ব্রেকিং:
সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই অবশেষে ন্যাটোর সদস্যপদ পেলো সুইডেন বাজারে নেই নতুন দামের সয়াবিন তেল, দাম বেড়েছে সবকিছুর ভারতে পর্যটককে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ৮ কার্গো জাহাজে হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ৩ চলছে কর্মযজ্ঞ, অক্টোবরে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল চালু আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন রাষ্ট্রপতি গার্ডেন থিয়েটার কুমিল্লার একক নাট্য প্রদর্শনী
  • মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

সংকট উত্তরণের বাজেট

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২৩  

দ্রব্যমূল্যের চাপে থাকা মানুষের অস্বস্তি ও অর্থনৈতিক কঠিন চাপের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। যার মূল লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা। জাতীয় সংসদে সরকারের বর্তমান মেয়াদের শেষ বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি দেশের ৫২তম এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৩তম বাজেট।

আকারের দিক থেকে এটিই হবে দেশের বৃহত্তম বাজেট।

 

এমন এক সময়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট ঘোষণা করছেন, যখন নিত্যপণ্য, জ্বালানি ও পরিবহন ভাড়া থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছুর উচ্চমূল্যে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এবারের বাজেট বাস্তবতা হবে অনেকটা দড়ির ওপর ভারসাম্য রাখার মতো। এ জন্য চলমান সংকট উত্তরণকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে নতুন বাজেটে।

বাজেটে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের সঙ্গে যে লক্ষ্যমাত্রাগুলো অঙ্গীকার করা হয়েছে, সে বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পেতে পারে।

 

‘উন্নয়নের দেড় দশক : স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ এই প্রতিপাদ্যে বাজেট বক্তব্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, জাতীয় নির্বাচনের বছরে অর্থনৈতিক কার্যক্রম চাঙ্গা করতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের বিশাল বর্ণনা তুলে ধরবেন অর্থমন্ত্রী।

আগামী অর্থবছরে তিন হাজার ৯০০ কোটি টাকা অনুদানসহ আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আয় করতে হবে চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর থেকে আসবে ২০ হাজার কোটি টাকা ও কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে চার লাখ ৩৬ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মতো খাতে বরাদ্দের বড় কোনো পরিবর্তন হবে না।

 

গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের (পিইবি) চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবারের বাজেট তিনটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে হচ্ছে। প্রথমত, আমরা অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি।

দ্বিতীয়ত, উচ্চ মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) বিশাল ঘাটতির মুখে পড়েছে দেশ। এই তিনটি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েই বাজেট করতে হবে। এ ছাড়া আইএমএফের কিছু শর্ত আছে, যেগুলো কিছুটা হলেও বাজেটের মধ্যে আসবে।’

 

অগ্রাধিকারে থাকা বিষয়গুলো : মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, রাজস্ব আদায় বাড়ানো, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখা, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ানোয় জোর দেওয়া হচ্ছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখা, বিনিময় হার পতন ঠেকানো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বিস্তৃত করা ও ন্যায্য মূল্যে খাদ্যপণ্য সরবরাহ বাড়ানো, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, সার ও কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বাড়ানোকে চ্যালেঞ্জ মনে করা হচ্ছে।

বিশাল আকারের ঘাটতি : ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দুই লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার (অনুদান ছাড়া) ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেবে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেবে ৮৬ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেবে ৪৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেবে ২৩ হাজার কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেবে ১৮ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাত থেকে নেবে আরো পাঁচ হাজার কোটি টাকা। নিট বৈদেশিক ঋণ নেবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

দেশে বর্তমানে প্রায় ৮৮ লাখ মানুষের টিআইএন আছে। তবে তাদের মধ্যে কর রিটার্ন জমা দিয়েছে মাত্র ৩০ লাখ মানুষ। যারা রিটার্ন জমা দেয়, তাদের অনেকেই কর প্রদান করে না। কারণ তাদের আয় করযোগ্য নয়। তবে করমুক্ত আয়সীমা বর্তমানে তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য আগামী তিন বছরে তিন লাখ ইএফডি স্থাপন করা হবে। বর্তমানে ৯ হাজার ইএফডি চালু আছে। একই সঙ্গে ২০২৬ সালের মধ্যে টিআইএনধারীর সংখ্যা এক কোটিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

করের আওতা বাড়ছে : আইএমএফের শর্তানুযায়ী, প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে করদাতা বাড়াতে হবে। এ ছাড়া ২০২৬ সালের মধ্যে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চূড়ান্ত উত্তরণের জন্য আরো কিছু বাধ্যবাধকতাও মানতে হবে, যার বহুমুখী প্রভাবে জনগণের ওপর করের চাপ বাড়বে। এনআইডি কার্ডের অধিকারী সবাইকে করের আওতায় আনার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। তবে যাদের টিআইএন রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের সবাইকে ৪৪ ধরনের সেবা নিতে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা হারে আয়কর প্রদানও বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। বাড়তি কর আদায়ে করজালে আসছে গ্রামের মানুষও। সেখানে কর এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে এনবিআরের।

আইএমএফের শর্তপূরণ : আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিতে ছোট-বড় ৩৮টি শর্ত আরোপ করেছে। প্রধান শর্ত হচ্ছে ভর্তুকি কমানো ও রাজস্ব বাড়ানো। সংস্থাটির অন্যান্য শর্তের মধ্যে আছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ, সুদের হার বাজারমুখী করা, ডলারের বিপরীতে টাকার মান পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া, একক বিনিময় হার চালু ইত্যাদি।

আইএমএফের শর্ত পূরণে ভর্তুকি কমাতে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে। জ্বালানি তেলে ভর্তুকি উঠে গেলে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে।

যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে : ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে কলম, সিগারেট, জর্দা-গুল, খেজুর, সিমেন্ট, কাজুবাদাম, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, টয়লেট টিস্যু, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, বিদেশি টাইলস, মোবাইল ফোনসেট, বাসমতী চাল, চশমার ওপর শুল্ক-কর অথবা ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। এ ছাড়া প্লাস্টিকের তৈরি সব ধরনের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রীর জন্যও অতিরিক্ত ২ শতাংশ ভ্যাট গুনতে হবে। কারণ এসব পণ্য উৎপাদনে ভ্যাট বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এসব পণ্য উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে। অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি গৃহস্থালি সামগ্রী ও তৈজসপত্রে ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে কিচেন টাওয়েল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু/পকেট টিস্যু ও পেপার টাওয়েল উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে। এটি বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে তাজা ও শুকনা খেজুর আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়ছে।

দেশে বাদাম চাষকে উৎসাহিত করতে কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ শতাংশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

শুল্ক ফাঁকি রোধে নতুন অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের ওভেন আমদানির শুল্ক ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে মোট করহার ৮৯.৩২ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে বিদেশি ওভেনের দাম বাড়তে পারে।

বর্তমানে রান্নায় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়। আগামী অর্থবছরের বাজেটে সিলিন্ডার উৎপাদনে ব্যবহৃত স্টিল ও ওয়েল্ডিংওয়্যার আমদানিতে শুল্ক আরোপ এবং উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে সামনে সিলিন্ডারের দাম বাড়তে পারে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়তে পারে। নিম্ন স্তরের এক প্যাকেট (২০ শলাকার) সিগারেটের (হলিউড, ডার্বি) দাম ৯০ টাকা, মধ্যম স্তরের (স্টার, নেভি) সিগারেটের দাম ১৩৪ টাকা, উচ্চ স্তরের (গোল্ডলিফ) সিগারেটের দাম ২২৬ টাকা এবং অতি উচ্চ স্তরের (বেনসন, মালবোরো) সিগারেটের দাম ৩০০ টাকা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে বিড়ির দাম অপরিবর্তিত থাকবে।

মোবাইল ফোনসেটকে বিলাসী পণ্য বিবেচনায় নিয়ে বাজেটে ভ্যাট আরোপ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়ছে। বর্তমানে মোবাইল ফোনসেট উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি আছে। সেখানে ২ শতাংশ ভ্যাট বসানো হচ্ছে। সংযোজন পর্যায়ে ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে। এ কারণে খুচরা পর্যায়ে মোবাইল ফোনসেটের দাম বাড়তে পারে।

কলম উৎপাদনে বর্তমানে ভ্যাট অব্যাহতি আছে। সেখানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে কলমের দাম বাড়তে পারে। চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাস আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সিরিশ কাগজ আমদানিতেও শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে।

নতুন বাজেটে বাড়ির নির্মাণ খরচ বাড়বে। প্রধান উপকরণ সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে বর্তমানে টনপ্রতি ৫০০ টাকা শুল্ক আছে, এটি বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হচ্ছে। এ কারণে সিমেন্টের দাম বাড়তে পারে। বিদেশি টাইলস আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এ কারণে বিদেশি টাইলসের দাম বাড়তে পারে।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম : আগামী জুলাই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশনের কাজ শুরু করবে সরকার। প্রবাসী, বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক চাকরিজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত ব্যক্তি ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতাভুক্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক প্রডাক্ট নিয়ে জুলাই মাসের শুরু থেকেই ঢাকাসহ সারা দেশে পাইলট আকারে সর্বজনীন পেনশনে দেশের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ শুরু হবে। তবে যে কর্তৃপক্ষের অধীন সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থা চালু হবে, তা এখনো গঠন করা হয়নি। এমনকি প্রডাক্টগুলো এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

অর্থনীতিবিদরা যা বলছেন : সরকারের আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য আনতে গিয়ে পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধিতে মূল্যস্ফীতির হারে বাড়তি চাপ পড়বে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরো বাড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেটে নিম্নমধ্যবিত্তের ওপর চাপ বাড়বে। তারা জীবনধারণের জন্য যেসব পণ্য ক্রয় করে, সেগুলোর মূল্য সাধারণ মূল্যস্ফীতির চেয়ে দুই-তিন গুণ বেড়ে গেছে। এতে তাদের ক্রয়ক্ষমতার অবনমন হয়েছে।

এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, রাজস্ব বাড়াতে যেসব শিল্প পরিপক্ব হয়ে গেছে, সেখানে আর কর অবকাশ সুবিধা না দেওয়াই ভালো। মূল্যস্ফীতি কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ থাকবে বলে আশা করি। সংকটকালে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে ব্যয়ের দিকে যাওয়া যাবে না। ব্যয়কে যৌক্তিক করে কৃচ্ছ্রসাধনের মাধ্যমে বাজারে অপ্রয়োজনীয় কিংবা কম প্রয়োজনীয় অর্থপ্রবাহ এড়াতে হবে। বাজেটে কিছু কার্যকর ঘোষণা থাকা দরকার, যা বাজারে ইতিবাচক বার্তা দেয়। মূল্যস্ফীতি যাতে আর না বাড়ে তার জন্য বাজারব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক বজায় রাখতে হবে। কৃষি ও খাদ্যে সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমদানির আড়ালে অর্থপাচারের মাধ্যমে ডলারের প্রচুর চাহিদা বেড়ে যায়। সেটা মনিটরিংয়ের জন্য বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।