ব্রেকিং:
জলদস্যুর কবলে পড়া সেই জাহাজ এখন বাংলাদেশের জলসীমায় কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বম গ্রেফতার নিজ এলাকায় পরবাসী হলেন ওবায়দুল কাদের দুই বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল ঋণ শোধের সক্ষমতা অর্জন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নোয়াখালীতে হেরে গেলেন ওবায়দুল কাদের পতেঙ্গায় আগুন ধরে প্রশিক্ষণ বিমান কর্ণফুলীতে, ২ পাইলট আহত লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টিতে ভোটার শূন্য কেন্দ্র সুবর্ণচরে এক বুথে ঘণ্টায় পড়ল ১ ভোট ছেলের বিরুদ্ধে ভোট করলে ইউনিয়নে উন্নয়ন বন্ধ করার হুমকি এমপিপত্নীর নোয়াখালীতে ভোটের আগের রাতে টাকা বিতরণের অভিযোগ আওয়ামী লীগে স্বজনদের নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসী নিহত উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীতে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি দুপুরের মধ্যে ১৫ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস তেলের দাম বাড়াল সৌদি ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি, আ.লীগ নেতাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা নোয়াখালীর চরজব্বার থানার ওসি প্রত্যাহার
  • রোববার ১২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৯ ১৪৩১

  • || ০৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেসম্পর্কোন্নয়নের সুবাতাস

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২৩  

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে যে উদ্বেগে ছিল বাংলাদেশ, ওই নিষেধাজ্ঞার মেঘ সরে ঝলমলে সূর্য উঁকি দিচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। দিল্লিতে বৈশ্বিক সম্মেলন জি-২০ তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচনা, ওয়াশিংটনে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক, হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কারবির সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কোন্নয়নের জোর- সব মিলিয়ে ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্কের বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে প্রথমবারের মতো স্বীকার করা হয় যে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কারবি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো উন্নয়নের ওপর জোর দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা হোয়াইট হাউসের। ওয়াশিংটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জ্যাক সুলিভানের বৈঠকে দুদেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় সে বিষয়েও আলোচনা করেছেন তারা। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতেও কথা হয়েছে।
২৭ সেপ্টেম্বর এই বৈঠক হওয়ার পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সরকার বৈঠকটির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য রাখেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এ নিয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। গত মঙ্গলবার সাভারের আমিনবাজারে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা হয়ে গেছে। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরপরই হোয়াইট হাউসে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগ বিষয়ে সমন্বয়কারী জন কিরবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জ্যাক সুলিভানের বৈঠকের কথাটি নিশ্চিত করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্যাক সুলিভান ব্যক্তি হিসেবে নয় বরং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ এবং তিনি বহির্বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান, ভূমিকা এবং করণীয় নির্ধারণ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোন দেশের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্কে জড়াবে সেই বিষয়টিও নির্ধারণ করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা।
আমেরিকার সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা ভিসানীতিকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছি। আমেরিকা কার ওপর, কতজনের ওপর স্যাংশন দিয়েছে- এটি তারা বলেনি। কখনো বলবেও না। এটি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আর্থিক-বাণিজ্যিক সম্পর্কসহ বহু রকমের রয়েছে। আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান, সম্ভাবনাময় অর্থনীতি এবং বঙ্গোপসাগরের প্রতি বৈশ্বিক আগ্রহ- এসব কারণে রাজনৈতিক মেরুকরণের নতুন ক্ষেত্র হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ না চাইলেও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের কারণে স্বাভাবিকভাবেই সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার ভোরের কাগজকে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর দিয়ে আমেরিকার মতো একটা বড় শক্তি যখন কথা বলে, তখন অনেক অর্থ থাকে। পরাশক্তি হিসেবে আমেরিকা নিশ্চয়ই কোনো দলের পক্ষে একক সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে নেই। তাদের এমন মন্তব্যে নিশ্চয়ই কোথাও যোগসূত্র রয়েছে। আমেরিকাও বড় শক্তি হিসেবেই বাংলাদেশকে দেখছে।
এদিকে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো ভিসানীতি নতুন করে ঘোষণা প্রসঙ্গ। বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচনের অজুহাত তুলে ২৪ মে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ঘোষণার প্রায় চার মাস পর গত ২২ সেপ্টেম্বর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেয়া শুরুর কথা জানায় দেশটি। তবে আমেরিকার এই ভিসানীতি বন্ধুসুলভ নয় বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, ভিসানীতির প্রয়োজন ছিল না। তারা চাইলে কাউকে ভিসা দিতে পারে, না দিলে নাই দিতে পারে। ভিসানীতি মোটেই বন্ধুসুলভ আচরণ নয়। আমাদের দেশের চেয়ে অনেক খারাপ দেশ আছে, তাদের নিয়ে আমেরিকার কোনো মাথা ব্যথা নেই। সেখানে কিছু করছে না। সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, দেশের মানুষ সবাই সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কোন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এখন ওয়াশিংটনের এই বার্তা অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। তবে আমি মনে করি, কে কী বলল, তাতে হইচই না করে নিজেরা সবাই মিলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া এবং সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়াই শ্রেয়।