ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

৪ হাসপাতালের তথ্য তলব দুদকের

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২০  

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দেশের চারটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেনাকাটা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চেয়ে নোটিশ দিয়েছে দুদক।

এসব হাসপাতালে মেডিকেল সামগ্রী ও ভারি যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি।

কলেজগুলো- শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।


দুদকের পরিচালক কাজী শফিকের তত্ত্বাবধানের সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে।

এই টিমের অপর সদস্যরা হলেন- উপপরিচালক শামসুল আলম, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী, উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন, শাহজাহান মিরাজ, ফেরদৌসী রহমান ও শহীদুর রহমান।

সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জন্য নিুমানের ও ব্যবহার অনুপযোগী যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র কেনায় ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ের অভিযোগ রয়েছে দুদকের হাতে। অন্যগুলোর মধ্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কেনাকাটায় হরিলুটের অভিযোগ রয়েছে।

ইতিমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়াসহ তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলাও করেছে দুদক। ওই মামলার তদন্ত চলমান।

মামলায় কেনাকাটার নামে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। সূত্র জানায়, ওই তিনটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দুদক আরও বেশ কিছু দুর্নীতির তথ্য পায়। তার আলোকে নতুন করে আরেকটি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

দুদকের এই অনুসন্ধানের বিষয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে কেনাকাটার নামে রাষ্ট্রের অর্থ তছরূপ করা হয়েছে। আমরা অনুসন্ধান ও তদন্ত করে দেখতে চাই এরা কারা। কীভাবে কারা সরকারের বরাদ্দের টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছে। জনগণের স্বাস্থ্যসেবার পরিবর্তে কতিপয় লোক তাদের সেবায় রাষ্ট্রের অর্থ হাতিয়ে নেবেন তাদের যে করে হোক আইনের আওতায় আনা হবেই।

এদিকে দুদক সূত্রে জানা যায়, অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মানিকগঞ্জে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষের কাছে নোটিশ পাঠানো হয় বৃহস্পতিবার।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিনের সই করা নোটিশে ২৫ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। তার মধ্যে আছে- কেনাকাটায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিভাগীয়/ শাখা প্রধান কর্তৃক চাহিদাপত্র।

তত্ত্বাবধায়কের চাহিদাপত্র, অনুমোদিত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ও বরাদ্দপত্র। এছাড়া বাজারদর কমিটির প্রতিবেদন, স্পেসিফিকেশন, দরপত্র ও দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটির প্রতিবেদন। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন।

এ ছাড়াও ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিপত্র ও কার্যাদেশ, প্রশাসনিক অনুমোদনসহ ব্যয় মঞ্জুরি, যন্ত্রপাতি সরবরাহের চালান, স্টক রেজিস্টার ও বিল ভাউচার।

দুদকের অনুসন্ধান ও নোটিশের বিষয়ে জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ডা. খান মো. আরিফ বৃহস্পতিবার বলেন, আমি এই মার্চে যোগদান করেছি। তবে সব কাগজপত্রই বুঝে নিয়েছি। তা আলমিরাতে আছে।

তিনি জানান, ভারি যন্ত্রপাতি অনেক কিছুই কেনাকাটা হয়েছে। কলেজের ভবন তৈরির কাজ চলছে। আর ৫০০ শয্যার হাসপাতালে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে আউটডোরে রোগী দেখা শুরু হবে।

কেনাকাটায় অনিয়ম হয়েছে কিনা বা এ সংক্রান্ত অভিযোগ আপনার জানা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে বলতে পারব না। আমার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য চাওয়া হলে আমি হিসাব করে বের করে দেব।

দুদকের অনুসন্ধানকারী টিমের একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজার দরের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নিরূপণের জন্যই আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য তলব করেছি। নোটিশের অনুলিপি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহপরিচালককেও দেয়া হয়েছে।

দুদকের একই অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কেনাকাটায় অনিয়ম বের করতে বেশ কিছু তথ্য চেয়েছেন।

তিনি ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের কাছে লিখিতভাবে ২২ ধরনের তথ্য চান বলে জানা যায়। কেনাকাটায় কোটি কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে দুদকের হাতে। তা নিশ্চিত হতেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর পর এসব হাসপাতালে কেনাকাটায় যুক্ত কর্মকর্তা ও ঠিকাদারকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এদিকে, ২৭৫ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কাছে ২৩ ধরনের নথিপত্র চেয়ে নোটিশ করেছে দুদক। সংস্থার উপপরিচালক শামসুল আলমের সই করা চিঠিতে এসব তথ্য চাওয়া হয়।

চাহিদাকৃত রেকর্ডপত্রের মধ্যে রয়েছে, বিভাগীয় প্রধান কর্তৃক চাহিদাপত্র, পরিচালক ও অধ্যক্ষের চাহিদাপত্র। অনুমোদিত বাৎসরিক ক্রয় পরিকল্পনা, বরাদ্দপত্র, প্রশাসনিক অনুমোদন। দরপত্র সংক্রান্ত কমিটি গঠন, অনুমোদিত স্পেসিফিকেশন, বাজারদর কমিটির প্রতিবেদন, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ও ওয়েবসাইটের কপি। দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটির প্রতিবেদন, কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন, তুলনামূলক বিবরণী।

নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড, চুক্তিপত্র, কার্য সম্পাদনের জামানত ও ব্যাংক গ্যারান্টি, কার্যাদেশ, ব্যয় মঞ্জুরি। সার্ভে কমিটি কর্তৃক মালামাল গ্রহণ সংক্রান্ত প্রমাণক, ইনস্টলেশন রিপোর্ট, পরিশোধিত বিলের কপি, পরিশোধিত চেকের কপি এবং সংশ্লিষ্ট নথি।

যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী যাচাই ও মূল্য নির্ধারণে সরেজমিনে অনুসন্ধান টিম পরিদর্শনকালে সরবরাহকারী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির উপস্থিত থাকার কথাও দুদকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে দুদক উপ-পরিচালক শামসুল আলম বলেন, নথিপত্র যাচাই-বাছাই করলে প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসবে। আমাদের টিম যে কোনো সময় সরেজমিন পরিদর্শন করবে।

এ ছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কেনাকাটায় সব ধরনের তালিকা ও তথ্য সরবরাহ করতে দুদকের নোটিশে বলা হয়।

এর আগে গত মার্চে হাসপাতালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া ও তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩৬ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা হয়। এসব মামলায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কেনাকাটায় দুর্নীতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।