শ্বেতাঙ্গ পুরুষমুক্ত লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভার শীর্ষ ৪ পদ

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন লিজ ট্রাস। মূলত প্রত্যাশিতভাবেই রাজনৈতিক সহযোগী ও অনুগতদের নিয়ে তিনি তার মন্ত্রিসভা সাজিয়েছেন। তবে তার এ মন্ত্রিসভায় রয়েছে বেশ কিছু চমক।

সরকারের গুরুত্বপূর্ণ চার মন্ত্রণালয়ে কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ রাজনীতিক রাখেননি ট্রাস। ব্রিটেনের নতুন কোনো প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভায় কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ রাজনীতিক না থাকার ঘটনা এটাই প্রথম।

ঐতিহাসিকভাবে ব্রিটেনের সরকারগুলোর অধিকাংশ মন্ত্রীই হতেন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ। দেশটিতে জাতিগত সংখ্যালঘু থেকে মন্ত্রী নিয়োগ দিতে ২০০২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। ওই বছর কৃষ্ণাঙ্গ রাজনীতিক পল বোয়েটেং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

নেতৃত্বের দীর্ঘ লড়াইয়ে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান নির্বাচিত হন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এরপর মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল ঘটান ট্রাস। নতুন সরকারের এ মন্ত্রিসভায় একদিকে যেমন ঘনিষ্ঠ অনেকে ঠাঁই পেয়েছেন, তেমনি বাদ পড়েছেন প্রভাবশালী অনেক নেতা।

লিজ ট্রাস নিজে শ্বেতাঙ্গ হলেও নারী। নিজের মন্ত্রিসভার আরও তিন শীর্ষ পদে শ্বেতাঙ্গ পুরুষ রাজনীতিকের বদলে কৃষ্ণাঙ্গ রাজনীতিক ও নারীদের বেছে নিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর পর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার তথা অর্থমন্ত্রী। আর এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ রাজনীতিক কোয়াসি কোয়ার্টেং। এর মধ্য দিয়ে ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অর্থমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি। ১৯৬০-এর দশকে আফ্রিকার ঘানা থেকে ব্রিটেনে এসেছিলেন কোয়াসির বাবা-মা।

এরপর আরেক শীর্ষ পদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ নারী রাজনীতিক সুয়েলা ব্রেভারম্যান। এখন থেকে প্রায় ছয় দশক আগে কেনিয়া ও মরিসাস থেকে ব্রিটেনে এসেছিলেন সুয়েলার বাবা-মা।

আরেক গুরুত্বপূর্ণ পদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ রাজনীতিক জেমস ক্লেভারলি। একই সঙ্গে ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। এর আগে তিনি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ট্রাসের কাছের বন্ধু থেরেসে কফে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন যথাক্রমে বেন ওয়ালেস ও কিট মল্টহাউস।

এ ছাড়া আন্তঃসরকারি সম্পর্ক ও সমতাবিষয়ক মন্ত্রী নাদিম জাহাবি, জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী জ্যাকব রিস-মগ, সংস্কৃতিমন্ত্রী মিশেল ডনেলান, লেভেলিং আপ মন্ত্রী সাইমন ক্লার্ক, পরিবেশমন্ত্রী রনিল জয়াবর্ধনা, ওয়ার্ক অ্যন্ড পেনশন মন্ত্রী ক্লোয়ে স্মিথ, পরিবহনমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রেভেলিয়ান, নর্দান আয়ারল্যান্ডবিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস হিটন-হ্যারিস, স্কটল্যান্ডবিষয়ক মন্ত্রী অ্যালিস্টার জ্যাক ও ওয়েলসবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন স্যার রবার্ট বাকল্যান্ড।