণ্ড দুর্বল। 

তিনি আরো বলেন, এই ধরণের রোগীদের আমরা সাধারণত প্যারাসিটামল দিচ্ছি। এন্টিবায়োটিক খাওয়ার কোনো দরকার নেই।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. আলমগীর চৌধুরী বলেন, এরকম মৌসুমি জ্বর বা ঠাণ্ডায় ভয়ের কোনো কারণ নেই। এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। ভয় পেয়ে শুধু শুধু এন্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না। জ্বর যদি তিন দিনের বেশ থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।