ব্রেকিং:
লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টিতে ভোটার শূন্য কেন্দ্র সুবর্ণচরে এক বুথে ঘণ্টায় পড়ল ১ ভোট ছেলের বিরুদ্ধে ভোট করলে ইউনিয়নে উন্নয়ন বন্ধ করার হুমকি এমপিপত্নীর নোয়াখালীতে ভোটের আগের রাতে টাকা বিতরণের অভিযোগ আওয়ামী লীগে স্বজনদের নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসী নিহত উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি, আ.লীগ নেতাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা নোয়াখালীর চরজব্বার থানার ওসি প্রত্যাহার নোবিপ্রবিতে চালু হলো প্রথমবারের মতো পিএইচডি প্রোগ্রাম তিন রাত শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মাসহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ র‍‍্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়া ফাঁদ সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া?
  • বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পিয়নের চাকরি করে একাধিক বাড়ী, গাড়ীসহ অঢেল সম্পদের মালিক

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০১৯  

সরকারি অফিসের দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারীর আলিশান বাড়ি। চড়েন ব্যক্তিগত দামী গাড়িতে। রয়েছে রড, সিমেন্ট, মুদি মালামাল, গাড়ির ব্যবসাসহ মাছ ও গরুর খামার এবং বিঘা বিঘা সম্পত্তি। একসময় আকিজ ট্যোবাকো কোম্পানির হাজীগঞ্জ ডিলারের অধিনে সেলসম্যানের চাকুরি করেছেন। ৯ বছর আগে পেয়েছেন সরকারি অফিসে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক মাত্র ৫৫০ টাকা বেতনের চাকরি। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। চাকুরি নয়, যেন হাতে পেয়েছেন ‘আলাদিনের চেরাগ’।

ইতিমধ্যে এলাকায় দানবির হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। বাড়ির সামনে পাঞ্জেগানা মসজিদের ইমামের মাসিক বেতন ৫ হাজার টাকা তিনি একাই দিয়ে (পরিশোধ) করে থাকেন। অথচ তিনি নিজেই বেতন পান মাত্র ১২ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়। চাকরি পাওয়ার পর, তিনি তার বড় দুই ভাইকে বাহরাইন ও কাতারে নিজ খরছে পাঠিয়েছেন। যদি বাহরাইন যিনি গিয়েছেন, তিনি বর্তমানে এলাকায় মুদি মালের ব্যবসা করছেন। ওই দুই ভাই পালিত বাবা মৃত ইসমাঈল হোসেনের সন্তান নয়। তার জন্মদাতা বাবা মৃত, এই ঘরে তারা পাঁচ ভাই। চাচা ইসমাঈল হোসেন নিঃসন্তান ছিলেন। তাই বড় ভাইয়ের ছোট ছেলেকে দত্তক নিয়েছে।

