ব্রেকিং:
দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
  • শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বাস্তবে দেখা মিলল নাগ-নাগিনীর

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০১৮  

নাগ-নাগিনী বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত একটি সাপের নাম। যদিও বেশির ভাগ মানুষ এ সাপকে দেখেনি। তবে এ সাপকে নিয়ে বিভিন্ন গল্প, সাপুড়েদের চটকদার কথা এবং সিনেমা তৈরি হয়েছে।

বেহুলা-লখিন্দর থেকে শুরু করে কালনাগিনীর প্রেম, নাগ নাগিনী, শীষনাগ, নাগিনী কন্যা, নাগ পূর্ণিমা, নাগরানী, সতী নাগকন্যা, নাগমহল, নাগিনা, নাগজ্যোতি, নাচে নাগিন, রূপসী নাগিন ও নাগিনী সাপিনী এমন অসংখ্য সিনেমা তৈরি হয়েছে নাগ-নাগিনীর নামে।

সাপুড়েরা হাটেঘাটে এ সাপকে বিষাক্ত বলে পরিচয় করিয়ে দেন। গ্রামবাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে সাপটিকে উড়ন্ত সাপ, উড়াল মহারাজ সাপ, সুন্দরী সাপ, কালসাপ ও কালনাগ বলে ডাকা হয়। সেই সঙ্গে নাগ-নাগিনীর বিষে মানুষের মৃত্যু হয় বলেও কথিত আছে। যদিও বাস্তবতা হচ্ছে এসব গল্প-কাহিনি এবং সিনেমা শুধুই কাল্পনিক। বাস্তবে সাপটি সম্পূর্ণ বিপরীত।

প্রাণিজগতের সবচেয়ে সুন্দর সাপগুলোর মধ্যে অন্যতম এ সাপ। যার ইংরেজি নাম হলো- (Ornate Flying Snake) ও বৈজ্ঞানিক নাম (Chrysopelea ornata)।

ইংরেজিতে (Flying Snake) নাম হলেও সাপটি বাস্তবে উড়তে পারে না। খাদ্যগ্রহণ, বৈশিষ্ট এবং চরিত্রগত কারণে উঁচু গাছের ডাল থেকে নিচু গাছের ডালে লাফ দিয়ে চলাফেরা করে সাপটি। এ সাপটির বিষক্রিয়া নেই। এদের বিষে কারও মৃত্যু হয়েছে এমন কোনো তথ্য নেই। শুধু কাল্পনিকভাবেই সাপটিকে বিষধর এবং বিভিন্ন গল্প-কাহিনিতে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়।

ফলে ভয়ঙ্কর ধারণা থেকেই সাধারণ মানুষ যখনই সাপকটিকে দেখে বিষাক্ত ভেবে মেরে ফেলে। তাই এ প্রকৃতির নাগ-নাগিনী সাপ দ্রুত কমে যাচ্ছে।

যদিও এবার বাস্তবে মৌলভীবাজারের রাজনগর চা বাগানে এ সাপের দেখা মিলেছে। এর আগে লাউয়াছড়া, সাতছড়ি, রেমা-কালেঙ্গা বনে প্রচুর পরিমাণ এ সাপের দেখা মিলত।

এর আগে সিলেটের চা বাগানসহ মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানে সাপটির দেখা মিললেও বর্তমানে তেমন দেখা যায় না। তবে গভীর বনে এদের দেখা মেলে। এদের দৈর্ঘ্য ১০০ থেকে ১৭৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। মাথা লম্বা ও চ্যাপ্টা এবং মুখের সামনের দিকে চৌকোনা আকৃতির। এদের দেহের রঙ পিঠের দিকে সবুজ। আবার হালকা সবুজ রঙের এবং কালচে ডোরাযুক্ত হয়। ঘাড় থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত মেরুদণ্ড বরাবর কমলা রঙের এবং লাল দাগ দেখা যায়।

এরা সাধারণত পোকামাকড়, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ ও ছোট পাখি ইত্যাদি খায়। জুন থেকে জুলাই মাস এদের প্রজনন মৌসুম। প্রজননের সময়ে এরা সাধারণত ৬ থেকে ১২টি ডিম দেয়।

‘সাপ বেঁচে থাকুক আমাদের প্রয়োজনে’ স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশে সাপের ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে দেশের আনাচে-কানাচে কাজ করে যাচ্ছেন কামরুজ্জামান বাবু এবং প্রসেনজিৎ দেববর্মা।

তারা বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য সাপকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। কিন্তু জীববৈচিত্র্যের এ গুরুত্বপূর্ণ সাপটি নিয়ে রয়েছে আমাদের অজ্ঞতা। নাগ-নাগিনী বলতে কোনো সাপ নেই, এই সুন্দরীকে সাপকেই বলা হয় নাগ-নাগিনী। এদের বিষ নেই। কুসংস্কার ও বিভিন্ন সিনেমায় সাপটিকে ভুলভাবে উপস্থাপনের কারণে মানুষের মনে ভুল ধারণা জন্মেছে। সাপটিকে দেখলেই মেরে ফেলছে মানুষ। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সাপটি। যদিও মাঝে মাঝে চা বাগানে সাপটিকে দেখা যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. কামরুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, নাগ-নাগিনী বা কাল-নাগিনী নাম দিয়ে এ প্রকৃতির সাপকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এদের জীবন হুমকিতে ফেলা হয়েছে। এ সাপের বিষক্রিয়া নেই। কেউ বলতে পারবে না এ সাপের কারণে কারও মৃত্যু হয়েছে। সাপ সম্পর্কে কুসংস্কার দূর করে মানুষ সচেতন হলেই রক্ষা পাবে নাগ-নাগিনী তথা এ প্রকৃতির সাপ।