ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আ. লীগ সর্বাত্মক শক্তি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২০  

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে নোয়াখালী সমাচারের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরঃ

নোয়াখালী সমাচার: করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সময় কিভাবে পার করছেন?

ওবায়দুল কাদের : অন্য সবার মতো আমিও দেশ ও মানুষের কথা চিন্তা করে সময় পার করছি। অফিসে যেতে পারছি না বলে বাসায় বসেই কাজ করতে হচ্ছে। সরকারি কাজের প্রয়োজনীয় সব ফাইল এখন বাসায় বসেই দেখি। হার্ড কপির ফাইলে স্বাক্ষর করে এবং ই-ফাইলগুলো অনলাইনে দেখে অনুমোদন দিই। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলীয় কার্যক্রমও দেখতে হয়। বিভিন্ন কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে দিকনির্দেশনা দিই। টেলিফোন বা অন্য মাধ্যমে যুক্ত হয়ে উপজেলা ও জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সারা দেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। একদিকে করোনা এবং অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের দিকেও নজর রাখতে হয়। সে জন্য ওই সব এলাকার প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিই। এ ছাড়া পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রো রেলসহ সারা দেশের আমার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রকল্পগুলোর কাজও মনিটর করি। দেশের পরিবহন ব্যবস্থার খবরাখবরও আমাকে রাখতে হচ্ছে। এসবের বাইরে আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি সেখানে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। জরুরি প্রয়োজনে আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও যোগাযোগ করছি।

 

নোয়াখালী সমাচার: এর অর্থ এমন পরিস্থিতিতেও আপনার নিজের সময় বলে কিছুই নেই?

ওবায়দুল কাদের : আমি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। অসুস্থ না হলে নামাজ মিস করি না। সিএনএন, বিবিসি, এনডিটিভিসহ দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেলের খবর দেখি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই এ সময় পড়ছি। সময় পেলে ভালো কিছু মুভিও দেখি।

 

নোয়াখালী সমাচার: করোনায় শিল্প ও কলকারখানা বন্ধের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এগুলো পুষিয়ে নেওয়ার কথা কি ভাবছেন?

ওবায়দুল কাদের : অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এ ঘটনা সারা বিশ্বের। বাংলাদেশের জনগণকে এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখা যাবে না। দেশের ও মানুষের জন্য যে যতটুকু কন্ট্রিবিউট করার ক্ষমতা আছে, সেটুকু করতে হবে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হবে।

 

নোয়াখালী সমাচার: করোনা পরিস্থিতি সরকার ঠিকমতো সামাল দিতে পেরেছে বলে আপনি মনে করেন?

ওবায়দুল কাদের : আমি মনে করি, করোনার এই ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবে তিনি সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। লকডাউন পরিস্থিতির কারণে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়েছে। সরকার প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে। ৬৪ জেলায় দেড় লাখ টনের বেশি চাল বরাদ্দ, এক কোটি মানুষের মধ্যে রেশন কার্ড, ঈদের আগে ৫০ লাখ মানুষের মধ্যে নগদ অর্থ সাহায্য প্রদান করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। করোনায় অর্থনীতি সচল রাখতে এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করায় আন্তর্জাতিক মহল প্রশংসা করেছে। এ ছাড়া সরকারের পাশাপাশি দলগতভাবে আওয়ামী লীগ ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরা সর্বশক্তি নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এক কোটির বেশি পরিবারকে তাঁরা ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন। ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অসহায় মানুষের পাকা ধান কেটে দিয়েছেন। দলীয়ভাবে আমরা ১০ কোটি টাকার বেশি নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছি। মানুষকে সাহায্য করার জন্য ভেন্টিলেটর পৌঁছে দিয়েছি। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতিদিন শত শত মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।

 

নোয়াখালী সমাচার: ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কি পরিপূর্ণভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে?

ওবায়দুল কাদের : আমি মনে করি, সর্বাত্মক শক্তি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং এই সংকট দূর না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা থাকবেন। অন্য কোনো রাজনীতি আওয়ামী লীগের নেই।

 

নোয়াখালী সমাচার: কিন্তু করোনায় আক্রান্ত ও প্রকৃত তথ্য সরকার গোপন করছে বলে বিএনপি অভিযোগ করছে...

ওবায়দুল কাদের : অবাধ তথ্যপ্রবাহের এই যুগে কেউ ইচ্ছা করলেই তথ্য গোপন করতে পারে না। তা ছাড়া তথ্য গোপন করে সরকারের লাভ কী! করোনা পরিস্থিতি তথা মৃত্যুর কথা প্রতিদিনই সংবাদপত্রে প্রচারিত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংশ্লিষ্ট সবাই এদিকে নজর রাখছেন। আসলে সরকারের সমালোচনা তথা শুধু বিরোধিতার জন্যই বিএনপি এসব ছড়াচ্ছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বিএনপির রাজনীতিই এখন লকডাউনে। জনগণের কাছ থেকে তারা আইসোলেশনে রয়েছে। এ কারণে গণমাধ্যমে কথা বলে তারা সচল থাকার চেষ্টা করছে।

 

নোয়াখালী সমাচার: করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি টাস্কফোর্স গঠনের দাবি তুললেও সরকার তা অগ্রাহ্য করেছে কেন?