বলছি, বিল্লাল হোসেন খন্দকারের কথা। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ব্রক্ষ্মপাড়া গ্রামের খন্দকার বাড়ির মৃত ইসমাঈল হোসেনের পালিত ছেলে। তিনি রামগঞ্জ উপজেলায় হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে কনজেন্সী স্টাফ (দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে হাজীগঞ্জে ৭ তলা বিশিষ্ট একটি আলিশান ভবনে বসবাস করছেন। হাজীগঞ্জ থেকে দৈনিক ব্যক্তিগত গাড়ীতে চড়ে রামগঞ্জ গিয়ে অফিস করেন। তার (বিল্লাল হোসেন) রয়েছে, হাজীগঞ্জে খন্দকার আরিয়ান প্লাজা নামক ৭ তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ী (২০১৭ সালে নির্মিত), গ্রামের বাড়ীতে (রামগঞ্জের ব্রহ্মপাড়া গ্রাম) একতলা বিশিষ্ট একটি ভবন। তিনতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষের পথে। আরিয়ান এন্টার প্রাইজ নামে রড-সিমেন্ট ও জিহাদ এন্টার প্রাইজ নামের মুদি মালামালের দোকান এবং কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ভাড়া দিয়েছেন। রয়েছে গরু ও মাছের খামার। অভিযোগ রয়েছে, নিজ ও স্ত্রী এবং আত্মীয়-স্বজনের নামের রামগঞ্জ, হাজীগঞ্জ এমনকি শশুর বাড়ী ফরিদগঞ্জে বিঘা-বিঘা সম্পত্তি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা গরিব ছিলেন। বিল্লাল সরকারি চাকরি পাওয়ার পর, ভাগ্যের বদল হয়েছে। কথা হয়, বিল্লাল খন্দকারের বড় ভাই হান্নানের সাথে। তিনি জানান, তাদের আর্থিক অবস্থানের পরিবর্তন হওয়ায় গত দুই বছর ধরে বিভিন্নভাবে লোকজন (সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা) এসে তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তিনি বলেন, তারা পাঁচ ভাই। তার মধ্যে ছোট ভাই বিল্লাল খন্দকারকে চাচা ইসমাঈল খন্দকারের কাছে দত্তক দেওয়া হয়েছে। কারন তিনি নি:সন্তান ছিলেন। হান্নান কনস্ট্রাকশনের কাজ করেন এবং অপর দুই ভাই কৃষি কাজ, এক ভাই মুদি দোকান এবং ছোট ভাই (বিল্লাল) সরকারি চাকরি করেন। তিনি জানান, রড-সিমেন্ট, মুদি মালামাল এবং গাড়ির ব্যবসা, মাছ ও গুরুর খামার যৌথভাবে (সব ভাইয়ের)। হাজীগঞ্জ এবং রামগঞ্জের বাড়িও যৌথভাবে নির্মিত। তবে বাড়ীতে নির্মানাধীন তিনতলা বাড়ীটি কাতার প্রবাসী ভাইয়ের। তারা সবাই বাড়িতে থাকেন, আর ছোট ভাই বিল্লাল হাজীগঞ্জে বাড়ীতে থাকেন।

হান্নান আরো বলেন, রড-সিমেন্ট, মুদি মালামালের ব্যবসা এবং মাছ ও গরুর খামার দেখাশুনার জন্য লোকজন (বেতনভুক্ত কর্মচারী) রয়েছে। তারা নিজেরাও দেখেন। সিএনজি রয়েছে ৪/৫ টা। যা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। মসজিদের ইমামের মাসিক বেতন বিল্লাল একাই পরিশোধ করে থাকেন বলে তিনি জানান। তবে বিল্লাল হোসেন খন্দকার জানান, হাজীগঞ্জের বাড়ীটি তার নিজস্ব। বাড়ীর সম্পত্তি পৈত্রিক (পালিত বাবার)। অথচ জানা গেছে এ সম্পত্তি পৈত্রিক সূত্রে নয়, ক্রয়সূত্রে মালিক তিনি। রড-সিমেন্ট, মুদি মালামালের ব্যবসাও তার নিজস্ব বলে স্বীকার করেন। ব্যাংক ঋণ নিয়ে তিনি বাড়ী-গাড়ি করেছেন বলে জানান।

হাজীগঞ্জে আকিজ ট্যোবাকোতে চাকরি করেছেন উল্লেখ করে বিল্লাল হোসেন খন্দকার বলেন, ৯ বছর আগে রামগঞ্জ উপজেলায় হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে চাকরি হয়েছে। এরপর তিনি নামাজের সময় হয়েছে বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে বার বার ফোন দিলেও তিনি মোবাইল ফোনটি রিসিভ করেন নি। রামগঞ্জ উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মীর সৈয়দ আহম্মদ জানান, কনজেন্সী ষ্টাপ হিসেবে দৈনিক ৫৫০ টাকা হাজিরা ভিত্তিক বিল্লাল হোসেন অস্থায়ী কর্মরত আছেন।