ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

৫০ বছর ধরে কাঁদছেন লক্ষ্মীপুরের-মেঘনার স্বজনহারা উপকূলবাসী

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২০  

আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর। বাংলাদেশের উপকূলবাসীর স্বজন হারানোর দিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে এক মহাপ্রলয়ংকরি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লন্ড-ভন্ড হয়ে যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা। ওই প্রাকৃতির দুর্যোগের ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, সদর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার মেঘনা উপকূলবাসী এখনো অরক্ষিত।

ভয়াল ১২ নভেম্বর উপকূলবাসীর বেদনার দিবস হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মহামারী করোনা সংকট। প্রতি বছর এ দিনটি পালন উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর সদর ও কমলনগর ও রায়পুরে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। স্বজনহারা মানুষগুলো বাড়িতে ফাতিহা আর দোয়া ছাড়া কিছু করতে পারছে না।
ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম জেলার একাংশসহ পুরো উপকূলীয় অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় ঝড়ে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে। সেই স্মৃতি নিয়ে আজো যারা বেচেঁ আছেন অথবা স্বজন হারিয়েছেন, বিভীষিকাময় এ দিনটির কথা মনে করেই আতঙ্কে শিউরিত হন।

জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ২০১৭ সালের ১৮ মে এক ঘোষণায় ১৯৭০ সালের ঝড়টিকে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতি ঝড় হিসেবে ঘোষণা দেয়। তখন ধারণা করা হয়েছিল, প্রলয়ঙ্করী এই দুর্যোগে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। কিন্তু তৎকালীন বিভিন্ন বিশ্বমিডিয়া থেকে তিন থেকে পাঁচ লাখ লোক নিহত হওয়ার খবর প্রচারিত হয়েছিল।

লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। স্রোতে ভেসে যায় নারী শিশু ও বৃদ্ধসহ অসংখ্য মানুষ। সে রাতে এ জেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসে রামগতির মেঘনা উপকূলীয় চরআবদুল্লাহ এবং কমলনগরের ভুলুয়ানদী উপকূলীয় চরকাদিরা সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় হানা দেয়। চারিদিকে লাশ আর লাশ, লাশের গন্ধে মানুষ কাছে মানুষ যেতে পারেনি। ৩-১০ ফুটের জলাবদ্ধতা কারণে মৃত মানুষগুলোকে মাটি দেয়া যায়নি।

গত কয়েক বছরের মতো স্থানীয়ভাবে ৪র্থ উপকূল দিবস পালিত হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের কমলনগর প্রেস ক্লাব, রামগতি বাজার এবং রায়পুরের চরবংশী এবং লক্ষ্মীপুর অনলাইন সাংবাদিক ফোরাম ও সকাল থেকে এ দিবসটি পালন করেছেন। দিবস পালনকালে আলোচনা সভা, সেমিনার এবং দোয়া ও মোনাজাতসহ প্রার্থনা করা হয়েছে।

ঘুর্ণীঝড়ের ছোবলে ছেলে হারায় মাকে, মা হারান তার প্রিয় সন্তানদের, স্বামী হারান স্ত্রীকে, স্ত্রী হারান প্রিয় স্বামীকে। সেই ভয়াল রাতের স্মৃতি মনে পড়লে উপকূলবাসী এখনো আঁতকে ওঠে। সে প্রলয়ংকরি ঘূর্ণিঝড়ের ২৯ বছর অতিবাহিত হলেও কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের উপকূলবাসী এখনো অরক্ষিত। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। এখনো বিভিন্ন স্থানে খোলা রয়েছে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। ফলে উপকূলীয় লোকালয়ে নদীর পানি এখনো প্রবেশ করছে।

রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, গত ৫০ বছর ধরে তার এলাকার বেশী অংশজুরে বেড়িবাঁধ খোলা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন গণমাধ্য কর্মীদের জানান, রায়পুরের অনেক অংশে বেড়ি বাঁধ খোলা। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়ও রয়েছে। তবে কয়েকটি পয়েন্ট কাজ শুরু হবে।

১৯৭০ সালের এ দিনে সব চেয়ে বেশি প্রাণহানি ও ক্ষতিগ্রস্থ হয় লক্ষ্মীপুরের সদর, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা । চরবংশী ইউপির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লা জানান, এমন কোনো বাড়ি বা ঘর নেই, যেখান থেকে শত লোক মারা যায়নি। তাই দিনটি এলে প্রতিটি বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়।