ওবায়দুল কাদের : সারা পৃথিবীতেই টাস্কফোর্স কাজ করে সরকার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশেও সরকারের কাজ সরকার করছে। যেমন করোনা মোকাবেলায় ডাক্তারদের নিয়ে ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক বা দলীয়ভাবে কোনো টাস্কফোর্স গঠিত হয়নি। বিএনপি জনগণের পাশে নেই। রাজনৈতিক বিরোধিতা না করে জনগণের পাশে থেকে তারা আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারত।

 

নোয়াখালী সমাচার: সরকারি দল বা সমর্থিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ত্রাণ চুরির অভিযোগের বিষয়ে কি বলবেন?

ওবায়দুল কাদের : সারা দেশের ৬২ হাজার জনপ্রতিনিধির সবাই যে ভালো এমন দাবি করছি না। কিছু মানুষ ত্রাণ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছে। কিন্তু সরকার তাদের শাস্তির মুখোমুখি করেছে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না।

 

নোয়াখালী সমাচার: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, গত ১২ বছরে আওয়ামী লীগের অন্তত ১২ লাখ লোক ধনী হয়েছে। তারা জনগণের পাশে থাকলেই গরিব মানুষের আর কোনো সমস্যা থাকত না...

ওবায়দুল কাদের : গত এক যুগ বা ১২ বছরে শুধু ১২ লাখ লোকের উন্নতি হয়েছে ফখরুল সাহেবের এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। এসব অভিযোগ অর্থহীন। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের চরিত্র হননের জন্য ফখরুল সাহেবরা এসব বলছেন। তা ছাড়া আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি এমন অভিযোগও সঠিক নয়। অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে সার্বিকভাবে দেশের। ১২ লাখ লোকের উন্নতি হলে দারিদ্র্য ১০-১২ পারসেন্টে নেমে আসত না। শেখ হাসিনার সরকার ধনী বা বড়লোক বানানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে না। দারিদ্র্য দূর করার জন্য কাজ করছে। আমি তাহলে জানতে চাই, ক্ষমতায় থাকাকালে ফখরুল সাহেবের সরকার দেশের উন্নতির জন্য কী কাজ করেছিল? রাজনীতি করেন বলে আজ তাঁরা অনেক কথাই বলছেন। কিন্তু ক্ষমতায় থাকাকালে তাঁরা কী করেছেন, তা এ দেশের মানুষ জানে। আর জানে বলেই তাঁদের মিথ্যা অভিযোগে জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। আমরা সবাই জানি, করোনা মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোরও কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না। সেখানে বাংলাদেশের মতো একটি দেশ যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে, তাতে বিশ্বের অনেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।

 

নোয়াখালী সমাচার: বর্তমান সরকারকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন একটি রাজনৈতিক সরকার বলে মনে করা হয়। কিন্তু অনেকের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মন্ত্রী, এমপি বা রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায় সরকার বা প্রশাসনকে বেশি সম্পৃক্ত করা হয়েছে...

ওবায়দুল কাদের : এমন অভিযোগ সঠিক নয়। প্রশাসনের কাজ প্রশাসন করছে। আর আওয়ামী লীগের দলীয়ভাবে যেটি করার দরকার, সেটি আওয়ামী লীগ করছে। সবচেয়ে বড় কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন, কাকে দিয়ে কোন কাজটা করানো দরকার। সার্বক্ষণিকভাবে তাঁর সেদিকে নজর রয়েছে। দলীয় কাজও তিনি মনিটর করছেন।

 

নোয়াখালী সমাচার: করোনায় ভবিষ্যৎ বিশ্ব পরিস্থিতি কী দাঁড়াতে পারে?

ওবায়দুল কাদের : করোনায় পুরো পৃথিবীর চেহারা বদলে যাবে। জীবন আর আগের মতো থাকবে না। পৃথিবীর চেহারা ও রং বদলে গিয়ে নতুন এক পৃথিবীর গল্পগাথা তৈরি হবে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা—সর্বোপরি জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তন ঘটে যেতে পারে। সে জন্য ধৈর্য ধরে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই বলছেন, করোনা খুব সহজে দূর হয়ে যাবে—এটি মনে করার কোনো কারণ নেই। কোরিয়া, থাইল্যান্ডসহ কিছু দেশ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সফলতা দেখিয়েছে। কিন্তু সেকেন্ড ওয়েভ কখন শুরু হবে বলা যায় না। রাশিয়া ও ব্রাজিলে যেমনটি ঘটেছে। তার পরও আমরা বাংলাদেশ পরিস্থিতি বেশ ভালোভাবেই মোকাবেলা করছি।