ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চিকিৎসা নিতে এসে ডাক্তারের দূর্ব্যবহারের শিকার

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম ও টেষ্ট বানিজ্যের পর এবার প্রসূতী মা কে জরুরী চিকিৎসা (ডেলিভারী) না করে রোগীর স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের (মাতৃমঙ্গল) মেডিকেল অফিসার ডা: হ্যাপী কর্মকারের বিরুদ্ধে। ২৪ ঘন্টার মাতৃত্ব সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও শুধুমাত্র ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া আল্টাসনোগ্রাফী না করার অভিযোগে রোগীকে তাড়িয়ে দেন হাসপাতাল থেকে। সেবা না পেয়ে পরে ওই দিনই স্থানীয় একটি হাসপাতালে মা হন ওই রোগী। এর আগে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের ভিজিটর ও ডাক্তারদের বিরুদ্ধে টেষ্ট বাণিজ্য ও রোগী হয়রানীর অভিযোগে বিভিন্ন পত্রিকায়  সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের রোজিনা নামে এক জরুরী প্রসূতী মায়ের ডেলিভারীর জন্য মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা: হ্যাপী কর্মকারের নিকট আসেন। কিন্তু তার (ডাঃ হ্যাপী কর্মকার) প্রেসক্রিপশন ছাড়া আল্টাসনোগ্রাফী টেষ্ট করায় রোগীকে সেবা না দিয়ে রোগীর স্বজনের সাথে দুর্ব্যবহার করে বের করে দেন। এমন একটি  অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে এসে পৌছেছে। অডিও রেকর্ডের কথোপকথন পাঠকের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো।

রোগীর স্বজন: ম্যাডাম সমস্যা হয়েছে কি, ওর ডেট ওভার হয়ে গেছিল।
ডাক্তার: আল্ট্রা করাইতে কে বলছিল?

রোগীর স্বজন: আগে আল্ট্রা টা করাইছি যাতে রিপোর্টটা দেখাইতে সুবিধা হয়। ও তো ডাক্তার দেখায়নাই। শুধু আল্ট্রা টা করছে জনসেবাতে।

ডাক্তার: এখন অফিস বন্ধ, তুমি বাইরে যাও। আমি আজকে ওকে দেখবো না। এটা সম্ভব না। কেউ আল্ট্রা করে পাঠালো, সেটা আমি দেখবো। আমাকে তুমি ডিজঅনার করতেছো। আমি তো ডাক্তার।

রোগীর স্বজন: না না, ম্যাডাম সমস্যা হইছে কি আমি আপনাকে একটু আমার কথাটা শুনাই।

ডাক্তার: না না আমি তোমার কথা শুনবো না, আমি তোমার কথা শুনতে বাধ্য না। ও তো আমার রোগী না। ও রুনা আপার রোগী। রুনা আপার সাথে গিয়ে কথা বলো। কেনো তুমি এটা তো রুনা ম্যাডামকে দেখাইছিলা।

রোগীর স্বজন: এটা তো প্রাইভেটে আগে দেখাইছি।

ডাক্তার: এখন দেখাও গিয়ে! সমস্যা কি?

রোগীর স্বজন: আগে প্রাইভেটে দেখছে বলে আপনারা দেখবেন না?

ডাক্তার: দেখবো, কেনো তুমি অফিস টাইমে আসছো? টিকিট কাটছো? হাসপাতালে এসে? রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার নিছো? আমি লিখে দিছি আল্ট্রা টা? অযথা আল্ট্রা করে আসছো। তাহলে কেন দেখবো? তোমার বাসায় যদি তুমি আমাকে দাওয়াত না দাও, আমাকে যদি পারমিশন না দাও, আমি কি যাবো? তোমার বাসায়?

রোগীর স্বজন: না না আপনার কথা তো অবশ্যই শোনা... সমস্যা হচ্ছে ওকে আমি পাঠাইছি মাতৃমঙ্গলে আসার জন্য।

ডাক্তার : ও মাতৃমঙ্গলে আসছে, ও কি টিকেট নিছে? রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার দিছে? ও চেক আপ করছে? ও চেক আপ করার পর আমার রুমে আসছে? ও কে আমি দেখছি? যে ওর কি লাগবে? আল্ট্রা লাগবে না কি লাগবে? তুমি গিয়ে আল্ট্রা করে আসছো তাহলে তুমি ওদের গিয়ে দেখাও। ওরা ডাক্তারের ব্যবস্থা করে দিবে। আর এখন তো অফিস টাইম না। সব কিছুর একটা সিষ্ট্রেম আছে, লিগ্যালিটি আছে, লয়ালিটি আছে।

রোগীর মা: রাগ কইরেন না আপা রাগ কইরেন না। আমরা জানি না।

ডাক্তার: এই রিক্সা ডাকো তো (স্টাফকে)

রোগীর মা: আমরা ভুল কইরালাইছি।

ডাক্তার: যাও যাও, আমি তোমাদের জন্য বসে থাকিনাই। আমি আমার অফিসের কাজের জন্য বসে আছি। ...

ভূক্তভোগী রোজিনার স্বজন অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ আগস্ট সকালে ডেলিভারী ব্যাথা শুরু হলে রোজিনাকে লক্ষ্মীপুর মা ও শিশু কেন্দ্রে নিয়ে আসি। এর ১২ দিন পূর্বে ডেলিভারী তারিখ ছিল। কিন্তু ডেলিভারী তারিখ অতিক্রম হওয়ায় আসার সময় নিজ উদ্যোগেই একটি আল্ট্রাসনোগ্রাফী টেষ্ট করিয়ে নিয়ে আনি। হাসপাতালে প্রায় ১ ঘন্টার বেশি সময় বসে থাকার পর ডাক্তার হ্যাপী কর্মকারের স্বাক্ষাৎ পেতে তার রুমে যাই। ডাক্তারকে রিপোর্ট ফাইল দেওয়ার সাথে সাথে উনি (ডাঃ হ্যাপী কর্মকার) ফাইলটি ছুঁড়ে ফেলে দেন। পরে আমাদের সাথে দূর্ব্যবহার করে রুম থেকে বের করে দেন। পরে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঘন্টাখানেক পরে বাচ্চা দুনিয়ায় আসে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা: হ্যাপী কর্মকার মুঠোফোনে বলেন, এধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা আমার জানা নেই। এটি সত্য নয়। এমন ঘটলে অভিযোগ করতে বলেন রোগীকে। তবে রোগী ও ফাইলপত্র নিয়ে সাংবাদিকদের অফিসে গিয়ে কথা বলতে বলেন তিনি।

জরুরী মাতৃত্ব সেবা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে ডেলিভারী ও জরুরী অপারেশন রোগীদের জন্য ২৪ ঘন্টা সেবা চালু থাকলেও এবং এসকল রোগীদের কোন আউটডোর টিকিট ব্যবস্থা না থাকলেও রোজিনাকে অফিস সময়, টিকিট ও টেষ্ট করাইছিলো কেন সে অজুহাতে চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার প্রসঙ্গে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা: আশফাকুর রহমান মামুন বলেন, বিষয়টি কারো কাম্য নয়। রোগীকে সেবা দেওয়া যেতো। সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছেন।