ব্রেকিং:
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ঈদে মহাসড়কে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ট্রাক চলাচল সুইডেনের রাজকন্যা ভিক্টোরিয়াকে বরণে হাতিয়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখলের দ্বারপ্রান্তে আরাকান আর্মি কুমিল্লা সিটির প্রথম নারী মেয়র হলেন তাহসীন বাহার ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার হলো ১১ মণ সরকারি বই
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাট্টা দেশ

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০২০  

উগ্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাট্টা দেশের মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী অসাম্প্রদায়িক সংগঠন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ঢাকাসহ সারাদেশে মাঠে নেমেছেন। চলছে প্রতিবাদ সমাবেশ। মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী। সমস্বরে দাবি উঠেছে উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার। সংগঠন হিসেবে হেফাজত ইসলামকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। সেইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দল জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের। রাষ্ট্র, সংবিধানের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের জন্য দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

তারা বলছেন, সম্প্রতি রাষ্ট্র ও সরকারের রাজনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নিজেদের আবারও সংগঠিত করেছে। এখন সুযোগ পেয়ে তারা শক্তির জানান দিচ্ছে। ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করার পাশাপাশি দেশে মূর্তি পূজা হতে না দেয়ারও ঘোষণা দিচ্ছে প্রকাশ্যে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা দৃশ্যমান নয়।

রাজনৈতিক কারণে মৌলবাদী গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া কোনভাবেই ঠিক হবে না এমন মতামত তুলে ধরে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলছেন, বিমানবন্দরে লালনের ভাস্কর্য, বলাকা ও হাইকোর্টের ভেতরে ভাস্কর্য নিয়ে মৌলবাদীদের তাণ্ডবে দাবি-দাওয়া মেনে নেয়া হয়েছে। নীরবে সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে ভাস্কর্যের ওপর হামলার ঘটনা সহ্য করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আজকে যারা নতুন করে বাংলাদেশের অস্তিত্বে হুমকি দিচ্ছে, যারা মসজিদের ভেতরে মানুষ পুড়িয়ে মারছে, তাদের যথাযোগ্য শাস্তি নিশ্চিতে সরকারকে বাধ্য করার বিকল্প নেই। তারা বলছেন, ’৭১-এর পরাজিত শত্রুরাই দেশকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান বানাতে ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করছে। সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য কোন অবস্থাতেই সফল হতে দেয়া যাবে না। এজন্য মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে যখন মৌলবাদীদের আস্ফালন চলছে ঠিক তখন মুজিববর্ষ উপলক্ষে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও ঢাকায় আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য স্থাপনের ঘোষণা এলো। বুধবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান। সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে রাষ্ট্রদূত এ কথা জানান।

তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতীক আর কামাল আতাতুর্ক হচ্ছেন তুরস্কের প্রতীক। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই দুই নেতার ভাস্কর্য দুই দেশে স্থাপন করব। শীঘ্রই এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে। ইস্তান্বুল ও চট্টগ্রামেও এ ধরনের কিছু করা যায় কিনা তা নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।

রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি। দলটির নেতারা বলছেন, ভাস্কর্য বিরোধিতার আড়ালে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাত করতে চায়, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। ৫ ডিসেম্বর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে দেশব্যাপী জাসদের সভা, সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচীর ঘোষণা করা হয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টিও বলছে, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে মৌলবাদের ঠাঁই হবে না। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও যে কোন মূল্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে ইতোমধ্যে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীতে প্রতিহত করার ডাক দেয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় ধর্মীয় মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা প্রতিবাদী কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে।

এদিকে বুধবার ভাস্কর্য ইস্যুতে হাক্কানি আলেমদের ইমানি দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘আপনারা নীরব থাকবেন না। হাক্কানি আলেমরা নায়েবে রাসুল হিসেবে এগিয়ে আসুন, সঠিক কথা বলুন। ভাস্কর্য ইসলামে হারাম নয়, সেটা জাতিকে বলুন। যারা আলেম সমাজ, তারা যদি কথা না বলে, মানুষ ধরে নেবে ইসলাম জঙ্গীবাদকে প্রশ্রয় দেয়। সুতরাং হাক্কানি আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে।’

বুধবার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর সব মুসলিম দেশে ভাস্কর্য রয়েছে। এমনকি তিনটি ইসলামিক রাষ্ট্র- ইরান, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে প্রচুর ভাস্কর্য রয়েছে। সরকারকে অনুরোধ করব, পৃথিবীর সব মুসলিম অধ্যুষিত দেশের ভাস্কর্য টেলিভিশনের মাধ্যমে জনগণকে দেখানো হোক। দূতাবাসের মাধ্যমে সব ভাস্কর্য সংগ্রহ করে প্রচার করা হোক। তাহলে মানুষ আসল ঘটনা বুঝবে।

