ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন ৪ নভেম্বর দুর্গাপূজা: দেশজুড়ে মণ্ডপের নিরাপত্তায় ২ লক্ষাধিক আনসার-ভিডিপি ১৫ বছরে ধানের ৮০ নতুন জাত ঢাকা-না’গঞ্জ লিঙ্ক রোড ছয় লেন হচ্ছে চাপে থাকা অর্থনীতিতে স্বস্তির আভাস ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে আজ বার কাউন্সিলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী হামানকর্দ্দির কামাল গাজীকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা টিকটকে প্রেমের পর বিয়ে, ৩ বছরের মাথায় তরুণীর আত্মহত্যা লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন : প্রতীক পেলেন প্রার্থীরা ২১ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু, ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ শিক্ষামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমপি বাহারের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী দেখছেন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালীর অবদান

নোয়াখালী সমাচার

প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২০  

‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ’ হাজার বছরের বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক অসাধারণ গৌরব ও গর্বের অবিস্মরণীয় ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালীবাসীর অনন্য ভূমিকা ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদান ইতিহাসের পাতায় বীরগাথা অধ্যায় হিসেবে চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ২৬ মার্চ নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক সার্কিট হাউজে সর্বদলীয় এবং গন্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশের কথা উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের কাছে উপস্থাপন করেন। সভায় সকলেই যার যা কিছু আছে তা নিয়ে সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার শপথ নেন।
২৬ মার্চ টাউন হলে মরহূম রফিক উল্যাহ কমান্ডারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, আনসার, পুলিশ, ইপিআর, আওয়ামিলীগ, ছাত্রলীগের সদস্যবৃন্দ একত্রিত হয়ে একটি দল গঠন করা হয়। 
যার মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য আহবান জানানো হয়। আহবানে সারা দিয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ পুর্ণাঙ্গভাবে সহযোগিতা করেন। মাইজদী পুলিশ লাইন (বর্তমানে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার) ম্যাগজিন থেকে ধার করা অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধংদেহী তরুন ছাত্র, শ্রমিক, বৃদ্ধদের সবাইকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়। 
এরই মধ্যে মুক্তিবাহিনী গঠন করার জন্য এম, পি নুরুল হক মিয়ার আহবানে জেলা প্রশাসকের পরামর্শক্রমে জেলা আর্মড সার্ভিসেস বোর্ডের সেক্রেটারী সফিকুর রহমানের স্বাক্ষরে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ও ছুটিতে আসা সদস্যদের আহবান করা হয় প্রশিক্ষণক্যাম্পে রিপোর্ট করার জন্য।
প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিরোধ যুদ্ধ ছিল বিক্ষিপ্ত ও আঞ্চলিক ভিত্তিতে। অবশেষে ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের অসহনীয় সরকার গঠিত হলে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধেও নুতন অধ্যায়ের সুচনা করে। 
এ সময় ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় শহরাঞ্চল হানাদার বাহিনীর কবলিত হলেও বৃহত্তর নোয়াখালীর সমগ্র এলাকা ছিল পাক হানাদার মুক্ত। এখানে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত বাংদেশের পতাকা উড়েছিল এবং এখানকার প্রশাসন নোয়াখালীর কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
ইতোমধ্যে পাকসেনাদের আগমন পথে বাধার সৃষিটর জন্য লাকসাম, নীলকমল, চর জব্বর, শুভপুর প্রভৃতি স্থানে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। সুবেদার লুৎফর রহমান ও সুবেদার সামছুল হকের নেতৃত্বে ৪ এপ্রিল লাকসামের উত্তরে বাঘমারায় প্রথম সংঘর্ষ হয়। 
এরপর ১০ এপ্রিল লাকসামে সম্মুখ যুদ্ধে মাত্র ৭০জন মুক্তিযোদ্ধা দিয়ে পরিচালিত যুদ্ধে ২৬জন হানাদার সৈন্য নিহত ও ৬০ জনকে আহত করা হয়। ২০ এপ্রিল নাথের পেটুয়াতে, ২১ এপ্রিল সোনাইমুড়ী রেল স্টেশনের আউটার সিগনালের কাছে, ১ মে বগাদিয়ায় নায়েক সিরাজের নেতৃত্বে সম্মুখ যুদ্ধে ১৫/২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। সে যুদ্ধে ২জন বীর মুক্তি যোদ্ধা শহীদ হন।
পরবর্তীতে, শত্রু বাহিনীকে মোকাবেলা করার সুবিধার্থে বিলোনিয়াসহ নোয়াখালীকে ২নং সেক্টরের অধীনে আনা হয় এবং ৫টি জোনে ভাগ করা হয়। ২নং সেক্টরের প্রধান ছিলেন মেজর খালেদ মোশারেফ (এপ্রিল-সেপ্টেমবর) এবং মেজর এটিএম হায়দার (সেপ্টেমবর-ডিসেমবর) এ বাহিনী ফোর্স নামে পরিচিত ছিল।
অবশেষে এফএফ ও বিএলএফসহ সম্মিলিত বাহিনীর বীর যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত আত্রুমণে পাক হানাদার ও তাদের দোসর বাহিনীর পরাজয় ও পশ্চাদগমনের মধ্য দিয়ে নোয়াখালী পাকহানাদার মুক্ত হয়। এবং গ্রামগঞ্জ থেকে অজস্র বিজয় মিছিল এসে নোয়াখালী টাউনকে মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে তোলে। অবশেষে ৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ আমাদের স্বাধীনতার ইতিাহাসে রচিত হয় নোয়াখালী মুক্তির অবিস্মরনীয় ইতিহাস।