ভাষ্কর্য ও প্রতিমা মূর্তির মধ্যে পার্থক্য কী?

গত কয়েকদিন ধরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ও সম্মানার্থে নির্মিত ভাষ্কর্য নিয়ে অপপ্রচারে মেতেছে একদল স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধকে যেভাবে সে সময় ‘ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’ বলে চালানোর ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলো এই অপশক্তিটি; সেভাবেই শৈল্পিক ভাষ্কর্যকে পূজার মূর্তি বলে বঙ্গবন্ধু তথা বাংলাদেশকেই ভেঙ্গে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এখন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্কালে মুজিব জন্মশতবর্ষে এসে এই ধরণের ঘৃণ্য অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। 
চলুন জেনে নেই- পূজার মূর্তি আর নান্দনিক ভাষ্কর্য আসলে কি ও তাদের ব্যবহার কিরূপে হয়ঃ
 
মূর্তি বলতে দেবতার প্রতিমাকে বোঝায়। শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল “অবয়ব”। মূর্তি দেবতার প্রতিনিধি। সাধারণত পাথর, কাঠ, ধাতু অথবা মাটি দিয়ে মূর্তি নির্মাণ করা হয়।হিন্দুরা মূর্তির মাধ্যমে দেবতার পূজা করে থাকেন। মূর্তিতে দেবতার আবাহন ও প্রাণপ্রতিষ্ঠা করার পরই হিন্দুরা সেই মূর্তিকে পূজার যোগ্য মনে করেন। ধর্মীয় সংস্কার বা শাস্ত্রের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট দেবতার মূর্তি নির্মিত হয়ে থাকে।অর্থাৎ প্রতিমা হল মানুষ যার প্রতিকীকে সামনে রেখে আরাধনা উপাসনা করে, ইহকালে-পরকালে মঙ্গল চায়, ধর্মীয় বিধি মেনে পূজা করে ইত্যাদি।

ভাস্কর্য (ইংরেজি ভাষায়: Sculpture) ত্রি-মাত্রিক শিল্পকর্মকে ভাস্কর্য বলে। অর্থাৎ, জ্যামিতিশাস্ত্রের ঘণকের ন্যায় ভাস্কর্যকে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা সহ ত্রি-মাত্রিক হতে হবে। সর্বত্র বিভিন্ন ধরনের, বহুমূখী আকৃতির ভাস্কর্য দেখতে পাওয়া যায়। রেনেসাঁ এবং আধুনিককালে এটি ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। পুতুল, মুখোশ, মাটির জিনিসপত্র ভাস্কর্যের উদাহরণ।

মূর্তি আর ভাস্কর্যের মূল পার্থক্য হচ্ছে:- ভাস্কর্যের সামনে উপাসনা কিংবা পূজা করা যায় না কেবল মাত্র সেটাকে একটা প্রতিকী হিসাবেই মেনে টিকেয়ে রাখা হয় এবং কোন ধর্মের কোন ঈশ্বরের প্রতি ভাস্কর্য নিবেদিত নয়।অন্যদিকে, মূর্তি কেবলমাত্র প্রতিকী না এটাকে বিধি অনুযায়ী পূজাও করা হয়।

অতএব, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সাংস্কৃতিক শক্তি ও সামাজিক বলয়ে একত্র হতে হবে। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাত প্রতিষ্ঠিত হবে সোনার বাংলাদেশ। জয় বাংলা...... জয় বঙ্গবন্ধু.....