আমরা যখন মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালন করছি তখন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষও পালন হচ্ছে। আর এ শতবর্ষের ভেতরে, এ বিজয় মাসকে সামনে রেখে বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক মোল্লা হঠাৎ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এবং সব ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার হুঙ্কার ছাড়ছে যা চক্রান্তের রাজনীতিরই অংশ বলে মনে করেন সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দিচ্ছে তারা ’৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর খুনী, ’৭১ সালের খুনী রাজাকারদের দোসর। রাজনৈতিক মোল্লারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর ছুরি চালাতে চায়। ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দিয়ে সমাজে অশান্তি তৈরির চক্রান্ত ও উস্কানি দেয়া এবং ভাস্কর্যকে মূর্তির সঙ্গে তুলনা করে মিথ্যাচার করা, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মের অনুভূতির ওপর আঘাত হানছে। এ আইনী বরখেলাপের দায়ে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করতে হবে।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের দালাল এ রাজনৈতিক মোল্লারা দেশের সংবিধান, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অস্বীকার করে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এটা দেশোদ্রোহিতার শামিল, প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন। এদের ক্ষমা করা যায় না, এদের কোন ছাড়া নেই। অবিলম্বে এ সকল রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে যাতে বাংলাদেশের আর কোন দিন কেউ এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে না পারে। দেশের সংবিধান ও ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির বিরুদ্ধের কট্টরভাবে অবস্থান নেয়ায় মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে সংক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ৬০ সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত কর্মসূচী থেকে সাত দফা দাবির ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।

সম্প্রতি রাজধানীর ধোলাইরপাড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে সে কাজ অবিলম্বে বন্ধের দাবি তোলেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক। আর গত ২৭ নবেম্বর চট্টগ্রামের এক অনুষ্ঠানে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, যে কোন দল ভাস্কর্য বসালে তা টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে। এর আগে তিনি বলেন, মসজিদের নগরীতে কোন মূর্তি বা ভাস্কর্য রাখা যাবে না। এর ঘটনার পর থেকে দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিভিন্ন প্রগতিশীল, সামাজিক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠন থেকে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যদাতাদের গ্রেফতারের দাবি ওঠে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তারা বলছেন, মৌলবাদীদের বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল ও সংবিধানবিরোধী।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, এই মৌলবাদীরা তারাই, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। এরা তারাই, যারা ভাষা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন। সে সময় আপনাদের যা পরিণতি হয়েছিল, এখনও সেই একই পরিণতি হবে। সুতরাং, সময় থাকতে সাবধান হয়ে যান। বঙ্গবন্ধু নেই, কিন্তু আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লাখো সৈনিক আছি।

সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর তৎপরতা বন্ধের দেশে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শহীদ শহিদুল্লাহ কায়সারের স্ত্রী ও কেন্দ্রীয় খেলাঘরের সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা পান্না কায়সার বলেন, গত ২০ বছরে দেশের সংস্কৃতিকে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা চলছে। একদিকে মৌলবাদীদের আক্রমণের ভয় অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোশকতার অভাব। এ কারণে মৌলবাদী গোষ্ঠী উর্বর মাঠ পেয়েছে। মানুষের চেতনা ভোঁতা হয়ে গেছে। এই সযোগে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিপথগামী করছে উগ্রবাদী গোষ্ঠী। যারা ’৭১-এর পরাজিত শক্তি। তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায়। এখন আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে। প্রতিবাদী হতে হবে। বসে তাকার আর কোন সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা আর সংস্কৃতিকে গলা টিপে হত্যার ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারি না।

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত সমর্থিত হেফাজত-খেলাফতের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক নেতারা যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, সেগুলো সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চরম অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়। যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গার হুমকি দেন, তারা দেশকে মোল্লা ওমরের আফগানিস্তান বানাতে চান। তারা জিয়াউল হকের পাকিস্তান বানাতে চান। আমরা তাদের এসব বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মৌলবাদীদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী বলেন, কেন সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এত তৎপর হয়ে উঠল, কোথায় তাদের শক্তি এর সন্ধান করা উচিত। সংবিধান ও রাষ্ট্র তো তাদের কর্মকাণ্ড ও দাবি-দাওয়া সমর্থন করে না। তবুও তারা বহাল তবিয়তে কিভাবে আছে। তবে সঙ্কট কোথায়।

সকল অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে আবারও এক হওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে যদি এক হতে পারি তবে বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে। অন্যথায় দিন দিন বাড়বে মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা। তাদের আর্থিক ও রাজিৈনতকসহ প্রশাসনিকভাবে সহযোগিতা করে শক্তির জোগান দেয়া হবে। ফলে দেশ অনিরাপদ হবে। চেতনা ভূলুণ্ঠিত হবে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ বলেন, আমরা মনে করি, ভাস্কর্যের সঙ্গে ধর্মের কোন বিরোধ নেই। কাজেই যারা বাংলাদেশে ভাস্কর্যের সঙ্গে ধর্মের সাংঘর্ষিক অবস্থান তৈরি করছে, এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, সম্প্রতি যে ঘটনাটি ঘটছে বাংলাদেশে সবচাইতে এলার্মিং ঘটনা সেটি হচ্ছে, জাতির পিতার ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলে নদীতে ছুড়ে ফেলার মতো ধৃষ্টতা তারা দেখিয়েছে। তারা কোন অবস্থাতেই ভাস্কর্য করতে দেবে না বলেছে। কারা বলছে? তারা কারা? তারা হচ্ছে একাত্তরের পরাজিত সৈনিক, একাত্তরের পরাজিত শত্রু, তাদেরই উত্তরসূরি, একেবারেই তাদের প্রতীকী রূপ। মামুনুল হক থেকে শুরু করে চরমোনাই পীরের যে ছেলে এখন রিট করছে, প্রতিটা লোক বাবুনগরী, প্রতিটা লোকের সূত্র হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিরোধিতা করা।