ব্রেকিং:
জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল ঋণ শোধের সক্ষমতা অর্জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নোয়াখালীতে হেরে গেলেন ওবায়দুল কাদের পতেঙ্গায় আগুন ধরে প্রশিক্ষণ বিমান কর্ণফুলীতে, ২ পাইলট আহত লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টিতে ভোটার শূন্য কেন্দ্র সুবর্ণচরে এক বুথে ঘণ্টায় পড়ল ১ ভোট ছেলের বিরুদ্ধে ভোট করলে ইউনিয়নে উন্নয়ন বন্ধ করার হুমকি এমপিপত্নীর নোয়াখালীতে ভোটের আগের রাতে টাকা বিতরণের অভিযোগ আওয়ামী লীগে স্বজনদের নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসী নিহত উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি, আ.লীগ নেতাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা নোয়াখালীর চরজব্বার থানার ওসি প্রত্যাহার
  • শনিবার ১১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

  • || ০২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দখলদারদের কবলে ফেনী নদী

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২  

উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকার বড় ফেনী নদী দখল করে মৎস্য চাষ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সোনাগাজী ও চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার একটি অংশ দিয়ে বয়ে চলা এই নদীর তীর দখল করে কিছু ভূমি সরকারি নিয়মনীতি মেনে লিজ দেওয়া হলেও সিংহভাগ ভূমি প্রভাবশালী চক্র দখল করে মৎস্য খামারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। গত তিন বছর পাউবোর ইজারাকৃত ভূমি নবায়ন না হলেও দখলদাররা ম্যানেজ করে মৎস্য চাষ করে যাচ্ছে হরহামেশাই। সোনাগাজীর উপকূলীয় এলাকাকে নদীভাঙন থেকে রক্ষা করতে ১৯৮৬ সালে সাড়ে তিন কিলোমিটার বাঁধে মুহুরী সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়। পরে প্রকল্পের উজানে প্রায় ১২ কিলোমিটার চর জেগে ওঠে। ১৯৮৭ সালের পর ওই চরের কিছু অংশ ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে লিজ নিয়ে সিংহভাগ দখল করে প্রভাবশালীরা মাছ চাষের প্রকল্প গড়ে তোলে। সরজমিন দেখা গেছে, সোনাপুর-সোনাগাজী-জোরারগঞ্জ সড়কের মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকার উজানের সংযোগস্থলের উভয় পাশে চক্রটি বড় ফেনী নদীর তীরে বাঁধ দিয়ে অন্তত ৫০০ একর নদী দখল করে পুকুর কেটে মৎস্য চাষ করছে। সেচ প্রকল্প এলাকায় ২৫টি দোকান ও ভাটিতে শতাধিক ছোট ছোট ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ ও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা জেলেরা সেখানে রেণু পোনা আহরণ করে চটগ্রাম অঞ্চলে বিক্রি করে। আর এ জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মাসোহারা দিতে হয় বলে জানান দোকানদাররা।

এ দিকে, দখলের কারণে বড় ফেনী নদী সংকুচিত হয়ে উজান থেকে পানির প্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে পানির চাপ বেড়ে মুহুরী বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। লিজ নেয়া সরকারি ভূমিতে স্থায়ী অবকাঠামো তৈরি ও খনন করে পুকুর বা দিঘি তৈরিতে বিধিনিষেধ থাকলেও সেখানে ইট দিয়ে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ এবং ভূমি খনন করে বড় বড় পুকুর করা হয়েছে । স্থানীয় আবদুল মোতালেব বলেন, প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রভাবশালী চক্র বিভিন্ন কৌশলে ক্রমাগত নদী দখল করছে তারা। এরই মধ্যে মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকার উজানে বড় ফেনী নদীর বিশাল অংশে মাছের খামার দিয়ে দখল করেছে তারা । এভাবে দখল হলে বড় ফেনী নদী এক সময় নালায় পরিণত হবে। মুহুরী বাঁধের উজানের পশ্চিম পাশে স্থানীয় মেম্বার দুলাল, নিজাম উদ্দিন, রুমন, সেলিম চৌধুরী, হুমায়ুন কবির, আবু তৈয়ব আজাদসহ অন্তত ৫০ ব্যক্তি কয়েকশ’ একর ভূমি দখল  করে মাছ চাষ করছেন। বাঁধের পূর্ব অংশের চর দখল করে মৎস্য খামার গড়ে তুলেছেন আমিরাবাদ ইউপি সদস্য আহসান উল্লাহ, মাইনুল হোসেন, মোস্তফা সওদাগর, জাহাঙ্গীর সওদাগর, কামাল উদ্দিন, বদি সওদাগর, ফারুক সওদাগরসহ শতাধিক ব্যক্তি। তাদের দাবি, তারা ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লিজ নিয়েছেন। মুহুরী বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, নদী দখল রোধ করতে কয়েক বছর আগে অভিযান চালালে হামলায় পুলিশসহ ১০ জন আহত হন। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিলেও প্রভাবশালী হওয়ায় নদী দখলের অপতৎপরতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সোনাগাজী অঞ্চলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নুর নবী বলেন, কিছু ভূমি সরকারি নিয়মনীতি মেনে লিজ দেওয়া হয়েছে, তবে অনেকে অতিরিক্ত ভূমি দখল করে মৎস্য খামারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। আমরা পুলিশ নিয়ে কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অফিস থেকে মামলা দেয়া হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন, নদী দখলকারীরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে নদী দখলমুক্ত করা হবে। সোনাগাজী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম অনীক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন বিএসরেকর্ড পেন্ডিং থাকার কারনে ভূমি নির্ধারণ করা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে নদী উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাউবোর ফেনী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, গত ৩ বছর ধরে সরকার তাদের ইজারা নবায়ন করেনি। নবায়নের জন্য কাগজপত্র কুমিল্লা চীপ অফিসে পাঠানো হলেও তা এখনো অনুমোদন হয়ে আসেনি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। আমরা ইচ্ছে করলেই তা পারি না।